আপনারা যদি চান, আপনি নিজের পায়ে দাঁড়াবেন, নিজের একটা পরিচিতি তৈরি করবেন, নিজে কিছু একটা করে দেখাবেন, আপনার ফ্যামিলিকে আপনি নিজেই সাপোর্ট করবেন, তাহলে আপনার সামনে অনেক আইডল আছেন। আপনার সামনে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা এইভাবে কাজটা করে দেখিয়েছেন। একটা কথা বলি, আপনি চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে পারবেন ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত, এখন তো অনেক সুবিধে, কোটা সিস্টেম নেই, এখন অনেক সহজ চাকরি পাওয়াটা, এখন অনেক স্বচ্ছ এই পথটা। কোটা সিস্টেমটা তুলে দেয়া হয়েছে, ভীষণ ভালো---এটা অনেক ভালো একটা খবর। সত্যিই অনেক ভালো। ত্রিশ বছর পার হয়ে গেলে বিয়ে কিন্তু আপনি করতেই পারবেন, তবে তখন আর চাকরির পরীক্ষা দিতে পারবেন না। তাই আপনার জন্য, যেহেতু আপনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইছেন, আপনার ইচ্ছেই হলো, আপনি কিছু একটা করে দেখাবেন, তাই আপনার জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে চাকরির জন্য চেষ্টা করা। চাকরি যখন হয়ে যাবে, তখন যদি আপনার বিয়ে হয়, তবে যে সম্মানটা নিয়ে আপনি বাঁচতে পারবেন, চাকরি হবার আগে বিয়ে হলে হয়তোবা একই সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারবেন না। আপনার যিনি লাইফ পার্টনার হবেন, তিনি কেমন মানসিকতার হবেন, আপনি তো জানেন না। আপনি বলতে পারেন, তার সাথে তো আপনার প্রেম আছে, দীর্ঘসময়ের পরিচয় আছে! একটা জিনিস মনে রাখবেন, প্রেমের সময় মানুষের মন আর বিয়ের পর মানুষের মন, এই দুই একই রকমের হয় না। এমন বহু দেখেছি…বহু বহু। তাই আপনি যদি একটু সম্মান নিয়ে আপনার শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চান, তাহলে আপনি চাকরি করতে পারেন। ত্রিশ বছর পেরিয়ে গেলে বিয়ে করতে পারবেন, বিয়ে করতে কোনও অসুবিধে হবে না। হয়তোবা এমনও হতে পারে, আপনি যখন বিশতম বিবাহবার্ষিকী পালন করবেন, ততদিনে আপনি একটু বুড়িয়ে যাবেন; হ্যাঁ, সেইটুকু হতে পারে। কিন্তু বিয়ে আপনি করতে পারবেন, চাকরি তো আর পাবেন না ত্রিশের পর। আপনি বিয়ে করে ফেললেন, চাকরির জন্য চেষ্টা করলেন না, পরে যদি কোনও ঝামেলা হয়, যদি আপনি অসম্মানিত হন, যদি আপনার রিলেশনটা না টেকে, যদি আপনার কোনও কারণে ব্রেকআপ হয়ে যায়, ডিভোর্স হয়ে যায়, তখন আপনি কোথায় গিয়ে উঠবেন? বাবা-মা’য়ের কাছে আসবেন? বোঝা হয়ে থাকবেন? দিন-রাত কথা শুনবেন? কেন? আপনার হাতে তো অপশন আছে, আপনার যোগ্যতা আছে, আপনার ভেতর পটেনশিয়াল আছে, তাহলে সেটা কাজে লাগাবেন না কেন? আর যদি ভাবেন, আমি চাকরি-বাকরি করব না, আমি বিয়ে করব, বিয়ে করে সুখে-শান্তিতে থাকব, তাহলেও হয়, কোনও অসুবিধে নেই! বিয়ে করে ফেলুন। তাতেও হয়। It’s also a very good career. কারণ বিয়ের পর সংসার সামলানো, বাচ্চা-কাচ্চা সামলানো খুবই কঠিন কাজ। হ্যাঁ, সত্যিই খুব কঠিন কাজ! কিন্তু ওই যে আপনি কাজগুলো করছেন, সেই কাজগুলো আপনার মানুষটা মূল্যায়ন করছেন কি না, সেটাও দেখতে হবে। আপনার মানুষটা যেন আপনাকে না বলে, তুমি তো কিছু করো না, তুমি তো বেকার। এমন কথাবার্তা যেন না বলে। ও যেন বলে, সারাদিন তুমি ঘর সামলে রাখো, বাচ্চাটাকে সামলে রাখো, রান্না-বান্না করো, ঘর গুছিয়ে রাখো, এটা চাকরি করার চাইতে কোনও অংশে কম না, বরং বেশি। ওরকম মানসিকতার মানুষ যদি পান, তাহলে বিয়ে করে ফেলুন। আর যদি অমন মানসিকতার মানুষ না পান, আপনার মাঝে যদি বিন্দুমাত্রও কনফিউশন থাকে, তাহলে আপনি একটা সিকিউরিটি প্ল্যান নিজের মধ্যে রেখে দিন। আর সেই সিকিউরিটিটা হচ্ছে একটা চাকরি, যেটা আপনাকে প্রয়োজনের সময় চলতে সাহায্য করবে, যেটা আপনাকে কিছুটা হলেও সম্মান দেবে। ওইটুকু নিজের মধ্যে রাখুন। আমি এটা মনে করি!