চব্বিশ।
মানবশাসনের ভ্রান্তি
এই দেশে যুগে যুগে সাধু, যোগী, ঋষি, মুনি, ধ্যানী, জ্ঞানী, বাদশাহ, মহারাজা ও রাজারা ন্যায়দণ্ড হাতে শাসন, সংরক্ষণ ও প্রতিপালন করেছেন। কিন্তু আজ সেই শাসনের ফলই বিষের মতো ফিরে আসছে। এর মধ্য দিয়ে কি বোঝা যায় না যে মানুষের নিজস্ব বুদ্ধি থেকে জন্ম নেওয়া ন্যায়-অন্যায়ের বিচারপদ্ধতি দিয়ে মানুষকে কোনোদিন সত্যিকারভাবে শাসন বা রক্ষা করা সম্ভব নয়?
স্বভাবের পথ
যদি মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই বুঝতে পারত যে, মানুষ যেখান থেকে সৃষ্টি হয়েছে, সেই স্বভাবের মধ্যেই মানুষের পথনির্দেশের সব উপায় নিহিত আছে, তাহলে আজকের চিত্রপট ভিন্ন হতো। মানুষকে মানুষ বানানোর চেষ্টা না করে অমানুষকে মানুষের আসনে বসিয়ে দায়িত্ব পালন করাতে চাইলে, তা কোনোদিনই সফল হয় না।
মানুষের ভুল ও সীমাবদ্ধতা
আজকের মানবিক অবস্থা দেখে কি মনে হয় না—মানুষ মানুষকে বোঝার, ভাবার ও জানার ক্ষেত্রে কত বড়ো ভুল করেছে? এখন আর আক্ষেপ করার সময় নেই। যতদিন মানুষ সত্যিকার অর্থে মানুষ না হবে, ততদিন তার ভেতরে মনুষ্যোচিত কর্তব্যবোধও জাগবে না।
আত্মবোধের অভাব
মানুষ এখনও নিজের আত্মমহিমা উপলব্ধি করতে পারেনি। সে কত বিশাল, কত শক্তিশালী—এখনও তার সেই অনুভূতি হয়নি। অথচ মানুষ নিজেই স্রষ্টা, পালনকর্তা আর সংহারক। কিন্তু এই দায়িত্ব পালন করতে হলে তাকে নিজের প্রকৃত মনুষ্যত্বে প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে, আর সেই কঠিন পথ ভুক্তভোগীর বাইরে আর কেউই বুঝতে পারবে না।
অমরতার যুগের আশা
তবুও আশার আলো আছে—এই নাটকের সমাপ্তির পর আসবে এক অভিনব অমরতার যুগ। তখন মানুষ দেখবে, এক বৃদ্ধ সন্ধ্যায় আশি বছরের বুড়ো, কিন্তু প্রভাতে সে-ই ষোলো বছরের তরুণ হয়ে উঠেছে। যে জমিতে আগে ফসল ফলত না, তা ভরে উঠবে অফুরন্ত শস্যভারে। রোগ, ব্যাধি, বার্ধক্য, মৃত্যু চিরতরে দূর হবে মানুষের জীবন থেকে।
ভবিষ্যতের মানবতা
মানুষ তখন এক মন, এক পথ, এক কাজে সর্বদাই নিয়োজিত থাকবে। দ্বন্দ্ব, হিংসা, বিভেদ ভুলে মানুষ একাত্ম হয়ে মিলেমিশে থাকবে। তখন অহংকারহীন মানুষের সঙ্গে সমগ্র বিশ্বের আর কোনো পার্থক্য থাকবে না। একজন মানুষকে দেখলেই বোঝা যাবে—তার ভেতরেই সমগ্র মানবজাতি, বিশ্ব এবং ঈশ্বর পূর্ণভাবে উপস্থিত।
পঁচিশ।
মানবসংসারের মূল ভিত্তি
মানবজীবনের সংসারচিত্র শুরু হয়েছে বিশ্বজননীর অনন্ত ঐশ্বর্যের কোলে। এই সংসারযাত্রার কেন্দ্র হলো—মা, বাবা আর সন্তান। এই তিনজনকে কেন্দ্র করেই বিশ্বকর্মের সূচনা, আর যখন এই তিনজন তাদের স্বাভাবিক অবস্থায় পূর্ণ হয়ে ওঠে, তখনই শুরু হয় অমরতার পথ।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, মা, বাবা কিংবা সন্তান—কেউই এখনও নিজেদের আসল স্বরূপ বুঝতে পারেনি। সঠিক কর্তব্যবোধ ও আদর্শও গড়ে ওঠেনি। তাই যেখানে মানবজীবন প্রেমে বাঁধা পড়ে আনন্দে ভরে ওঠার কথা, সেখানে আজ পৃথিবী ভরে গেছে উচ্ছৃঙ্খলতা, নৃশংসতা আর জঘন্য কর্মফলে। মানবসংসার এখন দ্বিধা, সংশয়, হিংসা আর হতাশার গভীর অন্ধকারে ঢেকে আছে।
গুরুর আবির্ভাব
এই জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে মানবসংসারের চালক, নিয়ামক আর শিক্ষক—গুরু করুণাময় রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। মা, বাবা আর সন্তানের অজ্ঞতা ও তার ফলাফল উপলব্ধি করিয়ে দিতে, আর তাদের কর্মের অসারতা জানাতে গুরু করুণাময় মূর্তি ধারণ করে মানবসমাজে এসেছেন।
গুরুর ভূমিকা
গুরু সন্তানের সাথে মা-বাবার গভীর সম্পর্ককে বোঝাতে এসেছেন। তিনি সন্তান আর মা-বাবার মধ্যে সেতুবন্ধন করে দেন, একে অপরকে পরিচয় করিয়ে দেন, তাদের পারস্পরিক কর্তব্য নির্ধারণ করে দেন। এজন্য তিনি সবার মতো সাধারণ সাড়ে তিন হাত দেহ ধারণ করে, সখার মতো, বন্ধুর মতো, পিতা-মাতার মতো এবং সেবকের মতো সবার সেবায় নিয়োজিত হন। জীবনের সত্যজ্ঞান, কর্তব্যবোধ আর আদর্শ নির্ধারণে তিনি সর্বদা সহায় হয়ে থাকেন।
গুরুর দায়িত্ব
গুরুর প্রধান দায়িত্ব হলো—মা, বাবা আর সন্তানের সম্পর্ক বোঝানো, পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং তাদের কর্তব্য নির্ধারণ করা। যতদিন না এই তিনজন নিজেদের স্বাভাবিক স্বভাব ও স্বতন্ত্র বোধে পৌঁছে পূর্ণ লক্ষ্যে পৌঁছাবে, ততদিন গুরুর কর্তব্য শেষ হবে না।
অপ্রাকৃত যুগের পরিচয়
গুরুর আরেকটি দায়িত্ব হলো ‘অপ্রাকৃত যুগ’-এর পরিচয় দেওয়া। এই যুগ হলো এমন এক সময়, যা প্রকৃতির দ্বারা নয়, স্বভাবের দ্বারা সম্পন্ন হয়।
মানুষের অভাব
মানবজাতির সর্বাঙ্গীন মঙ্গলসাধনের জন্য গুরু যিনি কর্ণধার হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন, তাঁকে সত্যিকার কর্ণধার হিসেবে মানবার মতো আত্মবিশ্বাস মানুষের ভেতরে এখনও খুবই বিরল।
ছাব্বিশ।
মা বিশ্বজননীর প্রতীক
আমরা আমাদের সাড়ে তিন হাত দেহধারিণী ‘মা’-কেই বিশ্বজননীর জীবন্ত প্রতীকরূপে পাই। মায়ের তিনটি গোপন রূপ আছে, যা সাধারণ মানুষের কাছে অজানা—আদি-মা, উমা-মা এবং শ্যামা-মা। আদি-মা বিজ্ঞানময়ী, উমা-মা জ্ঞানময়ী এবং শ্যামা-মা কর্মময়ী।
বিশ্বের অসংখ্য মাতৃরূপ আসলে এই মায়ের মধ্যেই জীবন্তভাবে প্রকাশিত। মা নিজের বিশ্বরূপকে সংকুচিত করে আমাদের মতো শরীর ধারণ করেছেন এবং আমাদের সঙ্গে সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়ের খেলায় মেতে আছেন। মা নিজেই পিতা, নিজেই সন্তান সেজে অসীম ভাবকে পুষ্ট করার জন্য নানা লীলায় অংশ নিচ্ছেন।
মায়ের লীলা
যে-মা জন্ম দিলেন, বুকে আগলে রাখলেন, স্তন্যদান করে লালন করলেন—সেই মা-ই আবার ষোড়শী রূপে সন্তানের যৌবনকে আকর্ষণ করলেন, তার শক্তি হরণ করলেন। মা একাধারে জন্মদাত্রী, পালনকর্ত্রী, প্রেমদাত্রী, আবার সংহারিণী হিসেবেও সন্তানের সঙ্গে লীলায় রত। আবার তিনিই বিশ্বজননীর রূপে সন্তানের সব মোহ-মায়া ছিন্ন করে নিজের কোলে টেনে নেন।
এটাই সত্য—মা যদি এই রকম বহুরূপে খেলায় অংশ না নিতেন, তবে তাকে অনন্ত শক্তিময়ী হিসেবে চিনতে পারা যেত না। সন্তানের কাছে নিজেকে উপলব্ধি করানোর জন্যই মা নিজের ভেতরে অভাব জাগিয়ে একই সঙ্গে স্বামী ও সন্তান প্রসব করেন, প্রণয়িনী আর প্রসবিনী রূপে খেলায় মেতে থাকেন।
সন্তানের অজ্ঞানতা
কিন্তু দুর্ভাগ্য, সন্তান এ বোধ জাগাতে পারে না। চোখ থেকেও মাকে চিনতে পারে না, বুদ্ধি থেকেও বুঝতে পারে না, জ্ঞান থেকেও জানতে পারে না। ভক্তি আর প্রেম থেকেও গলে গিয়ে মায়ের সঙ্গে একাত্ম হতে পারে না। আশ্চর্যের বিষয়—এই জীবধাত্রী মা নিজেও নিজের আসল স্বরূপ সম্পর্কে অজ্ঞ। অথচ তাঁর মধ্যেই নিহিত আছে বিজ্ঞানময়ী, জ্ঞানময়ী ও কর্মময়ীর অখণ্ড তিন রূপ।
মায়ের কর্তব্যের ঘাটতি
মা নিজের স্বরূপ না জানায় তাঁর কর্তব্যবোধও সঠিক হয় না। যখন দেহে আত্মজ্ঞান নেই, তখন সেই দেহ নিয়ে সংসারে এসে স্বামী, সন্তান, পরিবার ইত্যাদির সেবা করা কতটা কার্যকর হতে পারে? অথচ মা আজও নিজের অহংকে কেন্দ্র করে মোহ-মায়ায় ডুবে আছেন। স্বামী বা সন্তানের সঙ্গে আসল সম্পর্ক না জেনে তিনি কেবল শাস্ত্র আর প্রচলিত ব্যবহারের ভরসায় কর্তব্য পালন করে চলেছেন।
প্রয়োজন—সম্বন্ধ নির্ণয় ও কর্তব্যবোধ
তাই প্রথমে প্রয়োজন সম্পর্কের সঠিক উপলব্ধি, পরে কর্তব্যবোধের জাগরণ। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মায়েরা কতটা সচেতনভাবে কর্তব্য পালন করেছেন—যদি তারা নিজেরাই একবার বিচার করেন, তবে নিজেদের ভুলও বুঝবেন। সন্তানের সামনে প্রতিটি আচরণে কত সতর্ক থাকা দরকার, সেটি ভেবে দেখলেই মায়েরা অনেক ত্রুটি এড়াতে পারতেন।
বর্তমান পরিস্থিতি
আজ অনেক মা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের আদর্শ মিলিয়ে নিচ্ছেন, কেউ পুরোপুরি পাশ্চাত্যের পথে, আবার কেউ শুধু প্রাচ্যের পথে চলছেন। অথচ যদি সত্যিই সন্তানের মঙ্গল চাইতেন, তবে শুরু থেকেই কর্তব্যে কঠোর ও সচেতন হতেন। মায়েরা দেশ, কাল, সমাজের অগ্রগতিকে লক্ষ্য করলেও, আসল কর্তব্যের ব্যাপারে অনেকেই উদাসীন থেকেছেন। অথচ সন্তানের গঠনের প্রশ্নে দেশ-কাল-পাত্র বড় নয়—প্রধান হলো মায়ের সঠিক কর্তব্যবোধ।
সাতাশ।
পিতার রূপ
যেমন মায়ের তিনটি রূপ আছে, তেমনি পিতারও তিন রূপ—অখণ্ড বিজ্ঞানময় রূপ, অখণ্ড জ্ঞানময় রূপ এবং অখণ্ড কর্মময় রূপ। কিন্তু পিতা তাঁর স্বভাবস্বরূপ সম্পর্কে অজ্ঞ, মোহে আবদ্ধ। যেখানে তাঁর কর্তব্য আত্মজ্ঞান অর্জন করে স্ত্রী ও সন্তানকে পথ দেখানো, সেখানে যদি তিনি নিজেই অজ্ঞ, আত্মজ্ঞানহীন, অসংযমী ও চঞ্চল হয়ে অহংকারের বশে সংসারকে "আমার সংসার" বলে পরিচালনা করেন, তবে সেই সংসার একদিন তাঁর কাছে ভয়াবহ মায়ার ফাঁদ হয়ে উঠবে। অহংপূর্ণ কর্তৃত্ব দিয়ে কখনো প্রকৃত সংসারধর্ম পালন করা যায় না।
স্ত্রী, স্বামী ও সন্তানের সম্পর্ক
যিনি স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর আসল সম্পর্ক জানেন না, যিনি পিতার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক জানেন না, তিনি কীভাবে সংসারের দায়িত্ব নিতে পারেন? আসলে সন্তান হলো মা ও পিতার যুগল অবস্থা থেকে জন্ম নেওয়া—তাদের যুগ্ম স্বভাবেরই জীবন্ত রূপ। কিন্তু বোধ জাগার পরও সন্তান এটি উপলব্ধি করতে চায় না। সে নিজের কর্তব্য সম্পর্কেও অচেতন থাকে। যদি সন্তান মাতা-পিতার প্রতি কর্তব্য বুঝতে না পারে, তবে তার জন্ম বৃথা।
সন্তানের আত্মজ্ঞান
সন্তান আসলে মা ও পিতার অভিন্ন রূপ। তাই তাকে নিজের স্বরূপ বুঝতে হবে। যখন সে নিজেকে চিনতে পারবে, তখনই দেখবে তার ভেতরেই মা-বাবার স্বরূপ আছে। তখনই সে কর্তব্য নির্ধারণ ও পালন করতে সক্ষম হবে। মাতৃগর্ভে থাকাকালে সন্তানের জীবন-মরণ মায়ের শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর নির্ভর করত। নাভি ছিন্ন হবার পর থেকে তার করণীয় তার নিজের হাতে আসে। সেইরকম, পিতার সঙ্গে মাতার যুক্ততা সন্তানের গঠনের জন্য অপরিহার্য।
বর্তমান অবস্থার কারণ
বোধ জাগার পর সন্তানের প্রথম চিন্তা হওয়া উচিত—সে কীভাবে মাতা-পিতার সম্পর্ক বুঝবে এবং নিজের কর্তব্য নির্ধারণ করবে। কিন্তু কি কোনো সন্তান এভাবে ভাবে? যদি ভাবত, তাহলে আজ বিশ্বজুড়ে এই আসুরিক পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
মাতা, পিতা ও সন্তানের ত্রয়ী
মা, বাবা আর সন্তান—এই তিনজন একই অখণ্ড দেহের তিনটি অংশ। স্বাভাবিকভাবে তারা একে অপরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে যুক্ত। কিন্তু সঠিক বোধ ও শিক্ষার অভাবে আজ তারা একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। স্বাভাবিক একাত্মতা না থাকার কারণে সংসার ভরে গেছে দ্বন্দ্ব, হিংসা, হতাশা, সংকীর্ণতা ও অবিশ্বাসে। ফলে মানব সংসার পৌঁছে গেছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
প্রশ্ন: তাহলে কি এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের কোনো পথ নেই?
মাতা–পিতা–সন্তান ও গুরু
আজকের বিশ্বে মাতা–পিতা তাঁদের নিজের কর্মফল দেখে নিজেরাই বিস্মিত হয়ে ভাবছেন—“এতদিন আমরা আসলে কী করেছি?” কর্তব্যের প্রশ্নে তাঁরা বিভ্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে গুরুর শরণাপন্ন হচ্ছেন।
দেশ–কাল–সমাজ–পরিস্থিতি আর নিজেদের স্বার্থের টানে মাতা–পিতা–সন্তান সকলে মিলে আত্মস্বার্থপর কাজের মধ্যে জড়িয়ে পড়েছে। আজ তাঁরা সেই কাজের ভয়াবহ ফল ভোগ করে নিজেরাই অশান্ত ও অতৃপ্ত হয়ে উঠেছেন। তাই এখন তাঁদের মনে হচ্ছে—যদি এমন কোনো পথ থাকত, যদি এমন কোনো বন্ধু থাকতেন, যিনি আমাদের অপরাধগুলো ভুলিয়ে আমাদের প্রতি করুণা দেখাতেন, তাহলে হয়তো এই আত্মগ্লানি থেকে আমরা মুক্তি পেতাম।
পথ সম্পর্কে অজ্ঞ হয়ে আজ নারী–পুরুষ নির্বিশেষে সবাই গুরুর শরণ নিচ্ছে—হোক তা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। কেননা এটা নিশ্চিত—মানুষ সব কিছুর চরম সীমায় না পৌঁছালে পরমের দিকে এগোতে পারে না। আর চরম অবস্থাই আসলে পরমের ইঙ্গিত দেয়।