তবে “Mitsein” কেবল সামাজিক মেলামেশার কথা নয়; এটি অস্তিত্বের সত্তাতাত্ত্বিক (ontological) স্তরের সত্য। হাইডেগারের ভাষায় “Mitsein” (অন্যদের সঙ্গে থাকা) কোনো সমাজতাত্ত্বিক বা মনস্তাত্ত্বিক পর্যবেক্ষণ নয়—অর্থাৎ, তিনি বলতে চাননি কেবল এই যে, “মানুষ সামাজিক প্রাণী”, বা “মানুষ সমাজে মেলামেশা করে।” এ ধরনের ব্যাখ্যা সমাজবিজ্ঞান বা মনোবিজ্ঞানের পর্যায়ে সত্য হলেও, হাইডেগারের বক্তব্য তার চেয়ে অনেক গভীর ও মৌলিক। তিনি বলছেন—অন্যদের সঙ্গে থাকা মানে অস্তিত্বের অন্তর্গত শর্ত, এর ontological structure বা সত্তাতাত্ত্বিক গঠন।
এখানে “সত্তাতত্ত্ব” (ontology) মানে হচ্ছে: কোনো কিছুর থাকা—Being—কীভাবে সম্ভব হয়, তা নিয়ে চিন্তা করা। হাইডেগার এই শব্দটি ব্যবহার করেন সত্তার প্রকৃতি বোঝাতে—existence নয়, বরং the condition that makes existence possible। তাই যখন তিনি বলেন “Mitsein is ontological”, তিনি বোঝান যে “অন্যদের সঙ্গে থাকা” কোনো পরবর্তী সামাজিক অবস্থা নয়, বরং অস্তিত্বের গঠনমূলক সত্য, যা মানুষের সত্তার ভেতর থেকেই উদ্ভূত।
অর্থাৎ, মানুষ প্রথমে একা থেকে পরে সমাজে প্রবেশ করে—এমন নয়। বরং মানুষ জন্মের মুহূর্ত থেকেই এক সহাবস্থানশীল সত্তা (being-with-others)। তার চিন্তা, ভাষা, আচরণ, এমনকি আত্মবোধ—সবই আগেই তৈরি “অন্যদের জগৎ”-এর ভেতর থেকে গঠিত। সে “নিজে” যা ভাবে, সেটিও “অন্যদের সঙ্গে থাকা”-র অভ্যন্তর থেকে আসে। “Mitsein” তাই মানুষের সামাজিক অবস্থার ফল নয়; বরং সামাজিকতা নিজেই মানুষের “থাকা”-র মৌল গঠন।
একটি উদাহরণে বলা যায়—আমরা যখন ভাষায় কথা বলি, তখন সেই ভাষা আমাদের তৈরি নয়; এটি আগেই “অন্যদের” দ্বারা তৈরি, আমরা শুধু তাতে অংশ নিই। একইভাবে, আমাদের নৈতিকতা, ভাবনা, জীবনবোধ—সবই “অন্যদের সঙ্গে থাকা”-র মাধ্যমে সম্ভব। যদি মানুষ একা কোনো জগতে পড়ত, তাহলে তার “অস্তিত্ব” অর্থহীন হয়ে যেত, কারণ জগতের অর্থই তৈরি হয় অন্যদের সঙ্গে সম্পর্কের ভেতর দিয়ে।
এইজন্য হাইডেগার বলেন—“Mitsein belongs to the very structure of Dasein.” অর্থাৎ, “অন্যদের সঙ্গে থাকা” হলো মানুষের অস্তিত্বের অঙ্গ, বাহ্যিক সংযোজন নয়। মানুষ “বিশ্বে থাকা”র মধ্যেই “অন্যদের সঙ্গে” থাকে; এটি তার ontological condition—অর্থাৎ, তার সত্তার অন্তর্নিহিত উপাদান, যা ছাড়া মানুষের অস্তিত্বই অসম্ভব।
সংক্ষেপে, যদি কেউ বলে “মানুষ সমাজে বাস করে”—এটি একটি সামাজিক সত্য (ontic truth)। কিন্তু হাইডেগার বলছেন—“মানুষ মূলতই সহাবস্থানশীল”—এটি একটি সত্তাতাত্ত্বিক সত্য (ontological truth)।
তাই, “Mitsein”-এর ontological অর্থ হলো—অন্যদের সঙ্গে থাকা কোনো বিকল্প নয়, এটি “থাকা”-র নিজস্ব ধরন। “অস্তিত্ব” মানে সর্বদাই “সহ-অস্তিত্ব”—যেখানে মানুষ নিজের অস্তিত্বকে উপলব্ধি করে, কারণ অন্যরাও “আছে,” আর সেই সম্পর্কই অস্তিত্বকে সম্ভব করে তোলে।
মানুষ কখনোই “অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন” হতে পারে না, কারণ “অন্যরা” তার অভিজ্ঞতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের প্রতিটি উপলব্ধি, প্রতিটি সিদ্ধান্তে “অন্যদের দৃষ্টি” কোনো না কোনোভাবে সক্রিয় থাকে—আমরা বুঝি, বিচার করি, ভালোবাসি, ঘৃণা করি—সবই “অন্যদের সঙ্গে থাকা”-র প্রেক্ষিতে।
তবে এই “Mitsein”-এর ভেতরেই লুকিয়ে আছে বিপদও—যখন মানুষ নিজের স্বতন্ত্রতা হারিয়ে “অন্যদের মতো” বাঁচতে শুরু করে। হাইডেগার এই অবস্থাকে বলেছিলেন “Das Man” বা the They-self—যেখানে মানুষ নিজের সম্ভাবনাকে হারিয়ে ফেলে, “সবাই যেমন ভাবে” সেইভাবে ভাবতে শুরু করে। এই “অন্যদের সঙ্গে থাকা” তখন রূপ নেয় “অন্যদের ভেতর হারিয়ে থাকা”-য়। ফলে “Mitsein”-এর অর্থ হয়ে দাঁড়ায় এক দ্বিমুখী অবস্থা—এটি যেমন মানুষকে মানুষ করে তোলে, তেমনি তাকে নিজের থেকে বিচ্ছিন্নও করতে পারে।
এই দ্বৈততাই হাইডেগারের অস্তিত্ববাদের গভীর মানবচিত্র। মানুষ একা নয়—সে সর্বদা সহাবস্থানে, কিন্তু সেই সহাবস্থানের ভেতরেও তাকে নিজের পথ খুঁজে নিতে হয়। সে “অন্যদের সঙ্গে” থাকতে পারে, অথচ “অন্যদের মতো” না হয়ে—এই পার্থক্যই তাকে নিয়ে যায় authentic existence-এর দিকে। যখন মানুষ “Mitsein”-এর সামাজিক আবরণ ভেদ করে “Being-toward-death”-এর মুখোমুখি হয়—অর্থাৎ নিজের সসীমতা উপলব্ধি করে—তখন সে সত্যিকারভাবে বুঝতে পারে, এই “অন্যদের সঙ্গে থাকা”র মধ্যেও তার অস্তিত্ব একান্ত নিজস্ব।
মিটজাইন (Mitsein) মানে কেবল সামাজিকতা নয়, বরং অস্তিত্বের গঠনমূলক সত্য: মানুষ নিজে কোনো স্বয়ংসম্পূর্ণ একক নয়, বরং সম্পর্কের বুননে জন্মানো ও গঠিত এক সত্তা—যে “অন্যদের সঙ্গে থেকেই” নিজেকে বোঝে, আর “অন্যদের মধ্যেই” নিজের স্বাতন্ত্র্যের সম্ভাবনা খুঁজে পায়।
এই সহাবস্থান থেকেই জন্ম নেয় “die Anderen”—অন্যরা, যাদের সঙ্গে আমরা বেঁচে থাকি, কথা বলি, বিচার করি, প্রতিক্রিয়া জানাই। হাইডেগার বলেন, “অন্যরা” কোনো পৃথক ব্যক্তি নয়, বরং একধরনের সমষ্টিগত উপস্থিতি—এক সামাজিক সত্তা, যাকে তিনি পরে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেন “দাস মান” (Das Man, “the They”) ধারণায়। “Die Anderen” হচ্ছে সেই প্রাথমিক স্তর—যেখানে আমরা নিজেদের অন্যদের সঙ্গে তুলনা করি, তাদের চোখে নিজেদের দেখি, এবং ধীরে ধীরে “আমরা সবাই যেভাবে বাঁচি”—এই নীরব অথচ গভীর প্রভাবে গঠিত হই।
হাইডেগারের দৃষ্টিতে, মানুষ জন্ম থেকেই “অন্যদের জগতে” নিক্ষিপ্ত (Geworfenheit)। সে নিজের চিন্তা, ভাষা, মূল্যবোধ—সব কিছুই পায় “অন্যদের” কাছ থেকে। এই “অন্যরা” তার জগৎকে বোধগম্য করে তোলে, কারণ ভাষা, আচরণ, সংস্কৃতি—সবই তাদের মাধ্যমে শেখা; কিন্তু একইসঙ্গে এই “অন্যরা” তাকে নিজের সম্ভাবনা থেকে বিচ্ছিন্নও করতে পারে। সে তখন নিজের মতো বাঁচে না, বরং “অন্যরা যেমন ভাবে, তেমন ভাবে”; “অন্যরা যেমন করে, তেমন করে।” হাইডেগার এই অবস্থাকে বলেন অপ্রামাণিক বা অনাত্মিক অস্তিত্ব (inauthentic being)—যেখানে মানুষ নিজের জীবনকে আসলে “অন্যদের” প্রতিচ্ছবিতে চালায়।
“Die Anderen” তাই এক paradoxical বাস্তবতা—তারা যেমন প্রয়োজনীয়, তেমনি বিপজ্জনক। আমরা “অন্যদের” ছাড়া মানুষ হতে পারি না, কিন্তু তাদের ভেতরেই হারিয়ে যেতে পারি। এই দ্বৈত অবস্থাই হাইডেগারের অস্তিত্ববাদের হৃদয়—একদিকে মানুষ সামাজিক প্রাণী, অন্যদিকে সে নিজের অস্তিত্বের স্বতন্ত্র সম্ভাবনা নিয়ে জন্মায়।
হাইডেগার এখানে কোনো সামাজিক নিঃসঙ্গতার প্রচার করেননি; বরং তিনি দেখিয়েছেন, অন্যদের উপস্থিতি মানুষকে শেখায় “থাকা”-র অর্থ, কিন্তু সেই “অন্যদের দৃষ্টির নিচে” মানুষকে নিজস্বভাবে বাঁচার সাহসও অর্জন করতে হয়। যতক্ষণ মানুষ “die Anderen”-এর ছায়ায় বাস করে, ততক্ষণ সে “they-self”-এ (Das Man) বন্দি থাকে; কিন্তু যখন সে নিজের মৃত্যুবোধ (Being-toward-death)-এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনের সীমাবদ্ধতা উপলব্ধি করে, তখন সে “অন্যদের” প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে নিজের জীবনের দায় নিজের হাতে নেয়—এই অবস্থাই স্বকীয় অস্তিত্ব (Authentic Existence)।
অতএব, “die Anderen” হাইডেগারের দর্শনে কেবল ‘সামাজিক অন্যেরা’ নয়; তারা সেই প্রতিফলিত দৃষ্টি, যার ভেতর দিয়ে মানুষ নিজের অর্থ খোঁজে। তারা ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাসের প্রতীক—যারা আমাদের মানবজগৎকে সম্ভব করে তোলে, কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের অস্তিত্বকে আড়ালও করে রাখে। সত্যিকার জীবন শুরু হয় তখনই, যখন মানুষ “অন্যদের সঙ্গে” থাকা অব্যাহত রাখে, কিন্তু “অন্যদের মতো” বাঁচা বন্ধ করে—যখন সে তাদের জগতে থেকেও নিজের অস্তিত্বকে স্বাধীনভাবে রচনা করতে শেখে।
এভাবে “দাস মান” মানুষকে এক সাধারণ এবং নৈর্ব্যক্তিক (average and impersonal) অবস্থায় রেখে দেয়। এর ফলে সে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ ও দায়বোধ হারিয়ে ফেলে। হাইডেগারের ভাষায়, এই অবস্থা হলো অস্বকীয় অস্তিত্ব (Inauthentic Existence) —জার্মান : উনাইগেনলিশকাইট (Uneigentlichkeit), অর্থ “অ-নিজস্বতা” বা “অ-স্বকীয় হওয়া”। এর বিপরীতে থাকে আইগেনলিশকাইট (Eigentlichkeit), উচ্চারণ আই-গেন-লিশ-কাইট, অর্থ “নিজের হয়ে থাকা” অথবা “স্বকীয় অস্তিত্ব”। অর্থাৎ, যে-মানুষ নিজের অন্তর থেকে সচেতনভাবে বাঁচে, সে “আইগেনলিশকাইট”-এর মধ্যে অবস্থান করে; আর যে মানুষ শুধু সাধারণের ছাঁচে বাঁচে, সে “উনাইগেনলিশকাইট”-এর মধ্যে আবদ্ধ।
এই অবস্থা হাইডেগারের ভাষায় এক ধরনের অস্তিত্বের পতন (Fallenness, জার্মান : Verfallenheit [ফেয়ার-ফালেন-হাইট])। মানুষ যখন নিজেকে নিয়ে চিন্তা না করে, কেবল সামাজিক প্রচলনকে অন্ধভাবে অনুসরণ করে, তখন তার অস্তিত্ব এই পতনের ভেতর ঢুকে যায়। সে ভাবছে যে, সে নিজে নির্ধারণ করছে, কিন্তু আসলে নির্ধারণ করছে “দাস মান”—যে অদৃশ্য সমষ্টিগত চাপ বলে দেয়, কীভাবে চিন্তা করতে হবে।
“দাস মান”-এর এই অধিপত্য দ্বিমুখী। একদিকে এটি জীবনকে সহজ করে দেয়—কারণ এটি এক সাধারণ মান স্থাপন করে, যা অনুসরণ করা আরামদায়ক; অন্যদিকে এটি মানুষকে নিজের দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্যাশন, পেশা, বা জীবনধারার নির্বাচনে যদি কেউ কেবল এই কারণে নির্ধারণ করে যে “এটাই সবাই করছে”, তবে সে “দাস মান”-এর আধিপত্যে আছে। এর ভেতর নিরাপত্তা রয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতা নেই।
হাইডেগারের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে এই “দাস মান”-এর অচেতন শৃঙ্খল থেকে জাগিয়ে তোলা। তিনি বলেছিলেন, মানুষ যখন নিজের মৃত্যুচেতনা (Awareness of Death, জার্মান : Sein zum Tode [জাইন ৎসুম টোডে]) এবং উদ্বেগ (Anxiety, জার্মান : Angst [আংস্ট])-এর মুখোমুখি হয়, তখনই তার স্বকীয় সত্তা জাগতে শুরু করে। মৃত্যুচেতনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবন সীমিত; এই সীমিততার মধ্যে নিজেকে সচেতনভাবে উদ্ভাসিত করাই অর্থপূর্ণ অস্তিত্ব। আর উদ্বেগ অর্থাৎ “আংস্ট” হলো অস্তিত্বের গভীর নির্মম অভিজ্ঞতা, যেখানে “দাস মান”-এর মায়াময় নিরাপত্তা ভেঙে পড়ে, মানুষ নিজের অন্তরাল শূন্যতার সামনে নগ্ন হয়ে দাঁড়ায়। এই ভয়ের ভেতরেই সে নিজের হয়ে ওঠার অবকাশ পায়।
হাইডেগারের দর্শনে “Sein zum Tode” (জাইন ৎসুম টোডে) এবং “Angst” (আংস্ট)—এই দুটি ধারণা তাঁর সমগ্র অস্তিত্বতত্ত্বের (ontology of existence) সবচেয়ে গভীর ও আবেগপ্রবণ স্তর। এগুলি বোঝায়, মানুষ কীভাবে নিজের সত্তাকে “সত্যিকারভাবে” উপলব্ধি করে, এবং সেই উপলব্ধির কেন্দ্রে থাকে মৃত্যু ও অস্তিত্ব-ভয়—যা মানুষকে “authentic being” বা সত্যিকার জীবনের দিকে জাগিয়ে তোলে।
Sein zum Tode—“মৃত্যুর প্রতি থাকা” (Being-toward-death): এই জার্মান বাক্যাংশের আক্ষরিক অর্থ হলো “মৃত্যুর দিকে থাকা” বা “মৃত্যুর দিকে-অস্তিত্ব”। হাইডেগারের কাছে মৃত্যু কোনো হঠাৎ আসা জৈবিক সমাপ্তি নয়, বরং অস্তিত্বের অন্তর্গত গঠন। মানুষ কেবল একদিন মরবে বলেই নয়, বরং প্রতিটি মুহূর্তে সে নিজের মৃত্যু সম্ভাবনাকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচে। এই “সঙ্গে থাকা মৃত্যু”র সচেতনতা মানুষকে তার জীবনের গভীরতর সত্যে পৌঁছে দেয়।
দেকার্ত যেমন নিশ্চিততা খুঁজেছিলেন “আমি চিন্তা করি, তাই আমি আছি”-তে, হাইডেগার বললেন, মানুষ যদি সত্যিকারভাবে “আছে” হতে চায়, তাহলে তাকে মৃত্যুর দিকে মুখ ফিরিয়ে বাঁচতে হবে—Sein zum Tode। মৃত্যুকে এড়িয়ে যাওয়া মানে নিজের সত্তাকে ভুলে যাওয়া, কারণ মৃত্যু-সচেতনতা মানুষকে জানায় তার অস্তিত্ব কতটা সসীম, আর সেই সসীমতার মধ্যেই তাকে নিজের অর্থ গড়তে হয়।
হাইডেগার বলেন, মৃত্যু হলো ডাজাইন-এর সর্বাধিক নিজস্ব সম্ভাবনা (the ownmost possibility)—এটি এমন এক সম্ভাবনা, যা কেউ ভাগ করে নিতে পারে না। জন্ম যেমন ঘটে “অন্যদের মাধ্যমে”, মৃত্যু ঘটে একান্তভাবে “নিজের” জন্য। কেউ আমার হয়ে মরতে পারে না। এই এককতার বোধ মানুষকে তার জীবনের দায় নিজের হাতে নিতে বাধ্য করে। সে বোঝে, অন্য কেউ তার জীবন বাঁচাবে না; তাই তাকে নিজেকেই বেছে নিতে হবে। এইভাবে মৃত্যু হয়ে ওঠে অস্তিত্বের আয়না, যেখানে মানুষ প্রথম বার নিজের প্রকৃত চেহারা দেখতে পায়।