শ্রবণহীন মূক স্বপ্ন

কেউ অপেক্ষা করে থাকেনি আমার শান্তির জন্যে,
কেউ আলো তুলে দেখেনি, আমার ঘরে অন্ধকার
আক্রমণোদ্যত হয়ে আছে কি না, কেউ আমার
উপবাসের অন্নজল নিবিড় করেনি স্নেহ করুণার
প্লাবিত মমতায়—
এক তুমি ছাড়া।




বড়ো দেরিতে ভালোবাসলাম ওই মুখ। বড়ো দেরি
হলো তোমাকে ভালবাসতে। দেরি হলো দেখতে
কেমন করে ভোরের আলো কাঁপছে জীর্ণ গাছের
ছিন্নপ্রায় পাতায়—বুড়ো ছেলের ঘুমন্ত মুখে
মায়ের ব্যাকুল চাহনির মতো।




এবার ডানা ছিঁড়ে গেছে কাঁটায় আর তপ্ত
বৃষ্টিতে। বুকের হাড় থেকে গলায় শুধু নিঃশব্দ
নামের হাহাকার! হয়তো আর কোনোদিন
উড়ব না সাদা মেঘের ওপারে নিঃসংকোচ
প্রসারিত সমর্পণে। জানতাম না তো, আমাকে
গ্রহণ করবে বলে আমি তিলে তিলে
বেড়ে উঠছিলাম অরণ্যলতার মতো। জানতাম না,
কেন জেগেছিলাম, কেনই-বা ঘুমিয়ে ছিলাম!




বড়ো দেরি হয়ে গেল। মেঘ করার কত পরে চমকাল
তোমার আর্দ্র-মুখ! তুমি না নেওয়া পর্যন্ত
আমি গুনে চলেছি প্রতিটি নিঃশ্বাস-নিঃসঙ্গ
একক। দেদীপ্যমান আমার শ্রবণহীন মূক স্বপ্ন।
কেমন করে বলব তুমি কোন মন্দির
উপেক্ষা করে ধরবে আমার হাত, কেমন করে বলব
কী শ্যামল-কমনীয় তুমি, কী প্রসন্ন মহিমায়
ব্যাপৃত হয়ে আছ তৃণ হতে তারায়,
কেমন করে এত বড়ো কথা বলব . . .
তুমি আমার!
Content Protection by DMCA.com