এই বয়েসি পৃথিবীর কোলাহল থেমে গেলে তুমি এসো। নীলের ভারে নুব্জ্য আকাশের নীলচে আভা কমে এলে তুমি এসো। সমুদ্রের একাকী ক্রন্দনের নীরবতা থেমে গেলে তুমি এসো। আমি তোমার অপেক্ষায় থাকব কয়েক জন্ম! প্রজাপতির শরীর হরেক রঙের প্রলেপ ফুরিয়ে রংহীন হলে তুমি এসো। সন্ধ্যের পিঠে ভর করে নীড়হারা চড়ুইজোড়ার দুঃস্বপ্ন হয়ে তুমি এসো। আমার চৌকাঠে এলে তোমায় আলপনা করে রেখে দেবো বয়ামে ভরে। তুমি যখন তখন, যেমন তেমন, হুটহাট করে চলে এসো আমার নিভৃতদুয়ারে। জীবনের পড়ন্ত বিকেলে বার্ধক্যে নুয়েপড়া, কুঁচকেযাওয়া অস্থিচর্মের বোঝা নিয়ে তুমি চলে এসো আমার কাছে। যখন কেউ তোমাকে আর চাইবে না, কেউ তোমাকে আর মানবে না, কারও যখন তোমাকে আর সহ্য হবে না, তখন তুমি থুত্থুড়ে - নড়েবড়ে - ভাঙাভাঙা শরীরটাকে নিয়ে আমার কাছে এসো। নিলামে তুলে চড়াদামে ভালোবাসার বিনিময়ে দখলে নেবো পুরো তোমাকেই! তোমার ওই অযত্নের শরীরটাকে খুব যত্নে মেরামত করে দেবো ঠিকই আমি! যুগ যুগ ধরে অবিচল পায়ে দাঁড়িয়ে-থাকা ক্লান্ত পাহাড়টি হয়ে তুমি চলে এসো। ও পায়ে আমি আদর মাখব, চুমু আঁকব। সত্যমিথ্যার দেয়াল মাড়িয়ে, জাতকুলের কপালে থুতু ছিটিয়ে কোনও এক জন্মে তুমি সত্যিই চলে এসো একান্ত আমার মানুষ হয়ে। সে জন্মে হাতে কিছু সময় রেখো, এ জন্মে নাহয় রইলে ব্যস্তই! সে জন্মে তোমাকে ডুবিয়ে রাখব ভালোবাসা-প্রেমে। শব্দহীনতার শব্দ কুঁড়ে স্বপ্নগালিচার এক টুকরো জমিনে ভালোবাসায় ঠাসা হোক তোমার আমার বসতবাড়ি। ‘প্রেমাচ্ছন্ন স্বপ্নদ্বীপ’, সে নতুন বাড়ির নাম হবে। বলো, আসবে তো, তোমার শেষজীবনের শেষমুহূর্ততে?