আপনার নিজের ভাল থাকা কিংবা না-থাকার ব্যাপারটা যত বেশি অন্য একজন ব্যক্তিকেন্দ্রিক করে ফেলবেন, আপনার পক্ষে ভাল থাকাটা তত বেশি কঠিন হয়ে পড়বে। আপনার মন ভাল করে দেয়ার দায়টা আপনি ছাড়া আর কারওর হাতে দিয়ে দেবেন না। মনটা তো আপনার, তাই ওটা ভাল করে দেয়াটাও আপনার, কেমন? আপনি নিজেকেই কেন্দ্র করেই ভাল থাকাটা শিখে নিন। এই যেমন ধরুন, আপনার সবচাইতে প্রিয় মানুষটি, হতে পারে, উনি আপনার বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু, কিংবা ভালোবাসার মানুষ, উনি যদি সবসময়ই আপনার মন ভাল করে দিতে না পারেন, তবে কী হবে? হয়তো, উনারই একইসময়ে মন খারাপ। কিংবা, উনি ব্যস্ত, মানে সত্যিই ব্যস্ত। কিংবা, উনার ইচ্ছে করছে না সময় দিতে। কিংবা, উনি চাইছেন, আপনার মনটা খারাপ হয়েই থাক। কিংবা, উনি হঠাৎ দূরে কোথাও চলে গেছেন। এমনও তো হতে পারে, মারা গেছেন আপনার মন ভাল করে দেয়ার মানুষটি। হতে পারে তো, নাকি? তখন আপনি কী করবেন? আচ্ছা, ওসব বাদ। আমি দেখেছি, এমনও হয়, আপনার মন ভাল করে দেয়ার মানুষটি হঠাৎ করেই কেমন জানি হয়ে গেছেন। এমন-এমন সব কথা বলছেন, এমন-এমন সব কাজ করছেন, ভাবতেই কষ্ট হয় উনি আসলেই উনিই! সেই মন ভাল করে দেয়ার মানুষটিকে ফোন করলে মন আরও বেশি খারাপ হয়ে যায়। তখন আপনি কী করবেন? আরও বেশি মন খারাপ করে থাকবেন? সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে ভীষণ অভিমান করে বসে থাকবেন? কী লাভ এতে, বলুনতো? বেঁচে যখন আছেনই, ভালভাবেই বেঁচে থাকুন না! ভাল না থেকে কী লাভ, বলুন? তাহলে, থাকলে ভাল থাকাটাই তো ভাল, তাই না? কমিয়ে ফেলুন না আরেকজনের উপর নির্ভরতা, নিজের ভাল থাকার ব্যাপারটিতে! নিজেই নিজের দায়িত্ব নিতে শিখে নিন। দেখবেন, এতে আপনার মধ্যে একধরনের নিজস্বতা তৈরি হয়ে যাবে। অন্যের কাঁধে দোষ না চাপিয়ে বেঁচে থাকাটা শিখে যাবেন। আমার সকলকিছুর সব দায় একমাত্র আমারই, এই বোধটি আসা বিশাল এক ব্যাপার। কীভাবে যেন আপনি অনুভব করতে শুরু করবেন, আপনি কিছুতেই ক্ষুদ্র নন, তুচ্ছ নন। আপনার সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ আপনিই করতে শিখে যাচ্ছেন ক্রমশ। আরও মজার ব্যাপার হল, আপনি একবার নিজে-নিজে ভাল থাকতে শিখে গেলে আপনার মনটা আর কেউই হুটহাট করে খারাপ করে দিতে পারবে না।
বাইরে আকাশভেঙে জ্যোৎস্না নেমেছে। আপনি উঠোনে নেমে উঠোনটাকে ছুঁয়ে দেখছেন না কেন, বলুনতো? ভীষণ ব্যস্ত? ক্লান্ত? ইচ্ছে করছে না? মুভি দেখছেন? আপনি সেই রাতে চাঁদের আলোটা মিস করে ফেলছেন, আর সবাই কী সুন্দর উঠোনে বসে গান ধরেছে, চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে……… আপনার বুঝি হিংসেও হয় না? চাঁদটা চলে গেলে ওকে আপনি আর খুঁজেও পাবেন না! উঠোনটা ওরকম বিশাল শাদা রুটির মতন আর কখনওই হয়ে যাবে না। ওরকম উঠোন আর কোনওদিনও ফিরে না এলে, তখন? তখন কি মনে হবে না, ইসস্…..যদি…….!
বৃষ্টি এলেই জানালা বন্ধ করে দিতে হবে? কেন? কোথায় লেখা আছে এই কথা? কোন আইনের কটমট বইতে? জীবন আইনে চলে? ভিজুন না একটু! হাতটা দিয়ে ছুঁয়ে দেখুনই না অমন জলের কোমল শরীরটা কেমন হয়! ঠোঁটে একটু বৃষ্টির জল নিয়েই দেখুন না চুম্বনের শিহরণ আসে কিনা! জ্বর-সর্দি এখন বাধাবেন না তো বুড়ো বয়সে বাধাবেন? আর ও তো এমনিই হয়। সব দোষ তবে বৃষ্টির কেন? সুযোগ থাকলে নেমেই যান না বৃষ্টি-সঙ্গমে! হাত বাড়ালে কেউ না ধরুক, লাগবেও না কাউকে। একাই নেমে যান ভিজতে। ঘুরে-ঘুরে নাচতে-নাচতে ভিজে নিন খানিকক্ষণ। বেশ লাগে কিন্তু, সত্যি-সত্যি!
জলের মধ্যে পা ডুবিয়ে বসে থেকে দেখেছেন কখনও একা-একা? জলের শীতল প্রবাহ মনের ভেতরে গিয়ে পর্যন্ত ধাক্কা দিয়ে দেয়! সময়টা সন্ধেবেলা হলে আশেপাশের নৈঃশব্দ্য আপনাকে হয় দার্শনিক কিংবা একেবারে পাগল করে ছেড়ে দেবে। দার্শনিক হতে হলে কিন্তু বিদ্যেবোঝাই হতে হয় না; এমনকি পাগল হতে হলেও! কিছুটা ব্রেক নিন, নিজের মনের ঘরে একবার ঘুরে আসুন। লোকের বাড়িতে কত-কত যাই। নিজের মনের বাড়িতে একটিবারের জন্যও যাওয়ার সময় হয় না কেন? ওরকম যাওয়াযাওয়িতে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে আপনার মনখারাপ করে দেয়, এমন সাধ্য কার?
আর কিছু না, বারান্দায় একটা বিকেল কাটিয়েই দেখুন না! ওই ছেলেরা কেমন করে ঘুড়ি ওড়ায় আর ভোঁকাট্টা করে, রাস্তায় সওদা করতে-আসা লোকগুলি সে কী ভীষণ চেঁচায়, একটা সাইকেল টুংটাং শব্দ তুলে কোন গলিতে যেন ঢুকে পড়ে, ওই ছাদে একটা মেয়ে আড়চোখে কোন যুবকের হৃদয়ে ঝড় তুলে আই-কনট্যাক্ট করে, আশেপাশের উঁচু-উঁচু দালানের গায়ের রঙ সকালেবিকালে কেমন করে বদলায়, পাখিরা নাচতে-নাচতে এদিকওদিক ফুড়ুৎফাড়ুৎ করে। এসব দেখেই দেখুন না! হাসবেন মিটিমিটি আর বলবেন, ওরা সবাই ভাল থাক। দেখবেন, নিজেই কী ভীষণভাবে ভাল থাকছেন!
আর কিছু নয়, এই এক আকাশ নিয়েই তো জীবনটা কাটিয়ে দেয়া যায় দিব্যি! প্রয়োজনের সময়ে আকাশের মধ্যে একবার ডুব দিতে পারলে ঠিকঠাক, আর কিচ্ছু লাগে না। মাঠে শুয়ে আকাশ দেখেছেন কখনও? কিংবা ছাদে? নিদেনপক্ষে ব্যালকনিতে, কিংবা বিছানায় শুয়ে-শুয়ে খোলা জানালার বাইরে? অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে-তাকিয়ে একটাসময়ে হারিয়ে যাবেন। সে আকাশ কোথায়-কোথায় অজানার গন্তব্যে আপনাকে নিয়েই ছুট দেবে! জানবেন, আপনি সে খোঁজ কোনওদিনই জানতেন না। ওই দূরের পাহাড়ে, গাছের পাতার ফাঁকে-ফাঁকে আরও দূরে! আকাশ এমনই। শুধু আকাশই পারে ওরকম!
একটা ভোর পাহাড়ের গায়ে লেপটে থেকে দেখুন। রাতের পাহাড়ে জেগে থাকবেন। জেগে-জেগে দেখবেন, পাহাড়ি বাঁশির সুর কেন অন্যরকমের। পাতায়-পাতায় কী সে কানাকানি চলে রাতভর, সে খোঁজ আপনি কোনও বইতেই কোনওদিনই পাবেন না। পাহাড়ি নদী কেন আর দশটা নদী নয়, সেকথা জানতে আপনাকে পাহাড়ে যেতেই হবে। বুনো ফুলের ঘ্রাণে যে মত্ততা, সেটা টবে-সাজানো ফুলে আসবে কোত্থেকে? একটাই সূর্যের যে কতরকমের রঙ, সেটা পাহাড়ের শরীরে ছোট্ট করে লুকিয়ে থেকে দেখে নিতে হবে। ভোর আসবে, পাহাড় জাগবে, সাথে আপনি নিজেই টের পাবেন, মন-খারাপ করে থাকাটা কী ভীষণ কঠিন একটা কাজ!
নৌকায় ঘুরে বেড়াবেন নাকি এক চাঁদনি রাতে? চাঁদের গা ছুঁয়ে-ছুঁয়ে সামনের দিকে নৌকোয় ভেসে যাবেন। রাতের নদী সবসময়ই ভিন্ন নদী। ওর জলটাও নিজের শরীর বদলে ফেলে মুহূর্তে-মুহূর্তেই। সাথে চাঁদের পুরনো খুনসুটি। আলোর ঝর্ণাধারায় স্নান করে নিতে-নিতে নিজের সবটুকুকেই ছড়িয়ে দিন না রাতের জলের ঘ্রাণে, বাতাসের কুঞ্জনে, আলোর কোমলতায়। ছুটে-যাওয়া নৌকায় শুয়ে-শুয়ে হাত দিয়ে জল ছুঁয়ে দেখুন! দেখবেন, সে জলের স্পর্শে শরীরের সবচাইতে প্রচ্ছন্ন প্রকোষ্ঠটিও দোলা দিয়ে জেগে উঠতে চায়!
সাগরপারে যাবেন কোনও এক সন্ধেপড়া রাতের শুরুতে একা-একা। হাঁটবেন পায়ের পাতায়-পাতায় সরে সরে-যাওয়া বালি ছুঁইয়ে-ছুঁইয়ে। হাওয়ায় ভেসে যাবেন আর চোখ, ঠোঁট, হাত, দু’কানের পেছনটা, ঘাড়সহ সমস্ত শরীরে সমুদ্রের গর্জন আর আঁধারের মায়া মিশিয়ে নেবেন পরম মমতায়। হাঁটুগেড়ে মাঝেমধ্যেই সেই বেলাভূমিতে বসে পড়ে দূরে, ওই দূরে তাকিয়ে থাকবেন। আশেপাশে যারা ঝিনুকের মালা বিক্রিতে হাঁকে আর হেঁকেই যায়, ওদের সাথে গল্পই জুড়ে দিন না! ওদের একটুখানি ভালোবেসেই দেখুন! দারুণ লাগে! গলা ছেড়ে গান গাইতে-গাইতে পা নাচিয়ে সামনের দিকে ছুটে যান। কিংবা পায়ের নিচে ঢেউয়ের দোলা লাগিয়ে আপনার প্রিয় কোনও কবিতা আবৃত্তি করতে থাকুন। I dare not ask a kiss,/I dare not beg a smile,/ Lest having that, or this,/ I might grow proud the while./ No, no, the utmost share/ Of my desire shall be/ Only to kiss that air/ That lately kissèd thee. আপনার কথা আর সুর, দুটোকেই হাওয়ায় ছড়িয়ে দিন। ওরা ছড়াক, সাথে আপনার হৃদয়টাও!
এই বিকেলের মিষ্টি রোদ্দুরটা যদি আর কখনওই না ওঠে, তখন কী হবে? একটু হাল্কা পোশাকে বেরিয়ে পড়বেন নাকি ঘুরতে? রোদ্দুরে কতকিছুই তো বদলে যায়! দেখবেন না একটু? একটা সেলফি তুলে দেখুনতো ঠিক যখন পড়ন্ত বেলার রোদ এসে মুখের ওপর পড়ে, তখন! আপনি মুগ্ধ হয়ে দেখবেন, আপনি সে কী ভীষণ সুন্দর দেখতে! যা আপনার নিজের সৌন্দর্যকে আপনার চোখের সামনে মেলে ধরতে পারে, তা নিজে কতটা সুন্দর, সেকথা ভেবে দেখেছেন কখনও? পাতায়-পাতায় রোদের লুকোচুরি দেখতে-দেখতেই তো একটা বিকেল কাটিয়ে দেয়া যায়! হাঁসের ডানায় রোদ এসে পিছলে-পিছলে গেলে ওদেরকে কেমন অন্যরকম লাগে, খেয়াল করে দেখবেন নাকি একটু? ওদের মতো করে রোদ ঝেড়ে-ঝেড়ে হেঁটেই দেখুন না, কেমন লাগে!
কাছেই যদি নদী থাকে, তবে সেখানে যাচ্ছেন না কেন মনখারাপের মুহূর্তটাতে? নদীর ভীষণ টানে মনও হারায়। পাড়ে বসে-বসে ঢিল ছুঁড়ে দিন নদীর শরীরে। ঢিলগুলি কেমন পাক খেয়ে-খেয়ে নিচে নামে, ঢেউগুলিকে সরিয়ে দেয় নানান দিকে, মনে হতে থাকবে, আপনিই হাত দিয়ে ঢেউ সরাচ্ছেন। অমন করে একটা ঢিল ছুঁড়ে দেয়ার জন্যও তো বেঁচে থাকা যায়! জেলে-নৌকাগুলি কেমন জাল ফেলে-ফেলে রুপোলি মাছ শুষে নেয় নদীর বুক থেকে। কখনও, নদীতে কী কী যেন ভেসে যায়। একেকটা স্রোত আসে আর লাফিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে সেই স্রোতের মধ্যে। কেন মনখারাপ হয়েছিল, সেটাই বা মনে করার সময় কই?
মাঠ তো আছে কাছেই, না? একাকি মাঠে কিছুতেই নিজেকে একাকি ভাবা যায় না। ভাবনারাজ্যের সব অনুষঙ্গ এসে সঙ্গ দেয়। মাঠে ওরা কেমন করে ছোটে, ছেলের দল ক্রিকেট-ফুটবলে মেতে থাকে সারাটা দুপুর, বাদামওয়ালা নিজের ঝুড়ির সব বাদাম নিজেই শেষ করে দিতে-দিতে হাঁকে…… এই বাদাম…… এই বাদাম…… মাঠের এক কোণায় শুয়ে পড়ে অন্য প্রান্ত দেখতে বড় ভাল লাগে। মনে হয়, পৃথিবীটা বুঝি সত্যিই গোল! নইলে ওইদিকের লম্বা ছেলেটিকে এইদিকের খাটো ছেলেটির চাইতে খাটো দেখাবে কোন দুঃখে? মাঠের ওপরেই দুপুর গড়ায়, বিকেল ফুরোয়, সন্ধে নামে। হঠাৎ শৈশবে ফিরে যেতে মাঠে ফিরে দেখতে পারেন।
মন ভাল করে থাকতে যে সবসময়ই ভাল লাগে, তা কিন্তু নয়। কখনও-কখনও আমরা চাই, মনটা একেবারেই শান্ত-সমাহিত হয়ে থাক। খুব কঠিন ক্লান্তিকর অনেক কাজই শান্তমনে করতে হয়। আবার অহংকে মন থেকে বিদেয় করতেও মনটাকে খারাপ করে ফেললে মন্দ হয় না। একটা ভারি বই কিংবা মুভি পড়তে গেলেও শান্তমনের দরকার। আবার আনন্দে ডুব দেয়ার আগেও মাঝেমধ্যে মনটাকে বিষাদমাখা করে ফেললে ভাল ফল পাওয়া যায়। ধরুন, আপনার খুব প্রিয় কেউ খুব মনখারাপ করে আছেন এমন কোনও কারণে যেটাতে ওর মন ভাল করে দেয়ার বদলে ওর ব্যথায় সমব্যথী হওয়াটা বেশি প্রয়োজন সেই মুহূর্তে। তখন খুব দরকার হয় নিজের মনটাকেও একটু স্তব্ধতার অনুবাদে পাল্টে দিতে। মনখারাপ করতে কিছু মনখারাপ করে দেয়ার বই পড়া যায়, মুভি দেখা যায়, মিউজিক শোনা যায়। যাদের যখন ইচ্ছে তখনই বৃষ্টি নামানোর ক্ষমতা আছে, তারা মনে-মনেই বৃষ্টি নামিয়ে দিব্যি নিজের মন নিজেই খারাপ করে দিতে পারেন। মনখারাপের বিদ্যেটা যদি নিজেই শিখে নেয়া যায়, তবে অনেক সুবিধে। কীরকম? এই ধরুন, যদি অন্যকাউকে আপনার মনখারাপ করার কাজটি দিয়ে দেন, তবে সে তার মর্জিমাফিক আপনার মনকে খুব খারাপ করে দেবে। এতোটাই খারাপ, যা ওইসময়ের সকল দায়কে ছাপিয়ে যায়। সুখের মাত্রা একটাই, কিন্তু কষ্টের মাত্রা অনেকরকমের। কষ্টকে ব্যক্তিগত রাখতে পারলে সবচাইতে ভাল। কারণ, আপনার কষ্ট আপনার নিজের কাছে অনেক অনেক দামি। অথচ আপনার কষ্ট অনেকের কাছেই নির্মল বিনোদনের উৎস। আপনি কখনওই তা জানতে পারবেন না। সুখের ভাগাভাগিতে অনেককেই হয়তো বিশ্বাস করা যায়, কিন্তু কষ্টের ভাগভাগিতে স্বার্থপরতাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। নিজের কষ্ট শেয়ার করতে হয় একমাত্র নিজের মনের সাথে। আমাদের ভেতরের মানুষটা সে কষ্ট বহন করতে-করতে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়বে, তখনই সে চাইবে নিজেকে এই দুর্বহ যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করতে। যেভাবে বেঁচে থাকলে আফসোস কম থাকে, সেভাবে করে বাঁচতে হলে কষ্টের চাইতে অমূল্য সম্পদ আর নেই। হাসতে চাইলে আগে কাঁদতেই হবে। সে আন্তরিক চোখের জলের দাম মেটানোর মতো বিত্ত শুধু নিজের কাছেই থাকে। যে সম্পদে অন্যের ভাগ থাকে, সেটা প্রায়ই দায়ে পরিণত হয়। তাই, নিজে-নিজে ভাল থাকতে শেখাটা যতটা জরুরি, নিজে-নিজে খারাপ থাকতে শেখাটা তার চাইতেও আরও বেশি জরুরি।