অপরাহ্নের নীড়



: তোর কাছে আমার হৃদয়ের স্পন্দন রাখা আছে। এত জোরে নিঃশ্বাস নিস না, আমি সহ্য করতে পারি না! আহত পাখির মতো পড়ে আছি তোর বুকে।
: কাঁদিস না, তোর চোখে পানি দেখতে আমার ভালো লাগে না।
: তুই আমাকে আর কখনোই তোর কাছে ডাকবি না, আমি জানি। সবটা জেনেও তোকে কাছে জড়িয়ে বুকের একপাশে ধরে রাখার পিপাসা বাড়ছে। আমার আচরণের জন্য আমি খুব অনুতপ্ত। পারলে ক্ষমা করিস আমাকে। আমি তোর ভালোবাসার মানুষ হয়ে থাকতে চাইনি রে, আমি শুধু তোর চোখজুড়ে থেকে যেতে চেয়েছি।
: কোথাও যাইনি, 'আমি আছি'।
: তোকে কল্পনায় আনার জন্য আমি সব কিছু করতে রাজি। তোর অনুভব ছাড়া আমি লিখতে পারি না, ভীষণ দমবন্ধ লাগে সবসময়।
: কী যে সুন্দর লিখিস তুই!
: তোকে ছাড়া তো সম্ভব নয়, কাজটা ভীষণ কঠিন। আমি যে লেখক নই।

: (ওখানে কে?
এক অপ্রত্যাশিত সময়,
-------------------------------)
এই লেখাটি কেমন হয়েছে রে? অনুভব করে পড়ে আমাকে জানাস। এটা খুব কম সময়ে লেখা সম্ভব হয়নি, ৭২ ঘণ্টা সময় লেগেছে।
: এত জ্বর নিয়ে কেন লিখতে গিয়েছিস?
: তোকে খুব ভালোবাসতে, আদর করতে ইচ্ছে করছিল যে! তাই। তুই কী করে বুঝলি আমি ঠিক ছিলাম না?
: অনেক কিছুই তো বুঝতে পারি।
: আর আমি? আমি কতটা বুঝতে পেরেছি তোকে?
: ভয়ংকর রকমের বেশি! আমি নিজেও আমার সম্পর্কে অনেক কথা ভুলে গিয়েছিলাম, যেগুলো তোর লেখা পড়ে আবার মনে পড়েছে।
: তোকে ভীষণ মনে পড়ে, নীড়। যদি আমাকে তোর কাছে ডাকিস, আমি সব ফেলে এই মুহূর্তে তোর কাছে চলে আসব। বিশ্বাস কর।
: জানি আমি। তোর সেদিনের সেই লেখাটা আবার পড়লাম। মনে হয়েছে, তোর সব কিছু, সব লেখা, একদম পুরোটাই একটুকরো ‘আমরা’।

: আর-একদিন সকালে আমাকে ‘শুভ সকাল’ বলবি?
: শুভ দুপুর, পাগলি।
: ঘুমিয়ে গেছিলাম।
: পাগলিটা আমার।
: তুই খুব অদ্ভুত একজন মানুষ, তোকে বোঝা খুব সহজ নয়। আসলে আমি যেমনটা বুঝেছি, যতটা ভেবেছি, তা যথেষ্ট নয়। আমার কাছে তুই ‘বিদায়’ নোস, তুই ‘স্মৃতি’ নোস, তুই শুধুই ‘জীবন্ত’! তুই খুব যত্নে বুকের মধ্যে রেখে দেওয়া দামি ‘মুহূর্ত’।
: তুই আমার চেয়ে অনেক বেশিই অদ্ভুত।

: তুই আমাকে আর শাস্তি দিস না, আমি ক্লান্ত। আচ্ছা, আমি কি তোকে খুব বিরক্ত করি?
: কী যে বলিস! বিরক্ত কেন হব? তুই তো অনেক লক্ষ্মী বাচ্চা রে।
: ভালো আছিস তো?
: আমি থাকি একরকম।
: তুই কাজ কর, আমি তোকে দেখব। তোকে এভাবে দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
: কোলে ওঠ, আয়! তোকে কোলে নিয়ে লেখালেখি করি।
: যাহ্, পাগল!

: পিচ্চি, কেমন আছিস?
: জানি না। তোকে মনে করেছি রাতেই।
: তা তো জানি, বুঝতেই পেরেছি।
: তুইও বুঝি মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে ভাবিস?
: আমি প্রায়ই তোকে ভাবি, এটাকে ‘মাঝে মাঝে’ বলে না। তুই বুকের মধ্যে আয় আমার।
: কতদিন পর, তুই আমাকে বুকের মধ্যে আসতে বললি, নীড়!
: ঘুমিয়ে পড়, তোকে বুকে রাখতে অনেক শান্তি লাগে। আমি ভুলতেই পারি না ওই মুহূর্তগুলো।
: জানিস, আমি মাঝে মাঝে হঠাৎ করে তোর গন্ধ পাই, ঘুম আসে। এখনও পাচ্ছি।
: হ্যালুসিনেশন!
: কেন এমন হয়?
: আমিই তো তুই, তুইই তো আমি। তাই এমন হয়।

: পাগলি, তোকে আমার লাগবে।
: তুই আমাকে যেতে না দিলে থেকে যাব তোর কাছে।
: প্রমিজ কর তুই!
: সত্যি বলছি, তোর সাথে বাকিটা সময় থাকতে চাই আমি। তুই আমার ভীষণ ভালো লাগার একজন মানুষ।
: তোকে মিস করছি এই ক-দিন ধরে। মনে হচ্ছে, তুই আমার জীবনে থাকলে আমি শান্তি পাবো। আমার তোকে লাগবে, তুই থাকিস সবসময়, ঠিক আছে?
: হা হা! যদি বলি- ‘আমি তো তোরই, পুরোটাই’?

: গাধি, কী হয়েছে তোর? চুপ হয়ে আছিস কেন? তুই তো অনেক ভালো লিখিস রে! কী যে চমৎকার হয়েছে রে!
: তুই পড়েছিস?
: অবশ্যই পড়েছি।
: তাহলে তো আর ফিরতে পারবি না, পড়ার সময়েও তো আমার মধ্যেই থাকবি।

: আমাদের স্পর্শ করে থাকার মুহূর্তগুলো তোর মনে আছে, নীড়?
: থাকবে না কেন? তোর চেয়ে গভীরভাবে স্পর্শ আমি কখনোই কাউকে করিনি, আজ পর্যন্ত।

: তোকে সেদিন বকা দেওয়ার পর থেকে তুই আমাকে ভুলেই গেছিস!
: পাগলি....

: থাপ্পড় খেতে না চাইলে রিপ্লাই কর!
: তুই আমাকে খুঁজেছিস? আয়, তোকে ভালোবাসি।
: তুই যাবি না, থাকিস। গেলে মেরে ফেলব! আমার কোনো কথায় মন খারাপ করবি না। আমিই তো, অন্য কেউ তো আর না! তাই মন খারাপ করবি না।
: অভিমান করেছিলাম, কষ্ট লেগেছে।
: ধুর পাগলি! কষ্ট কীসের? আমি আছি তো! তুই মন খারাপ করবি না কখনও। আমি আছি, এদিকে আয়। তুই অভিমান করলে আমার ভালো লাগে না। তুই তো আর সামনে নাই যে আদর করে রাগ ভাঙাব! বুকে আয়।
: তুই একটা ভালোবাসা।