কাকে হারিয়েছ, নদী? কোন শৈশবকালে? যার জন্য হাহাকারে এত ওঠো ফুলে ফুলে? আছড়ে আছড়ে পড়ে এ পৃথিবীর পায়, বুকফাটা স্বরে বলো, হায়! সে কোথায়? তোমার বিচ্ছেদক্লিষ্ট শুভ্র কেশের দল, অনন্ত অপার হতে ভাসিয়ে আনে জল। কাতরে লুটিয়ে পড়ে নির্দয় পাথরে, পাথরও যায় ফেটে সেই করুণ স্বরে। এত শোক বুকে ধরো, হে নদীর কূল! কোন সে কঠিন ভারে হয়েছ ব্যাকুল! নেই দিন, নেই রাত---একই সুর-গান, সেই ক্ষুব্ধ বেদনাতে এ মর্মভেদী তান! সারাগায়ে বিষাদমাখা মৃদুমন্দ হাওয়া, মুহুর্মুহু করে শুধু অশ্রু আসা-যাওয়া। তোমার ধূসর ছায়া পাতাঝরা গাছে, অশ্রু এসে জমা হয় রাত্রিরের কাছে। ম্লান সূর্য, ম্লান চাঁদ; পাখিরও গলায় করুণ সংগীত আজ করে হায় হায়! তোমারই শোকের ভারে স্তব্ধ এ পৃথিবী, আকাশে-বাতাসে দোলে বেদনার্ত ছবি। প্রতিটি ঢেউয়ের শত উদ্বেল উচ্ছ্বাস, এনেছে বয়ে যত সুতপ্ত দুঃখের শ্বাস। এরই সাথে জগতের সব চোখের জল, এ হৃদয় সারাক্ষণই হচ্ছে এমন চঞ্চল! ইচ্ছে হয়, কষ্টে তোমায় বাহুর বাঁধনে, ধরে রাখি বেদনার সুতীব্র আলিঙ্গনে। একই সুরে গাই গান, একই তান ধরি, কাঁপবে সকল প্রাণ বিরহে তোমারই।