স্পর্শের অতলান্ত স্পর্শ



প্রিয়তমেষু,
যান্ত্রিক সময়ের ফাঁক গলে,
একমুহূর্তের জন্য আকাশ দেখার সময় হবে কি?
ভাবো তো, এক ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি পেরিয়ে,
অন্য কোনো গ্রহের নিঃসঙ্গ সন্ধ্যায়—
আমি শুধু তোমাকেই ভাবছি।

ইচ্ছে করছে ছুটে আসতে তোমার কাছে।
একটি ছোট্ট কামরা, তুমি শুয়ে আছ আমার কোলে,
জানালার ওপারে গভীর অন্ধকার,
আমি তোমার চুলে আঙুল বোলাচ্ছি ধীরে ধীরে।
কোনো আলো নেই, শুধু নিঃশ্বাসের স্পন্দন।
তোমার দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে ফিসফিস করে বললাম—
“আমায় চেনো কি?”

তারপর আস্তে আস্তে
তোমার বুকে এলিয়ে দিলাম বিবস্ত্র শরীর।
তুমি চোখ বন্ধ করলে...
তোমার বুকে আমার হৃৎস্পন্দন,
আমার সমস্ত সুখ তোমার রক্তের স্রোতে মিশে গেল।
সেই মুহূর্তে, মনে হলো— আমি তোমার।
যেভাবে ওই হাত, ওই ঠোঁট তোমার,
তেমনি আমিও শুধুই তোমার।

তুমি আমায় আরও গভীরভাবে আঁকড়ে ধরলে।
তোমার ঠোঁটে আমার ঠোঁট,
তোমার বাহুতে আমার বাহু আবদ্ধ,
আমার শূন্যতায় তুমি স্থান নিলে।

মহাবিশ্ব তখন থমকে গেছে,
নিঃশব্দ ভেঙে বেজে উঠল সঙ্গমের আদিম সুর,
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সংগীত।

আমার গভীরে তুমি,
এক অন্ধকার জরায়ুর প্রান্তে
তোমার অমৃতের হিল্লোল।

অথচ,
আমরা একই গ্যালাক্সির,
একই নক্ষত্রের আলোয় বড়ো-হওয়া,
একই গ্রহে বেঁচে-থাকা দুটি প্রাণ—
তবু তোমাকে পাই না ছুঁতে, কোনো কিছুর বিনিময়েও না!

মন খারাপের দিনগুলো যেন
দিঘল কালো মেঘ হয়ে ঝুলে থাকে আকাশে…
Content Protection by DMCA.com