শুভ রাত্রি

  
 রাতে খেয়ে নিয়ো কিছু। লিখতে বসবে তো? ঠিক আছে...লিখো তাহলে। আমাকে কি কারও মনে আছে? না থাকলে মানুষ আমাকে বলে দিক! আমি চলে যাব। প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে।
  
 ওহ্‌! তুমি তো লিখেও ফেলেছ! ভালো হয়েছে কবিতাটা! আমি খেয়াল করিনি আগে। 'বাবলি' লিখে বুদ্ধদেব গুহ মোটা মেয়েদের ভালোবাসা পেয়েছেন, আর তুমি এই কবিতাটা লিখে কালো মেয়েদের ভালোবাসার পাকাপাকি ভাগীদার হয়ে গেলে! কনগ্র্যাটস!
  
 এই যে, আছ? শুভ রাত্রি...
  
 তোমার কাজ হয়ে গেলে তুমি তোমার সময়মতো ঘুমিয়ে পোড়ো। টা টা...
  
 তুমি কি গতকালের মতো কিছু করবে বলে ভাবছ? ওরকম কিছু ভেবে থাকলে সেটা একটু বলো, প্লিজ! তাহলে আমার একটু সুবিধে হয়।
  
 কোথায় তুমি? তুমি আবারও ঝগড়া না বাধিয়ে ছাড়বে না দেখছি...
  
 আমার তোমাকে বোঝা হয়ে গেছে...
  
 সেদিন বললাম না ঝগড়া ছাড়া তোমার বেশি দিন যায় না। কী একটা মানুষ! সারাটা দিন এরকম খাইস্টামি করেছে। এখনও তা-ই করে চলেছে...এর থেকে তো তোমার অফিসে থাকাই ভালো! অ্যাই ছেলে, তুমি বাসায় এসেছ কেন? যাও, অফিসে চলে যাও আবার! তুমি অফিসেই থাকো, আর বসের বকা খাও! এটাই ঠিক আছে তোমার জন্য!
  
 এবার কিন্তু সত্যিই রাগ হচ্ছে...!
  
 সত্যিই...তোমার সহ্যশক্তি অসীম! নক নক...!!
  
 একটা সিম্পল 'শুভ রাত্রি' বলে দিলেই কিন্তু ঝামেলা মিটে যায়। তুমি তো সেটা করবে না! করলে ঝামেলা হবেটা কী করে? এবার ঝগড়া হলে তোমারই দোষ সবটা! আমাকে বলতে এসো না এমন কিছু যে আমি ঝগড়া করি!
  
 আর রাতে ঘুমোতে যাবার আগেও কেউ যেন আমাকে কোনও কিছু লিখে না পাঠায়...তাকে বলে রাখছি কিন্তু...খুব খারাপ হয়ে যাবে!
  
 এতক্ষণ যাবত যখন পারছে না কিছু বলতে...তখন পরেও বলতে হবে না আর!
  
 তার গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের নিয়েই থাকুক সে! তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ মেটাক সে! আমি তো কেউ নই তার! যারা কেউ হয় তার, তাদের সাথে ভালে থাকুক সে!
  
 আমি পড়তে না বসে সেই কখন থেকে অপেক্ষা করে আছি একটু কথা বলার জন্য...ঘুম এসেছে, তা-ও বসে রয়েছি।
  
 এসব কথা কি বলে বোঝানোর ব্যাপার? একদমই নয়! কোনও কিছুরই কোনও দাম নেই কারও কাছে! ভালো, খুবই ভালো!
  
 এরপর কল করলে তো দোষ আমার হয়! আমি নাকি তাকে বিরক্ত করি, লিখতে দিই না! করবই না কল-টল! শুভ রাত্রি, স্যার!
  
 কোনও টেক্সট যেন না আসে এরপর! এলে খুব খারাপ হবে! সকালে ছাড়া আজ রাতে আমার কোনও টেক্সট লাগবে না। কারও দয়া আমার চাই না চাই না চাই না!
  
 আর কোনও এক্সকিউজও লাগবে না! মনভোলানো এক্সকিউজ ওসব! আমি বুঝি সবই! সব কিছুই ঠিক আছে, আমি খুব ভালো আছি!
  
 কাল থেকে আমি আর কারও জন্য ওয়েট করব না। কারও যখন কিছু যায় না এসে, তখন আমার তো এত কিছুর দরকার নেই!
  
 শুভ রাত্রি, শুভ রাত্রি এবং শুভ রাত্রি!
  
 আসছি আমি! টা টা...
  
 টেক্সট তো ঠিকই পাঠাবেন। সেটা হয়তো রাত তিনটেয়! তো স্যার, টেক্সটটা কিছুক্ষণ আগে দিলে আমার অনেক উপকার হতো আরকি! দেন, সব ঠিকই দেন, কিন্তু জল ঘোলা না করে কিছু করতে পারেন না আপনি! বুঝলেন, স্যার? এটাই হচ্ছে সমস্যা!
  
 যা-ই হোক, যা ভাল্লাগে করো গিয়ে! আমার কী? আসছি... ফাইনালি...শুভ রাত্রি!
  
 ঘুমোতে যাবার আগে টেক্সট দেবার কোনও প্রয়োজন নেই তোমার। তোমার সময়মতো তুমি ঘুমিয়ে পোড়ো।
  
 আর লিখো, মন দিয়ে লিখো! কিছু বলবে কি আদৌ? না বললে বলে দাও। আমি যাব, আমাকে যেতে হবে।
  
 আরে বাবা, হ্যাঁ বা না লিখেও তো একটা টেক্সট পাঠানো যায়! কী একটা মানুষ, অনলাইনে আছে, অথচ মেসেজ সিনই করে না!
  
 বলবে না কিছু? তুমি কী অদ্ভুত একটা মানুষ, তাই না? কবিতা লেখার সময় তো কালো মেয়ের দুঃখও ঠিকই বোঝো, অথচ আমি একটা শ্যামলা মেয়ে, দেখতেও ভালোই সুইট, তা-ও আমার দুঃখটা বোঝার চেষ্টা পর্যন্ত করো না কখনও! কবিতায় কালো মেয়ে বোঝো, অথচ বাস্তবে ফরসা মেয়ে খোঁজো! আমি কি কিছু বুঝি না ভেবেছ? হুহ্‌!!
  
 আমাকে বোঝা তো দূরস্থ, আন্দাজও করতে পারলে না আজ পর্যন্ত! তোমার ওই লেখার খাতাটাই যেন এখন সব থেকে...হ্যাঁ, সব থেকে বড়ো নাট্যমঞ্চ আমার কাছে!
   
Content Protection by DMCA.com