আচ্ছা, ধরো, কোনও এক জোছনাঝরা সন্ধেবেলায় শুনতে পেলে, আমি আর বেঁচে নেই! তুমি কী করবে তখন? তুমি কি একটি বার আমায় দেখতে চেয়ে হন্যে হয়ে ছুটে আসবে আমার সে-দরজায়, যে-দরজায় তুমি আর ফিরতে চাওনি কখনও ভুলেও? ধরো, আমি আর সত্যিই নেই! যে-কথা কখনও তুমি চাওনি শুনতেই, যে-কথা শোনার সময় কখনও হয়ইনি তোমার, সে-কথা তখন শুনতে চেয়ে খুব মনস্তাপে জ্বলে পুড়ে খুব হবে ছারখার? ধরো, সত্যি সত্যিই মরে গেলাম! পূর্ণিমার কোনও এক তারাজ্বলা রাতে যে-ছাদে গিয়ে দুজন মিলে চাঁদটি দেখার কথা দিয়েও রাখোনি তুমি, সে-ছাদের রেলিং ধরে আঁধারের বুকে মাথা ঠুকে ঠুকে তুমি কি হাউমাউ করে ডুকরে তখন কেঁদে উঠবে? ধরো, সত্যিই আমি আর বেঁচে নেই! যে গোপন ব্যথাটির কথা কখনওই তুমি জানতে চাওনি, যে চোখের জলের কারণ তুমি কখনও পারোইনি বুঝতে, ওই ব্যথাগুলোর ধিক্কারে কি তুমিও তখন হাজারটি রাত নির্ঘুম থেকে দেবে খেসারত? আমার না-হয়ে-ওঠা একটা গোটা সংসার, পূরণ-না-হওয়া কিছু ছোটো আবদার, কিংবা তোমার হাতে হাতটি রেখে হাঁটতে না পারার সব আক্ষেপ তোমার মধ্যরাতের ঘুমভাঙার কারণ হয়ে যাবেই তখন? সেদিন তোমার বুঝি খুব আফসোস হবে--- সময় থাকতে আরও একটু ভালো বাসলে না কেন, শব্দহীনতার শব্দগুলো পড়তে কেন পারলে না আগে, সাতইঞ্চি বুকের পাঁজরে সাতসমুদ্র ব্যথার মজুত কেন দেখতে পেলে না, ---এসব ভেবে? বলো? খুব কি তোমার পুড়বে না মন যতটা পুড়ে হয় অঙ্গার মরদেহ চিতায়? একটি বার, মাত্র একটি বার তোমার ভালোবাসার নিশ্চয়তা পেলে শত শত বার মরে যেতে পারি বিনা কুণ্ঠায়, হাসিমুখেই!