কাউকে ভালোবাসলে তীব্রভাবে ভালোবাসাই উচিত। তীব্র ভালোবাসায় একধরনের কঠিন নেশা আছে, জাদুর মতো একটা কারিশমা আছে, মায়ের আঁচলের ছায়াঘেরা মুঠোয় মুঠোয় শান্তি আছে। যাকে ভালোবাসবেন, তার চোখের দিকে তাকালেও সমুদ্রে ডুব দেবার অসীম আনন্দ পাবেন, তার কণ্ঠস্বর শুনলেও গান শোনার মতন সুখ সুখ লাগবে, তার একটিমাত্র টেক্সট কিংবা মেসেজ পেলেও কবিতাপাঠের শান্তি মিলবে। তীব্র ভালোবাসা আফিমের মতন একটা নেশা। প্রিয় মানুষটির খলখল হাসি ঝরনার জলের মতন কানে সুরতাল তুলবে, তার বলা ভুলভাল কথাগুলোও মহাকাব্যের পঙ্ক্তির মতন অতুলনীয় লাগবে। কাউকে তীব্রভাবে ভালোবাসায় মধুর যন্ত্রণাও আছে। তার সামান্য মন-খারাপও কালো মেঘের মতন নিজের পৃথিবীটা নিকষ কালো করে দিতে পারে। তার সামান্য দূরে সরে যাওয়াও মনে হবে যেন কত হাজার-কোটি মাইল দূরত্ব এসে গেছে হঠাৎ! মানুষটা একটু অভিমান করলেও মনে হবে, এই বুঝি পৃথিবী ভেসে যাবে বিষাদে… তবুও কাউকে ভালোবাসলে তীব্রভাবেই বাসা উচিত। যে কখনও তীব্রভাবে কাউকে ভালোবাসেনি, সে কী করে বুঝবে…স্বর্গের সুধা কেমন হয়? যে কখনও বিরহে পোড়েনি, সে কী করে বুঝবে…তীব্র দহনে কতটুক যন্ত্রণা হয়? বাঁচতে হলে যন্ত্রণার স্বাদ বোঝারও দরকার আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে নিখুঁত ও সুন্দরতম বিষয় হলো ভালোবাসা। কাউকে একবার ভালোবেসেই দেখুন। দেখবেন, নদীর স্বচ্ছ জলের মতন আপনার হৃদয়টাও কত নির্মল হয়ে যায়। ভালোবাসলে মানুষ বড়োসড়ো অনেক দুঃখও অনায়াসে ভুলে যায়। তখন বুকের ভেতর শক্ত করে চেপে থাকা রাশি রাশি প্রকাণ্ড দুঃখের ওজনকেও তুলার মতন হালকা লাগবে, চোখের গভীরে জমিয়ে রাখা জলের বড়ো বড়ো ফোঁটাকেও সদ্যফোটা নীলপদ্মের মতন বড্ড আদরের মনে হবে। এ পৃথিবীর সবচাইতে বড়ো দুর্ভাগা সে-ই, যে কাউকে ভালোবাসতেই পারে না। ভালোবাসতে না পারলে মানুষ ক্রমেই নৈরাশ্যে ডুবে যায়।