১.
: কীসে মুক্তি?
: আসক্তিত্যাগে।
: মদ, যৌনতা, টাকা...এসবের আসক্তি?
: এসব তো আসক্তি নয়, সাময়িক কিছু মোহ। মূল আসক্তি হচ্ছে প্রাণের, বেঁচে থাকার আসক্তি। এই আসক্তিই জয় করতে হবে।
: তাহলে কি আসক্তি ত্যাগ করতে মরে যেতে হবে?
: না। মৃতের মতো নির্মোহ হয়ে বেঁচে থাকা শিখতে হবে।
২.
: গভীর রাতে কেন জেগে থাকেন আপনি?
: জীবনের কথা শুনতে হলে দিনে জেগে থাকো, আর জীবনের কথা অন্তরে উপলব্ধি করতে হলে রাতে জেগে থাকো।
৩.
: আচ্ছা, আপনার কি কখনও মনে হয় যে, সব মুনি-ঋষি, সাধক, জ্ঞানীজনকে লোকে এতকাল ধরে মনে রেখেছে...আপনি তাঁদের মতন বড়ো মাপের কিছু হতে পারবেন?
: যাঁরা বিগত হয়ে গেছেন, তাদের নিয়ে ভাবনা অহেতুক। আমি বেঁচে আছি, তাই কেবল আমিই বাস্তব, আমিই সত্য।
৪.
: প্রার্থনা কি সত্যিই মানুষকে দিয়ে বিশাল বিশাল কাজ করিয়ে নেয়?
: না। প্রার্থনা কেবলই কোনো কাজ করতে পারার সাহস তৈরি করে দেয়।
৫.
: প্রকৃত ভালোবাসা মানে কী?
: স্থিরতা। এতটাই স্থিরতা যে, মনে হবে, ওটা ভালোবাসা হতেই পারে না, ওটা সাধনা।
৬.
: ভালোবাসার মানুষ প্রতারণা করেছে, আমি এখন কীভাবে প্রতিশোধ নেব?
: প্রথমে নিজেকে শাস্তি দেবে; ভাববে, তোমার ভালোবাসায় কমতি ছিল বিধায় সে অন্য কারুর দ্বারস্থ হয়েছে। আর প্রতিশোধ হিসেবে তাকে দ্বিগুণ ভালোবাসবে, তবে সব ধরনের সংযোগ ও সংস্পর্শের বাইরে থেকে।
৭.
: আমার সন্তানের জন্য আমি কী কী রেখে যাব, যেন আমার মৃত্যুর পর ওকে কষ্ট করতে না হয়?
: কিছু কষ্ট আর যন্ত্রণা রেখে যাও। কষ্টের কোনো উত্তরাধিকারী থাকে না, তাই ওগুলো ভাগ হবার ভয়ও তার মাথায় চেপে বসবে না।
৮.
: আমি নিজের মানুষটাকে পেতে কতক্ষণ অপেক্ষা করব?
: সময়কে জিজ্ঞেস করো যে, অপেক্ষার পর তাকে পাবে, না কি নিজেই তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
৯.
: স্বাধীনতা চাই।
: তোমার অধীনস্থদের স্বাধীনতা দাও দেখি আগে। তারপর বুঝব, তুমি কতটা স্বাধীনতা পাবার যোগ্য।
১০.
: আপনি লোকেদের বেশিরভাগ প্রশ্নের জবাব দেন, আর বাকিগুলোর জবাবে চুপ করে থাকেন কেন?
: সেগুলোরই জবাব দিই, যেগুলো তারা শুনতে চায়...আর ওগুলো থাকে মিথ্যা।
: সত্যগুলো না বলে চুপ করে থাকেন কেন!?
: আমি যদি বলি, ও পৃথিবীতে যার জন্যই যা করছে, সবই নিরর্থক, কাউকেই ও কখনও খুশি করতে পারবে না, তখন কী হবে?
আমি নিশ্চয়ই বলতে পারি না, ওর জন্মদাত্রী মাকেই ও অভাবের দিনে চিনতে পারবে না কিংবা চিনতে পারবে না ওর সেই ছোট্ট মেয়েটিকে, যে বাবা বেঁচে থাকতেই সম্পত্তিভাগের জন্য অস্থির হয়ে পড়বে।
কী করে বলব যে, ভালোবাসার কসম-খাওয়া ওর প্রেমিকাই সময়মতো অন্য কারুর হাত ধরে ফেলবে; সমাজে ভালো অবস্থান তৈরি করতে না পারলে নিজের বাবাই ওর পরিচয় দেবে না কোথাও।
এসবের চেয়ে মিথ্যে বলাই কি ভালো নয়?