একটা বিল্ডিং। আপনি এটাকে সামনে থেকে দেখলে মনে হবে, বিল্ডিংটা এমন; পেছন থেকে দেখলে মনে হবে, বিল্ডিংটা অমন। বামপাশ থেকে একরকম, ডানপাশ থেকে অন্যরকম। ওপর থেকে ভিউ তো একদমই আলাদা রকমের। বিভিন্ন দিক থেকে বিল্ডিংয়ের ভিউ ভিন্ন ভিন্ন মনে হবে; এমনকী একই বিল্ডিংকেই ভিন্ন ভিন্ন মনে হতে পারে—অথচ বিল্ডিং কিন্তু একটাই। আপনার দেখার ধরন বা অবস্থানের ভিন্নতার কারণেই আপনার চোখে একেকটা বিল্ডিং তৈরি হয়ে গেছে।
বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠবেন? সিঁড়ি ভেঙে উঠুন, কিংবা লিফটে চেপেই উঠুন, ছাদ একটাই। বলতে পারেন, “লিফটে ওঠাই তো সুবিধাজনক।” আপনার কথা পুরোপুরি ঠিক। লিফটে আরাম বেশি বলেই জায়গা কম। আর জায়গা কম বলেই লিফটের লোকজন চাইলেও লোক ডেকে ডেকে দল ভারী করতে পারে না। দল ভারী করার জন্য ডাকাডাকি করার কাজটি করতে পারে কেবলই সিঁড়ির লোকজন। সিঁড়িতে আরাম কম বলেই জায়গা বেশি। . . . যেখানে অবস্থান করলে আরামে ঘুমোনো যায়, সেখানকার লোকজনের পক্ষে ডাকাডাকি-চেঁচামেচি করে অন্যদের আরামের ঘুম হারাম করা সম্ভব নয়। মেডিক্যাল সায়েন্সও বলে, ঘুমের সমস্যা হলেই মানুষ চেঁচায় বেশি।
আবার বলতে পারেন, এখানে আরও কথা আছে। দখিনা হাওয়া যে-দিক আসে, সেই দিকটাই তো সেরা—বিল্ডিং যতই অভিন্ন হোক না কেন। দখিনা হাওয়া তো সবাই পছন্দ করে, কিন্তু ওই দিকটা কয়জনেরই-বা ভাগ্যে জোটে! বিল্ডিংয়ের দখিনা হাওয়ামুখী ঘরগুলো “দেইখ্যা দেইখ্যা লন, বাইছা বাইছা লন; একদাম দশ টাকা দশ টাকা দশ টাকা…” স্টাইলে লোকের কাছে ধরনা দিয়ে, মন চাইলেও বিক্রি করা যায় না। ভালো জিনিস গেলানোর জন্য লোকের হাতেপায়ে ধরতে হয় না, বরং ভালো জিনিস গেলার জন্যই লোকে হাতেপায়ে ধরে।
তাই আসুন, একই বিল্ডিংয়ের ভিন্ন ভিন্ন ঘরে ভালো প্রতিবেশী হয়ে ভালোভাবে বাঁচি।