প্রেমে পড়তে তোমার ভয় করে খুব, তাই না, বলো? শুধু মনে হয়, ভালো যদি বেসেই ফেলি, তবে ওই পথের বাঁকে হোঁচটটা যে খাবই খাব, মনটা তাতেও থাকবে তো ঠিক? উঠে আবার আগের মতো খুব সহজে যাবে তো ছোটা? আচ্ছা, ওকে যদি বিয়েই করি? তখন যদি আছাড় মারি? যদি ছুড়ে ফেলে দিই? যদি কাছে এলে ধাক্কা মারি? যদি চিমটি মেরে অনেক কাঁদাই? যদি হই কখনও অচিনমানুষ? পারবে তো সে সামলে নিতে? না কি ছুড়ছে শুধুই ফাঁকাবুলি? ফেলছে বলে ইচ্ছেমতোই… বলে ফেলতে তো আর ট্যাক্স লাগে না, কৈফিয়তও চাইছি না তো! থামাচ্ছি না, বকছিও না, ছুড়ছি তো না চোখের শাসন… তাই সে যাচ্ছে বলেই যা-ই কিছু আসছে মনে! ভাবছ নাকি, এই মেয়েটা কেমন যেন! ঠাস্ করেই বলে ফেলল, ‘ভালোবাসি!’ ‘আমিও বাসি!’...সেরেছে রে! মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল! উফফ্ আমি এমন গাধার গাধা! এখন উপায়? বলে ফেললাম, ফিরি কী করে? যদি ভালোবাসা সে না বোঝে কিছুই? যদি না বোঝে আমায় আমারই মতো? যদি আমায় বেঁধে ফেলবার চেষ্টা করে? যদি আমার বইপত্তর ছুড়ে মারে? যদি আমার কবিতা পড়ে ঠাট্টা করে? যদি আমায় ডাকে হোঁতকা-মোটা? যদি ভালোও বাসে, আবার কাঁদায়ও খুব? এই ছেলেটা! তোমার বুঝি এসব ভেবেই পেরেশানি? না কি মন বলছে এ-ও… কত মেয়েই ঘুরছে পিছে, তাকাচ্ছি না… এবার নাহয় তাকাই হেসে! আচ্ছা, ও সামনে এলে তখন যদি পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে? ওকে দেখার পরে যদি কোনও টান না আসে? মন যদি সত্যি সত্যি বেঁকেই বসে? ইয়ে বলছিলাম কী, যদি ওকে দেখতে লাগে বোনের মতো? কী হবেটা তখন? আদর দিলে বাঁদর নাকি মাথায় ওঠে! ধরো, ওকে জায়গা দিলাম। তখন যদি বাঁদর হয়ে মাথায় ওঠে? ঘরের ঢোকার আগে কত কত মিষ্টিকথা… সে তো সবাই বলে! ধরো, ঢুকতে দিলাম! তখন যদি লাফায়, ঝাঁপায়? আমায় দিনে রাতে ত্যক্ত করে? এখন নাহয় গলাটা এমন জড়িয়ে ধরে, তখন যদি ভীষণ রেগে গলাটিপে মারতে আসে? এখন নাহয় নরম লাজুক, তখন যদি খেপে গেলে দুম-দুমা-দুম চালায় ঘুসি? যদি একটুখানি চোখ রাঙালেও সাথে সাথেই কামড়ে ধরে? যদি প্রেম না ছুড়ে তার বদলে ছুড়ে মারে পেপারওয়েট? তখন যদি মনে আসে সারাক্ষণই… এখন আমি কোথায় পালাই! কোথায় পালাই! না রে বাবা! ভালোই আছি! ভিক্ষে চাইলে দেখবে সবাই, কুকুর নিয়ে কেমন নাচি! বিয়ে করতে বলুক...শালা! আমিও কানে দেবোই তালা! বিয়ের আগে আদর আদর! বিয়ের পরে বাঁদর বাঁদর! ওওও...রে বাবা, কী দরকার, বেঁচে তো আছি! খাটে কেন আনতেই হবে কুমির-মামি?