আজকাল আমার ভীষণ ক্লান্ত লাগে, বড্ড জলদিই হাঁপিয়ে উঠি!
কৃষ্ণচূড়ার বিশ্বস্ত রংটাও এখন আমার মনকে পালটে আর দেয় না।
আচ্ছা, ইদানীং সবারই কি মনটা এমন খারাপ থাকে আমারই মতন?
আমার মতন এমন ভরদুপুরে কাঁদে ওরাও?
বুকের মধ্যে যখন অনেক ব্যথা জমে যায়,
সেই ক্ষতে একটু প্রলেপ মাখানোর একটিও জায়গা পায় না যখন,
তখন সবাই বুঝি আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, আর ঠিক এমনি করেই হাসে?
অমন খিলখিল করে কাউকে হাসতে দেখলে আজকাল আমার খুব ভয় হয়।
খুব সম্ভবত, আমি প্রতিটি মানুষের চোখের মধ্যে ঠায় লেপটে-থাকা
রাতের যে হাহাকার এবং দিনের যে যাতনা, তা স্পষ্ট করে অনুভব করতে পারি।
বাঁচতে চাইলে ব্যক্তিগত সমস্ত কান্না ঝেড়ে ফেলতে হয়।
ওরা ঝেড়ে ফেলে কাঁদতে কাঁদতে, আমি ঝেড়ে ফেলি হাসতে হাসতে। ফারাক এটুকই!
কাঁদে না যারা, দুঃখ ওদেরও আছে। হাসে না যারা, সুখ ওদেরও আছে।
ওদের দেখি, ওরা কী সহজেই গোটা জীবনের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার হিসেবটা মিলিয়ে ফেলে!
দেখি আর বিস্মিত হই। ভাবি, আমার তো সেকেন্ডের হিসেবই মেলে না, আর ওদের…
আমি কি তবে উনমানুষ? হবে হয়তো!
হে ঈশ্বর! এই সামান্য ভাগ্যটুকুও দিয়ে আমায় পাঠালে না!
পৃথিবীতে এক দল শুধু কাঁদবে, আর-এক দল বরাবর কাঁদিয়েই যাবে…
এই সত্যটার কারণ খুঁজতে গেলে অবশেষে ভ্রান্তির পথেই হাঁটতে হয়!
যারা ধরতেই পারে না, ঠিক কোন হাসিটা ঠোঁট থেকে আসে, আর কোনটা আসে হৃদয় থেকে,
ওরা আসলে এখনও বড়োই হয়নি!
আমরা মূলত কিছু ছোটো মানুষের সাথে বড়ো হই।
নিজেকে আড়াল করতে করতে আজ আমি আমাকে এতটাই দূরে সরিয়ে রেখেছি যে,
চলতে গেলে নিজের চোখের সামনেই পড়ে যাই!
আমার নিজের চোখদুটো কিংবা নিজেরই অশ্রু…
ওরাও আমাকে একচুলও ছাড় দেয় না!
আমার সমস্ত সুখ, পরিকল্পনা, সৌভাগ্য, এমনকি টুকরো টুকরো হাসিগুলোকেও
নিতান্ত বাধ্য হলে হাসতে হাসতেই নিলামে তুলে দেবো,
তবুও এই অশ্রুসমুদ্র বিকিয়ে দেবো না কোনও কিছুরই বিনিময়ে!