আমি শুনেছি, বুকে সন্দেহ চেপে দৌড়ে গিয়েছি, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি; এর পরে, পালিয়ে এসেছি! গিয়ে দেখেছি, অন্য কেউ এসে গেছে, আমার সময় শেষ, অগত্যা শুধুই মুচকি হাসিটুক ছুড়ে দিয়েছি! বাড়ি ফিরতে রাত হয়েছে বলে ভদ্রলোকেরা আমায় ঢুকতে দেয়নি, বের করে দিয়েছে। মা-টা আমার ওদিকে মুখ ফিরিয়েও, গভীর রাতে এসে আমায় ঘরে ফিরিয়ে নিয়েছে। এরপর আর যাইনি কখনও ওই মানুষের কাছে, তার যে এখন অন্য মানুষ আছে! জানতে ভীষণ ইচ্ছে করে, আদরসোহাগ অনেকটা বেশিই বুঝি নতুন বুকের মাঝে? কতদিন চিঠি দিই না! লিখি ঠিকই, পাঠানো হয় না। কোন ঠিকানায় যে পাঠাই! মন খুবই চায়, দেখি; খবরটা নিই, সে কেমন আছে? কোন সাহসে যে শুধাই! আকাশে মেঘ করলে, মেয়েটি নিশ্চয়ই মুড়ি মেখে দেয়! জলপাইয়ের আচারটাও কি সাথে থাকে? না না, মানে বলছিলাম কী, ওসবই তো খেতে লোকটা খুব ভালোবাসত, আমি পুরনো হবার আগে! লোকটা আমায় মেলায় নিয়ে যেত, নাগরদোলায় চড়াত, রেশমিচুড়ি কিনে দিত। এসব জানালে কি ঘরের ওই নতুন মানুষ ভালোবেসে সবটা ঠিকই মেনে নিত? মেয়েটা নিশ্চয়ই ভালো করে রাঁধে, যত্ন করেই গুছিয়ে রাখে আমার এলোমেলো লোকটাকে! তাহলে আমার আর চিন্তা নেই গো, কত সুখ আমার, ভুলে যাবই এবার পুরনো শোকটাকে! মেয়েটা কি তার রোমশ বুকে মাথা রাখে? চোখে কাজল আঁকে? আর ছুটির দিন এলেই বায়না করে সিনেমাদেখার? করবেই তো, ছেড়ে দেবে কেন সে? ছেড়ে কি দিয়েছি তখন আমিও? ওই বোকা লোকটা এখন যে শুধুই ওর একার! লোকটা মন খারাপ হলেই ঘন ঘন চোখের পলক ফেলে, তবু কখনওই তার বিষাদ কাউকে বুঝতে দেয় নাকো, এই যে নতুন মেয়ে! শাড়ি, গয়না আর হেঁশেলই কি সামলাও শুধু? না কি আমার লোকটার মনের খবরও কিছু রাখো? এই যাহ্! লোকটাকে আমার বলে ফেললাম! কেউ শুনতে পেল না তো? শুনলে শুনুক, আমার ভয় কীসের? আজ আর পরোয়া করিই না অত! সারাক্ষণই মানুষটা বেশ চুপচাপই থাকে, কথা সে বরাবরই অল্প বলতে পারে। নতুন মেয়েটা কি বোঝে এসব? না কি বোঝার বদলে অভিমানেই দায়টা সারে? আমি তো জানতাম, লোকটা সিনেমা দেখতে ভীষণ ভালোবাসে! এখনও কি তা-ই আছে? না কি বদলেই গেছে নতুনের অভ্যাসে? এই যে নতুন মেয়ে, শুনছ? তুমি যেমনই হও, চাইনে কিছুই; শুধু আমার মানুষটার খেয়াল রেখো! কথা দিচ্ছি, আমার সমস্ত পুণ্যই তোমার নামে লিখে দেবো, বিধাতার খাতায় কখনও মিলিয়ে দেখো!