- অ্যাই, শুনছ? ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? - উঁহু। - আচ্ছা, একসময় বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে গেলে আমরা যে প্রতিরাতে একসাথে হাঁটতে বেরুতাম, তোমার মনে আছে? - হুঁ। - তুমি আর আমি সিনেমাহলে গিয়ে অনেক সিনেমা দেখতাম তখন। মনে পড়ে? - হুঁ। - আমরা যে একবার পেয়ারাগাছ থেকে পড়ে দুজনেই অনেক ব্যথা পেয়েছিলাম, কত রক্ত বেরিয়েছিলো! হা হা হা! তোমার মনে আছে? মনে তো হয় না, মনে আছে। - হুঁ। - হুঁ মানে? সত্যিই মনে নেই? তাহলে তো এটাও নিশ্চয়ই ভুলে গেছ যে আমি বাড়ির সবার মতকে অগ্রাহ্য করে তোমার হাত ধরে সবকিছু ছেড়েছুড়ে পালিয়ে এসেছিলাম? এমন কত প্রশ্নের উত্তরই তো তুমি দিতে পারবে না আজ! থাক, ঘুমাও। - তুমি যে আমার কাছ থেকে দূরে সরে গেছ, এটা কি তোমার কখনও মনে আসে? - মানে? - তুমি যে আমার মেয়ের মা হবার আগে আমার স্ত্রী হয়েছিলে, আর তারও আগে যে আমার প্রেমিকা ছিলে, এসব মনে আছে? - এগুলো কেমন প্রশ্ন? কেন ভুলে যাব? - পেয়ারাগাছ থেকে পড়ে গিয়ে সেদিন তুমি একাই ব্যথা পেয়েছিলে। আমি শুধু তোমার ব্যথা-পাওয়া আর কান্না দেখে যন্ত্রণায় ছটফট করেছি। ওইদিন আমিও যে ব্যথা পেয়েছিলাম, আমারও যে রক্ত ঝরেছিল, বিশ্বাস করো, ওসব তোমার কথায় আমার আজ মনে পড়ল। ওটা সত্যিই আমার মনে ছিল না। - .......................................................................................... - তুমি সব ছেড়ে এসেছ ঠিকই, আমিও যে সবাইকে ছেড়ে এখানে তোমাকে নিয়ে একাই থেকে যাবার সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম, তুমি কি ভুলে গেছ তা? - .......................................................................................... - তুমি যে রাগ করে প্রায় রাতেই অন্য রুমে শুতে চলে যাও, আমার যে ‘বোবায় ধরা’ অসুখ আছে, আমি যে অন্ধকার ঘরে একা ঘুমাতে পারি না, এটাও তো তুমি ভুলে গেছ, তাই না? - .......................................................................................... - আচ্ছা, তোমার কি মনে আছে, এককালে এই তুমিই আমায় ভীষণ ভালোবাসতে? - .......................................................................................... - ঘুমিয়ে পড়লে? হ্যাঁ, ঘুমাও ঘুমাও! নিশ্চয়ই ভালোবাসার চাইতে ঘুম উত্তম!