প্রিয় নীলা,
আমি জানি, তুমি ভালো নেই। তোমার চোখের তলার কালিই সাক্ষ্য দেয়, কতটা ক্লান্তি নিয়ে বেঁচে আছ তুমি। মুখের ওপর ক্যামেরা ধরলে খুব জোর করে হেসে ফেলতে হয় তোমাকে। ঠোঁটের সব দুঃখ লিপস্টিকে আড়াল করতে করতে ভুলে গেছ, তোমার পাতলা ঠোঁটজোড়া এতদিনে কত ব্যথাই-না শুষে নিয়েছে! যে গভীর চোখে কাজল দিয়ে প্রতিদিন পুরুষ খুন করো, সেই চোখ যে কত অশ্রুশিক্ত, আমি জানি। আমি সব জানি, নীলা।
বাইরে বাইরে যতই শক্তপোক্ত খোলস ধারণ করো না কেন, তোমার ভেতরটা যে কত নরম, আমি জানি। সেই নরম, কোমল স্তর অবধি কাউকে এখনও তুমি পৌঁছতে দাওনি, সেজন্য আমি তোমাকে বাহবা দিই। নিজের সত্যিকারের ভাঁজ কাউকে দেখতে দাওনি বলেই তোমাকে পছন্দের তালিকায় এখনও প্রথমেই রাখতে বাধ্য হই।
এত গভীর কী করে হলে, তুমি? তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে কেন আমার মতো লিখতে-না-পারা মানুষেরও কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে? এত রহস্য কেন তোমার মধ্যে?
আমার তো সব রহস্য ভেদ করে তোমাকে জয় করে নিজরাজ্যে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। আমি জানি, তুমি রাজা চাও না, রাজ্যও চাও না। কিন্তু রাজা আর রাজ্য তো তোমার পায়ে লুটিয়ে পড়তে চায়, নীলা। তোমার এলোমেলো চুলগুলো বুকে কাঁপন ধরালে কোথায় লুকোবো আমি, বলে দাও! আমি জানি, তুমি চিঠির উত্তর দেবে না, হয়তো পড়েও দেখবে না।
সব দিক পরিপাটি করে গুছিয়ে রেখে নিজে কী করে এতটা নির্লিপ্ত জীবন কাটাও, আমি বুঝতে পারি না। কী করে পারলে এতটা পথ পেরোতে? কী করে জয়ী হবার পরও মুকুট অবহেলা করে গেলে দিনের পর দিন?
নীলা, আমার নীলা।
ভালোবাসি তোমায়, বাসব আজীবন।
ইতি,
ভিখিরি এক রাজা