তোমার সাথে আমার হতো দেখা—নদীর ও-পারে।
দেখা করতেম এসে রাত পেরিয়ে বার মঙ্গলে।
বড্ড ভীষণ নদী, কুলোয় না ঠিক।
ভাবতেম, এ নদী হোক-না ছোটো…
রাত দীর্ঘ, যেন ফুরোয় না আর!
হঠাৎ তারপর বললে তুমি,
নদীর পাড়েই যে শহর আমার—
গড়বে বসত, ঘুচবে হতাশ!
আমি বললেম, তবে হোক তা-ই।
কাঁপা কাঁপা উল্লাসে ভাবলেম তাই,
বুঝি সত্যিই ভালোবাসো আমায়—
করলে নাই-বা বুলির বড়াই।
আমি হেসে বেড়াই, ঘুরে দাঁড়াই,
পথে পথে গেয়ে বেড়াই।
ঘাসকে বলি, ঘাটকে বলি…
জানো, আমি তার চোখের মণি!
নইলে কি আর নদীর পাড়ের
স্নিগ্ধ ফুলেল বাড়ি ছেড়ে,
দূরের দালান ভেস্তে দিয়ে
বসত গড়ে এ-পাড়ে নদী?
বলল হাওয়া,
না রে মেয়ে, তুই হোসনে বোকা,
না বুঝে আর খাসনে ধোঁকা।
নদীর পাড়ে বসত গড়া—
তার নিজেরই ইচ্ছে কি অনিচ্ছে,
ও-ছেলে বড়ো একরোখা রে!
তার জেদের গায়ে তুই নেই রে কোথাও!
ইচ্ছে হলেই বলবে ঠিকই,
মেয়ে হাতটা হটাও,
কপালজোরেই আমায় জোটাও,
গুণে নয়, আঃ রে...গা তো খাটাও!
হাওয়া তুই সর্বনাশী, সর্বগ্রাসী;
তুই আর বুঝবি কীসে?
ভালোবাসা…সে এক নিজেই বোকা, ভীষণ রোখা!
নইলে কি আর ক্ষণিক আশায়
স্বপ্ন দিয়ে হৃদয় পোড়ায়?