আজকের চাঁদ দেখেছ?
কেমন আধোআলোয়, নক্ষত্রের মায়া ছেড়ে,
পৃথিবীর গায়ে জ্যোৎস্না ঝরে…
অমন নরম আলোয় শরীর ভেজায়,---
পৃথিবীর কত ভাগ্য, বলো!
চারিদিকে শীতল হাওয়া…কিছু নৈঃশব্দ্য,
রাতের বুকে পুরনো পাপের বুনো প্রায়শ্চিত্ত,
এ কী স্বস্তি! এ কী শান্তি! আহা আহা!
কেন দেখছ না তা?
কল্পনার রাজ্যজুড়ে হাঁটছ যে খুব,
চাঁদকে ছুঁয়ে কেন দিচ্ছ না ডুব?
সত্যি বলো, আমায় ভালোবাস তো?
যদি বলো ‘হ্যাঁ’, আমায় একটা কথা দেবে…
কোনও একদিন, পুরো একটা পূর্ণিমারাত
আমায় দিয়ে দেবে তোমার ব্যস্তসময় থেকে?
সে রাতের ছায়ায় ঘেঁষে, তোমার দুটি হাত ধরে,
হেঁটে যাব ঠায়, বকব প্রলাপ অবিশ্রান্ত…
ঘোরলাগা অমন রাতে দুজন মিলে নিবিড় হব!
ভাবছ বুঝি, এ মেয়েটা কেমন অবুঝ!
সত্যিই কি চেয়ে ফেলেছি অনেক বেশি?
জীবনের অনেক কিছুই আদৌ কি বলো, যায় ফেরানো
মনের মতো, অনেক মূল্য দিয়েও?
ভাবছ, এ আবার কেমন কথা!
তোমার এক একটি অবহেলায় যে কষ্ট পেলাম,
পারবে কি তার মূল্য দিতে?
তোমার হাজার রুক্ষস্বরে আমার সকল ক্লান্তপ্রহর,
গুনে গুনে ফেরত দেবে, অনেক অনেক মূল্য বুঝে?
তোমার নিজের সব প্রয়োজন ফুরিয়ে এলে,
হাতে যেটুকু সময় বাঁচে, সে বাসিসময় প্রতিদিনই
মারছ ছুড়ে মুখের উপর, এঁটোভাতটা যেমনি ছোড়ে,
বেড়াল দেখে! পারবে দিতে তার কোনও দাম?
জীবনটা বড়ো ব্যস্ত কাটে, তাই না, বলো?
যেসব প্রহর ফুরিয়ে গেল এমনি করেই বৃথাকাজে,
এতটুকু তার পেলাম না দাম তোমার কাছে!
ওদিকে দেখি, এক প্রহরের দায় ফুরোতেই,
আর এক প্রহর হামলে পড়ে!
সে নতুন প্রহর…
মুটিয়ে-যাওয়া, কুড়িয়ে-পাওয়া সবটা শ্বাসের হিসেব করে!
বেলাশেষে, এক খোলাখাম, সাথে একটা সাদাপৃষ্ঠা।
ওটুকই, ব্যস্! ধরিয়ে দিয়ে আপদ ভেবে বিদেয় করে!
জীবন ফুরোয়…অথচ কত আধগেলা ক্ষণ
পড়েই থাকে…অদেখাতেই, অচেনাতেই!
দিনের শেষে, সাথে করে নেবার মতো
পড়ে থাকে শুধু বেসুরো এক ভাঙাবেহালা!
কেন অত হিসেব কর? মিলবে আদৌ, হিসেব যত?
সব হিসেবের হিসেব কি হয়?
প্রতিটি রাত্রিশেষে সূর্যটা কি ওঠেই ওঠে?
কখনওবা হয় না মনে, আমি বরং
আমি না হয়ে ওরা হলেই ভালো হতো?
কত দামি জিনিসের আগাগোড়াই দামটা ফাঁকি!
আহা মানুষ! পয়সা দিয়ে কত কী কেনে,
আর সারাজীবনই কিনা সেই অভাবই পোষে!
কী করি, বলো!
হিসেবে আমি বড্ড কাঁচা!
কোনটা দামি, সস্তা কী-বা,
আজও তেমন হলো না বোঝা!
হিসেব আমার থেমেই আছে…
ওখানে এসে। কখনও ভাবি,
ঠিকই তো আছে, আর যা-ই হোক,
চাঁদের আলোয় পেট কি চলে?
তোমারই-বা দোষ কী, বলো!