গভীর রাতে আমার পাশে এ কে?
কেমন পরিচিত নিঃশ্বাসের তাল,
আমার মতোই তো পাশ ফিরে শুয়ে,
তীক্ষ্ণ অথচ অস্পষ্ট এক অবয়ব!
কে সে?
প্রায় সময়ই সে আমার ঘরে ফিরে আসে,
আমার বইয়ের তাক ছুঁয়ে দেখে,
ফ্রিজ খুলে গ্লাস ভরে মদ নেয়,
আরাম করে চেয়ার টেনে বসে…মাতাল হয়!
আমি ঘুরে ঘুরে তার পায়চারি শুনি,
কিছু বুঝি, কিছু আবার সাঁই করে মাথার উপর দিয়ে চলে যায়।
কখনোবা সে আমার মশারি খাটিয়ে দেয়!
অগোছালো ড্রেসিংটেবিল গোছায়!
মিটসেফের চামুচ-বাটির সখ্য ঘাঁটে!
আয়রন ছাড়া পিরান মাপে!
আমার আনাড়ি হাতের পেইন্টিংয়ে…
বলা নেই, কওয়া নেই, জল ছিটিয়ে দেয়!
তার এই আধেক রয়ে যাওয়াতে আমি কখনো আশ্চর্য তো
কখনো চরম বিরক্ত হই;
কখনোবা নিঃসঙ্গতাকে মোক্ষম জবাব দিই!
বহুকালের এই লুকোচুরিতে আজকাল তাকে আমার আপন লাগে,
তাকে আমার ছায়া মনে হয় কিংবা আমিই হয়তো তার ছায়া!
তবুও তাকে আমি কিছুতেই চিনতে পারি না!
তার পাশেই ঘুর ঘুর করি, কিন্তু ছুঁতে পারি না!
তাঁকে এই পেয়ে যাই, আবার পাই না!
ঘাই শাবকের মায়ায় যেমন মা সিংহী আটকে যায়,
আমিও তার মায়ায় তেমনি আটকে যাই, তবুও
ঝাপসা-হয়ে-আসা চোখ কেবল
অনস্তিত্বের দেখা পায়!
চিরকাল দৃষ্টির ওপারেই রয়ে গেল
আমার সকল অস্তিত্ব!