জন্মদিন ও যাপিত জীবন



: হ্যালো!
: বন্ধু, শুভ জন্মদিন! কেমন আছিস?
: ভালো।
: আজ আনন্দে থাকিস, হাসিঠাট্টার মধ্যে থাকিস!
: হাসিঠাট্টা!!
: তুই জানিস, তুই সাধারণ মানুষ না! মানে, আনন্দে থাকিস। জীবন তো একটাই! তুই গুরু-মানুষ, তোকে আর কী বলব!
: না, আজ অন্য দশটা দিনের মতোই রে! জন্মদিন নিয়ে উচ্ছ্বাস করা এখন আলাদা কিছু মনে হয় না তেমন! তোর বাড়িতে সব ভালো?
: মন্দটা ওই, মনের মতো সন্তান না হওয়ার কষ্ট তাদের আছে! এই আর কি! তুই তো বোধ হয় তোর বাবা-মায়ের মনের মতো হতে পারছিস, না?
: আমি?
: হ্যাঁ!
: আমি...!! বাবার প্রত্যাশা কম, মায়ের মনের মতো তো সেইদিনই হতে পারছি, যেদিন মায়ের কথায় বিয়ে করছি! খুশি মা!
: হা হা হা! লাঞ্চ করেছিস?
: না, আমার ক্ষুধা নাই!
: শরীরটা ভালো আছে?
: শরীর আছে…আছে ভালোই! তোর কি ঢাকায় বেশি থাকা হয়? আমার বাসায় আসবি?
: তুই ঢাকায় এলেই ফোন করিস, যাব!
আচ্ছা বন্ধু, এবার একটা কথা! এটাকে কী সংবাদ বলব, জানি না! তোর ভক্তকূলের মধ্যে, তুই একবার একটা মেয়ের ব্যাপারে বলেছিলি। বলেছিলি, "এই মেয়েটাকে বিয়ে করতে পারিস!" মনে আছে?
: কী ব্যাপারে? ওহ! হ্যাঁ, রংপুরে বাড়ি?
: না, ঠাকুরগাঁও!
: তুই তো আমাকে বলেছিলি, "তুই ম্যারেজ-ম্যাটেরিয়াল না!" আমিও তেমন‌ই!
: বিয়ে আমি করতাম না। তুই আমার ভাই হিসেবে বল তো, ও কেমন হবে? ওকে কি বিয়ে করা যায়?
: আমার কাছে সরল মনে হয়েছে! তবু তুই কথা বলে দেখ।
: কথা একটু বলেছি। কথা যে বলি নাই, তা নয়! কিন্তু মানুষ চিনতে ভুল করার ট্যালেন্ট তো আমার ভীষণ! আমি খুব চালাক প্রকৃতির মানুষ না, হতেও চাই না! কারণ, চালাক হতে গেলে নিচ হতে হয়! নিচ হয়ে বাঁচতে ভালো লাগে না!
: পারলে মসজিদে গিয়ে বিয়ে করে ফেল! কোনো আনুষ্ঠানিকতার দরকার নেই! বিয়েকে আমরা বানিয়ে ফেলেছি উটকো লোকজনের মহাসমাগম। কোনো মানে নেই রে! আমি যে ভুলটা করছি, তা আমার কাছের মানুষদের করতে বারণ করি। বাকিটা তোর ব্যক্তিগত ব্যাপার!
ও যদি তোকে তোর মতো করে মেনে নেয়, তাহলে বিয়ে করে ফেল!
: আচ্ছা, তাহলে আমি জানাব! তোর আইডিটা খুঁজে পাচ্ছি না!
: যে যা শুনতে চায়, তাঁকে তা শুনিয়ে দাও। যে যা বুঝতে চাইছে, তাদের তা বুঝিয়ে সরে যাও! সরে গেলাম আর কি! হা হা হা...
: লেখালেখি কী করছিস?
: না, তেমন কিছু না! মাঝেমধ্যে কিছু লিখলে ওভাবে করে রেখে দিই।
: বই লিখছিস?
: না! এসবের মধ্যে গেলে প্রত্যাশা তৈরি হবে! আমি প্রত্যাশা থেকে নিজেকে সরিয়ে আনব ধীরে ধীরে, যত বয়স বাড়বে! আজ একটা কাজ করে ফেলেছি। কোনো কেক কাটা হয়নি আজ ইচ্ছে করেই! এভাবে করলে, নিজের সাথে বোঝাপড়াটা ভালো হবে হয়তো আমার জন্য!
: তুই যত যত্নশীল তোর লেখাতে, তোর লেখায় যে-অসাধারণত্ব, এটা অন্যরকম!
: এখানে অসাধারণের কিছু নেই! লিখলেই হলো! নিজেকে ভালো রাখার জন্য! পৃথিবীতে এমন অনেক মাস্টারপিস সৃষ্টি হয়, যেগুলো পৃথিবীর কার‌ও জানার কথাই না। নিজের ভেতরের মানুষটাকে খুশি রাখাতেই আনন্দ!
: সত্যি! লিখতে ভালো লাগলে, লিখে যাওয়াই শ্রেয়! বন্ধু, ভালো থাকিস! কোনো সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিস না তো?
: সমস্যা তো থাকবেই! যদি সমাধান করতে পারি, তাহলে সেটা কোনো সমস্যাই ছিল না! আর যদি সমাধান করতে না পারি, সেটা আমার নিয়তি ছিল!
: খুব সুন্দর করে বলেছিস!
: এর বাইরে আমি কিছু করতে পারি না! আমার সামর্থ্য কম!
: আমরা তো বন্ধু! আমি এখান থেকে শিখলাম! অসাধারণ বলেছিস! বন্ধু, ভালো থাকিস! দেখা হবে! "হ্যাপি বার্থডে এগেইন!"
Content Protection by DMCA.com