আপনার একটা নতুন নাম দেয়া হবে। তালিয়া বাজান! তালিইইই…… নামটা হল—তুলতুল। কেমন হইসে? আদুরে না?
তুলতুল! প্লিজ তুলতুল! মুয়াফি তুলতুল! সব অভিশাপ ফিরায়ে নিলাম, তুলতুল! এরঅঅঅমমম্ করে না, তুলতুল! এরকম করলে লোকে নিষ্ঠুর বলবে, তুলতুল! মরার আগে একবার কথা বলতে চাই, তুলতুল! চলেই তো যাব, তুলতুল! কথাই তো বলতে চাই, তুলতুল! আর কিছু তো না, তুলতুল! কথা দিচ্ছি, আর জ্বালাব না, তুলতুল! আপনার চরিত্রে কোনও কলঙ্কের দাগ পড়বে না, তুলতুল! আমি আর হিংসা করব না, তুলতুল! আমার বিয়ের আগ পর্যন্ত শুধু আপনাকেই ভাবব, তুলতুল! কখনও আর ফেসবুকে পচা মেসেজ করব না, তুলতুল! সুন্দরী+ ইশমাট+ হিন্দু+ বানানে ভুল করে না+ ইংলিশ পারে+ ওই দেখা যায় তালগাছ টাইপের কবিতা পড়ে+ ভাল তেল মারতে পারে+ হাইট ভাল+ বাসা রাজশাহীতে+ গাইতে পারে+ নাচতে পারে+ আবৃত্তি পারে+ রান্না করতে পারে+ সবকিছুতেই ‘হ্যাঁ’ বলে এমন পাত্রী খুঁজে দিব, তুলতুল! প্লিজ তুলতুল, প্লিজ প্লিজ প্লিজ! এখন তো রাজি হও, তুলতুল! আমি কিন্তু কান্তেসি, তুলতুল! এই দুই চোখের দিকে তাকিয়ে দেখো—অরিজিনাল চোখের পানি, তুলতুল! আর কখনও কোনও গিফট চাইব না, তুলতুল! আমি এখন থেকে লক্ষ্মী হয়ে খালি পড়াশোনা করব, তুলতুল! এ জীবনে আর কোনওদিনও কারও সাথে ফাজলামো করব না, তুলতুল! তোমার সাথে গল্প করার জন্য মডেমে টাকা ভরতে-ভরতে আমার বেতনের সব টাকা শেষ হয়ে যাবে, তুলতুল! আমি কী করব বলে দাও না, তুলতুল! না বললে কীকরে হবে, তুলতুল! আমার মোবাইল ফোনে কোনও নেটওয়ার্ক নাই, তুলতুল! আমার কাউকেই লাগবে না, তুলতুল! আমি শুধু তুলতুলকেই চিনি, তুলতুল! তুমি কিছু বলো, তুলতুল! কিছু না বললে আমি বুঝব কীকরে, তুলতুল! তুলতুল, প্লিজ তুলতুল! আর কত, তুলতুল! আর কক্ষনো দালালি করব না, তুলতুল! আর কখনও মাতব্বরিও করব না, তুলতুল! তোমার জন্য প্রতিদিন ব্রেকফাস্ট না করে হাঁ করে বসে থাকব, তুলতুল! আমি বোধহয় সত্যিই আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি, তুলতুল! কিন্তু আল্লাহ্র কসম খেয়ে বলছি, আপনি একবার মুখ ফুটে বললেই আপনাকে নিয়ে ভাবাভাবি চিরজন্মের জন্য বাদ দিয়ে দিব, তুলতুল! আমার সৃষ্টিকর্তাকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমার কোনও উদ্দেশ্য নাই, তুলতুল! আমি জাস্ট আমার মনে যা থাকে, বলে ফেলি, তুলতুল! আর জ্বালাব না, তুলতুল! আমার খুব কান্না পায়, তুলতুল! তুমি একটা খারাপ, তুলতুল! এখন তো চাকরি পাইসি, তুলতুল! এখন আমি একা একটু সুখী হয়ে থাকতে চাই, তুলতুল! তুমি কেন কিছু বোঝো না, তুলতুল! তুমি কেন এমন করে আমাকে জ্বালাচ্ছ, তুলতুল! আমি কি বেশি কিছু চাইসিলাম, তুলতুল! তোমাকে জ্বালানোর জন্য আই অ্যাম সরি, তুলতুল! আমার মেইলগুলা কি পড়, তুলতুল! তোমার টাইম নষ্ট করার জন্য সরি, তুলতুল! আমার কাছে অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও ভাববিহীন হয়ে থাকা যায় না, তুলতুল! কী হয় ওই ইগোফিগোকে একটু দূরে রাখলে, তুলতুল! আচ্ছা, তোমার যা করতে ইচ্ছা করে, তা-ই করো, তুলতুল! আচ্ছা, আই লাভ ইউ, তুলতুল! আর এতো জটিল হয়ো না, তুলতুল! জীবনটাকে সহজভাবে আর হাল্কাভাবে নিতে শিখো, তুলতুল! আর যা দিতে পারবে না, সেটার মূলা দেখানো বন্ধ করো, তুলতুল! আর আমি তোমাকে খুব মিস করি, তুলতুল! তুমি কেন আমাকে নিয়ে একটুও ভাবো না, তুলতুল! আমি কি তোমার যোগ্য নই, তুলতুল! আমি কী করলে তুমি আমাকে তোমার জীবনে একটু স্থান দেবে, তুলতুল! অন্য মেয়েদের নিয়ে ভাবা বন্ধ করো, তুলতুল! আমি বাদে আর কোনও মেয়েকে সময় দিয়ো না, তুলতুল! তুমি সত্যিসত্যি অনেক হার্ড, তুলতুল! এই জন্যই তোমার আরও অনেক উন্নতি হবে, তুলতুল! সবাই পারে না এতটা শক্ত হতে, তুলতুল! তুমি কেন পারো, কীভাবে পারো, একটু শিখায়ে দিবা, তুলতুল! তোমাকে আমি তুমি করে বলে ফেলসি, তুলতুল! আমাকে মাফ করে দিয়ো, তুলতুল! সরি তুলতুল!
আব্বাররর্ বান্দা হাজির! এসেই গেলাম নিঃসংকোচে! কিছু কথা ছিল যে! সময় কম থাকলে, না পড়লেও হবে গো! তেমন কিছু না! এই আজকাল একটা ঘটনা ঘটসে, সেটাই লিখসি আরকি! অতো জরুরি নাগো! এমনিতেই……
তুলতুল বেটা, আসসালামুয়ালাইকুম। জানি, ভাল আছেন। পচারা ভালই থাকে।
আপনি কত খারাপ দেখেন, আমাকে বৈশাখী মেলায় শেষ পর্যন্ত নিয়ে গেলেনই না। কী ভাবসিলেন? আপনি ঘুরে বেড়াবেন আর আমি বসেবসে ডিম পাড়ব? এহহহ্! অত্তো সোজ্জা নাআআআ! আমিও গেসিলাম। হুহ্! আমার সাথে আরও তিনজন ছিল অবশ্য। ঢাকার মেলা রাজশাহীর মেলার চাইতে কত্ত সুন্দর!
আমি আপনাকে বলসিলাম, ঘুঘু হোক বা কবুতর বা মুরগি, যেকোনওটার বাচ্চা আনতে আমার জন্য। এমনকি মোরগের হলেও কোনও অসুবিধা ছিল না! যদি কিনতে হত আর পয়সাতে না কুলাত তো বলসিলাম যে শিয়ালের বাচ্চাই আইনেন। টাকাও খরচ হত না, এদের ধরতে গিয়ে এদের পিছে দৌড়ায়ে-দৌড়ায়ে একটু ভুঁড়িটাও ফ্রিতে কমে যেত! কিছুই আনেন নাই! লেখকেরা যে এত খারাপ হয় তা তো জানা ছিল না! লেখকদের মন নাকি বড় হয়, আর আপনার? আমাদের বাসার পাশে বৃষ্টির পানি জমে যে গর্তটা হইসে, ওইটাও তো আপনার মনের চাইতে বড়! আমার দুই চক্ষের পানিতে আপ্নের মনে কুনুই গর্ত হয় না ক্যান? নাকি আপ্নের মন আগে থেকেই ফুটাফুটা জালিজালি, তাই পানি সব বের হয়ে যায়?
যাকগা! মনের দুক্কে আমি মেলা থেকে ৪টা পাখির বাচ্চা কিনসি। হায়রে সুন্দররররর!!! বিশ্বাস করেন, একদম গুটুসগাটুস! দাম মাত্র ১০ টাকা করে! আপনাকে ছবি দিয়ে দিচ্ছি। মোবাইল থেকে তুলসি, সুন্দর হইসে। দেখবেন, প্রথম দুইটাতে ওরা সেই পোজ মারসে আর পরেরটায় ওরা কুটকুট করে গল্প করতেসিল, তুলে ফেলসি। আসলে, গল্প তো আর করে না, করে শুধু ঝগড়া। আর খালি গীবত করে বেড়ায়। আমি ওদেরকে আপনার নিষ্ঠুরতার গল্প একটু করসি তো ওদের কী রাআআআগ!! বাবারে! আমি ভয় পেয়ে গেসিলাম। রাগে গজগজ করতেসিল, কিন্তু শব্দ হচ্ছিল কিঁচকিঁচকিঁচ। আর বলবেন না, তুলতুল, ওদের বাসায় এনে কী যে বিপদে পড়সি! সবসময় কিচির-মিচির-মিচির-কিচির!!! উফফ্! আমার কান দুইটা এক্কেরে শেষ করে দিল বদগুলা! আমাকে রাতের বেলা ঘুমাতেই দেয় না! মাঝেমাঝে মনে হয়, কাঠের বাক্সে বন্দি করে রেখে দিই। পারি নাগো! মায়া লাগে! মায়া—বড়ই নাছোড়বান্দা বদ জিনিস! এই যে আমি লিখতেসি না? ওরা ঘুসুরঘুসুর করতেসে, আমি একটুএকটু বুঝতে পারতেসি। শোনেন কী বলসে, শানায়া খালামনি বোকার মতন কেন যে……. কিঁচকিঁচকিঁচ…….দুনিয়ায় আর কাউকে…….কিঁচকিঁচকিঁচ…….তুলতুল কাকা তো…….মানুষ অ্যাত্ত খারাপ…….কিঁচকিঁচচ্……. খালামনি তো মজে আছে…….কিঁচকিঁচিরকিঁচকিঁচ…….কাকা তো…….কিঁচ্চিচি…….পড়বেই না, তার আবার…….কিঁচিঁকিঁচিঁ…….ধুউউররর্! এত কষ্ট করে শোনা যায়! দেখসেন? কত্ত বদ! ওদের একটু ঘুমাতে বলসিলাম কিন্তু! ও হ্যাঁ, ওরা আপনার নাম ধরেই ডাকত, আমি বকা দিসি। এসব নাম ধরে ডাকাডাকি আমার পছন্দ না, পশ্চিমা কালচার পশ্চিমে চর্চা হোকগা, আমার সামনে এসব বেয়াড়াপনা চলবে না। তখন ওরা তুলতুল ভাইয়া বলে! কত্তবড় শয়তান! আমাকে বলে খালামনি আর আপনাকে বলবে ভাইয়া! কান ধরে সবকটাকে শিখায় দিসি যেন আপনাকে কাকা/মামা/চাচা যেকোনও একটা কিছু বলে, তো ওরা কাকা শব্দটাই পছন্দ করসে।
আচ্ছা, আমি না ওদের অত্যাচারে ঠিক মতন লিখতেই পারতেসি না! কী করব বলেনতো? উফফফ্! এখন আপনার নামে পচাপচা কথা বলতেসে! বকা দিচ্ছে আপনাকে! পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না, কিন্তু……হায় আল্লাহ্! আবার আপনার নাম ধরে কথা বলতেসে! ওরা আবার আপনাকে লাড্ডু বলেও ডাকতেসে দেখতেসি! আচ্ছা, আমি যে জেগে আছি, আমার যে কান আছে, এটা কি ওদের মাথায় নাই? থামেন, সবকটাকে থাপ্পড় লাগায়ে আসি!
এইবার চুপসে। উফ! শান্তি! এ আল্লাহ্! কুঁউঁকুঁউঁ শব্দ হচ্ছে কীসের? ওরা কানছে?! আমার খারাপ লাগতেসে, তুলতুল! আপনার জন্য এমন হল! ঘোড়ার ডিম! আপনি সব নষ্টের গুরু। আচ্ছা, আমি তো শুধু চারটা মন্টুর কথাই বলসি, না? আরও একটা মাতব্বর পাখি কিনসি কিন্তু মেলা থেকে। সে আবার মহাপণ্ডিত। আচ্ছা ওর ছবিও দিবনি। সে খুব গম্ভীর হয়ে থাকে আর খুব কম কথা বলে। দাদুদাদু টাইপ ভাব। জ্ঞানী দাদু। (আপনার মত! খিকখিক!) আপনার মত বিজ্ঞ হবার জন্য আপনার মতন সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভুগেভুগে, নাকি ওকে দ্বি-মাত্রিক আকারে তৈরী করা হইসে আর মাত্র ২০ টাকা দিয়ে কিনসি ওকে, এ কারণে কখন আবার আমার মতন ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভুগতে শুরু করসে কি না আল্লাহ্ই জানে! যেটাতেই ভুগুক, সবসময় কেন জানি গুম মেরে থাকে। সেই দাদুই এখন আমাকে বকা দিল। বলল, “তুলতুলের মত একটা পচা বাচ্চার কারণে, যে তোর সাথে কথা বলা তো দূরে থাক, যে তোর কথা শোনেই না, সেরকম একটা ফিঁচকার জন্য কেন তুই আমার মন্টুগুলাকে মারলি? যদি পালতে না পারিস, ধৈর্য যদি এতই কম থাকে তো কিনলি কেন? যা, আমাদেরকে ফেলে দিয়ে আয়।” তুলতুল, বিশ্বাস করেন, আমি ওদের মারিনি, জাস্ট খাঁচাটা একটুখানি ঝাঁকি দিসি! আর শেলফ থেকে ফেলে দেবার ভয় দেখাইসি……তুলতুল, আপনি তো আগে থেকেই বোবা, আমার সাথে কোনও কথাই বলেন না কখনও, ওদিকে মন্টুরাও ঠোঁট ফুলিয়ে বসে আছে আর দাদু তো কথাগুলা বলেই মুখ ফিরায়ে নিসে। আমি এখন কী করব? কার কাছে যাব? কার সাথে বকবক করে বাঁচব? বলে দেন না, তুলতুল! আমার খুব খারাপ লাগতেসে তো!
তুলতুল, আমি আপনাকে বলসিলাম না কী কীসব লিখব? মনে আছে? ওই যে, আমার কী কীসব প্রবলেম, যার সমাধান চাইসিলাম আপনার কাছে, মনে আছে? আমার না আর লেখার মুড নাই। পরে লিখব, আচ্ছা? আসলে সিরিয়াস কথা লিখতে না আমার একটুও মন চায় না। তার উপর মন্টুদের কষ্ট দেবার কারণে একটু অপরাধবোধে ভুগতেসি। পরে লিখব, হ্যাঁ? আপনি প্লিজ উত্তর দিবেন কিন্তু! ও আল্লাহ্! দেখসেন, কত্ত বড় শয়তান! ফিসফিস করে কী বলল, শুনলেন? বলসে, তুলতুল কাকা জীবনেও উত্তর দিবে না। দিলেও ওরা নাকি সাথেসাথেই ডিলিট করে দিবে। কত্তবড় চুন্নিগুলা সব! শয়তানের আঁটি! (আচ্ছা, আঁটি না আঠি?) আচ্ছা, ওদের এখন আমার আবার কিছু বলা উচিত কি না? এখন থেকেই কেন ওরা এমন হবে? বলবেন, এটা তেমন কিছু না, তা-ই তো? এটা তেমন কিছু না, কিন্তু ছোট জিনিস দিয়েই তো বড় জিনিসের আঁচ করতে হয়, তাই না? এখন যা বলসে, তাতে কিছু হবে না, কিন্তু ওদের চরিত্রে যে একটু হলেও প্রতিশোধপরায়ণতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, সেটার বেলায় কী? আমার এসব প্রতিশোধ-ট্রতিশোধ খুব অপছন্দ। ওরা আমার মত হচ্ছে না কেন? আল্লাহ্গো! কী বলতেসে শোনেন, শোনেন! তুলতুল কাকা যে কোনও মেসেজ পড়ে না, বেশ করে! উত্তর দেয় না, খুব ভাল করে! কাকা ইচ্ছা করে ফোন ধরে না, ঠিক করে! কাকা খুব্বি ভাল! আমরা এখন থেকে পচা শানায়া খালামণিকে ভুলে গিয়ে, তুলতুল কাকাকেই শুধু ভালোবাসপোওওও……হ্যাঁঅ্যাঅ্যাঅ্যা??? ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাসসসস্!! ফাতরার দল! ওরা যে এতদিন আপনাকে আপনার আড়ালে কত পচা কথা বলসে, তাই নাকি আবার আপনার কাছে যেয়ে কান ধরে মাফ চেয়ে আসবে বলতেসে! আমাকে ছেড়ে আপনার দলে চলে গেল! আচ্ছা……যাক! যাক না! বুঝবে মজা! আপনাকে তো চেনে না! মরার ইচ্ছা হইসে তো, তাই যেতে চায়! বুঝুক একটু! ওদের একটু শাস্তি পাওয়া দরকার আছে। ওমাগো! বলসে যে আপনার জন্য নাকি সুন্দর একটা মেয়ে দেখে বিয়েও দিয়ে আসবে!! থামেন, ওদের প্রত্যেকের গালে আমি ঠাসঠাস কয়েকটা চড় লাগায়ে আসি! আর প্রত্যেকের মুখে স্কচটেপ লাগাই দিয়ে আসিগা! ফাজিলের ফাজিল! বদের বদ! উফফফ্! আর সহ্য করতে পারতেসি না! আপনি যান, পরে কথা হবে। বিদায় (আপাতত)।
তুলতুল বেটা, কী করব, পৃষ্ঠাটায় জায়গা বেঁচে গেল যে! আমি একটু আমার ভাগ্নি তুলতুলির ছবিও দিয়ে দিলাম, আচ্ছা? আরে বাচ্চা তো বাচ্চাই, তাই না? বাচ্চার আবার আপনপর আছে? বাচ্চা মানেই আপন। তাও যদি প্রবলেম থাকে তো দেখলেন না! জোর করে দেখাচ্ছি নাকি? চোখ বন্ধ করে ফেলেন! আচ্ছা আমি কি চাইলেই জোর করে হাত দিয়ে আপনার চোখের পাতা টেনে চোখ খোলাতে পারব? আপনি কনে আর আমি কনে! তাইলে? ভয় নাই! ভয় নাই! আমাকে কোনও ভয় নাই! আচ্ছা, আপনি ভাত খাইসেন? কী দিয়ে খাইসেন? আপনাকে কে রান্না করে দেয়? রান্না ভাল হয় তো? আমার না কিছু খেতে গেলেই খালি আপনার কথা মনে পড়ে। এমনকি পানি খাইতে গেলেও! মশা যখন আমাকে কামড়ায়, তখন মশার কামড় খাওয়ার সময়ও আপনাকে মিস করি……আমার তুলতুল বেটা মশার কামড় খাইসে তো ঠিকমতো? কোনওকিছুই আপনাকে ফেলে খেতে পারি না! হিহিহিহি
তো যেটা বলতে চাচ্ছিলাম, একটা দীর্ঘ ব্রেকের অনেকদিন পর আমি প্রেমে পড়সিলাম। আপনার। আপনি না থাকলে আমার আজকালকার অনেক কিছুই অন্য রকম হত। জানি না কেমন হত। যা পাইসি, সেটা ভালই। বিগত কয়েক মাস আপনাকে নিয়ে আমার সত্যিই খুব ভাল কাটসে। তার মানে কিন্তু এই না যে সারাজীবনই আমি আপনার জন্য হাহাকারে থাকব। কিন্তু আপনার সাথে এই আজব রকমের ব্যাপারস্যাপারগুলা আমার সারাজীবনই মনে থাকবে। আপনার সাথে ফেসবুকে দেখা না হলে আমার অনেক সন্ধ্যা, অনেক রাত বা অনেক ভোর হয়তো অন্য রকম হত। সেটা বেশি ভাল হত, নাকি বেশি খারাপ হত, তা আমি জানি না। একমাত্র আল্লাহ্ই জানে। সবাই বলে, আমি নাকি জন্ম থেকেই একটু ভাবুক গোছের। তবে আপনি ছিলেন বা আসলেন বলে আরেকটু বেশি ভাবুক হইসি, আপনাকে নিয়ে ভাবসি। আপনি ভাল লিখতে পারেন, এর বাইরে আপনার কিছুই আমি জানতাম না, অবশ্য এখনও যে খুব ভাল জানি বা বুঝি আপনাকে, তাও না। কিন্তু সেই কবে থেকেই আমার শুধুই আপনি, আপনি, মানে গ্রন্থিক, গ্রন্থিক করেই কাটসে। কাটতেসে। আমি জানি যে এটা শুধুই আমার কল্পনা আর আমার ভাললাগা, এর চাইতে বেশি কিছু এক্ষেত্রে হবে না। আপনার এখানে কোনও হাতও নাই, দোষও নাই। (একটু দোষ আছে অবশ্য, সৌজন্য করে বললাম না। মাথায় বুদ্ধি থাকলে বুঝে নেন, আর বুদ্ধি না থাকলে তো সবই মাফ।) আর আমি যদি হিন্দুও হতাম, কিংবা আপনি যদি মুসলিমও হতেন, তাও এটা এখানেই থাকত। এটা আমি বুঝি। আমি জানি, প্রেম-ভালোবাসা সাময়িক আবেগ, সময়ের সাথে নাকি চলেও যায়, কিন্তু আমার খুব খারাপ লাগতেসে, তুলতুল। আমার আর এখানে থাকতে ইচ্ছা হয় না। অনেক দূরে, যেখানে কেউ আমাকে চিনে না, এবং যেখানে আমি নিরাপদ আর গরম একটু কম, সেখানে চলে যেতে ইচ্ছা করে। এটা ভাববেন না যে শুধুই আপনার জন্যই আমার এমন ভাবনা। আমার লাইফে অনেক ঝামেলা আছে, ভাই। আমি খুব কাছ থেকে অনেক ধরনের নিষ্ঠুরতা দেখসি। আমি যে এখনও দুনিয়াতে টিকে আছি, সেটাই অনেক বড় ভাগ্যের বিষয়। সময়সময়ই ভয় আর টেনশন নিয়েই আমাকে থাকতে হয়। তবে কী, এখন যখন এইসব ছেড়েছুঁড়ে দূরে চলে যাওয়ার কথা ভাবি, তখন আপনি একটা প্রভাবক হিসেবে থাকেন। আমি আপনার সাথে প্রেম করি না, তাতেই আপনি টাংকি মেরে বেড়ালে আমার রাগে-হিংসায়-দুঃখে মন খারাপ হয়ে যায়। আমি তো কত্ত খারাপ, না? বিনা অধিকারেই হিংসা করি! তার মানে এই না যে আমি আপনার সাথে প্রেম করতে চাই, বা দেখা করতে চাই, বা আপনার সামনে যেতে চাই। এমনকি, আপনি ‘কিস’ শব্দটা বললে পর্যন্ত রাগ লাগে! ‘কিস’ ওয়ার্ডটা আমার কাছে খুব খ্যাত লাগে। আমি আপনাকে চাই না, কিন্তু কী জানি একটা……আমি সত্যিই জানি না, ওটা কী! আমি খুব খারাপ, তুলতুল! আমার কষ্ট হবে আপনি অন্য কারও হয়ে গেলে। কিন্তু আমি তা বাইরে দেখাতে পারব না। বাইরে দেখাব যে, আমি খুবই খুশি হইসি। (কারণ, আমি যে ভণ্ডামিতে সেরা, তাই!) যত কিছুই হোক না কেন, তাই বলে তো আপনাকে আটকে রাখা যাবে না, তাই না? আর গেলেও আমি সেটা করব না, করতামও না। তাইলে কী উপায়? আসলে প্রথম থেকেই ফাজলামো করা ঠিক হয় নাই। দোষ করসি আমি, শাস্তি তো পেতেই হবে, না? জানেন, আমার কেন জানি না, মনে হচ্ছে যে…….না না, এটা বলা যাবে না, কিছুতেই না, মরে গেলেও না!
তুলতুল, আমাদের মেসে সিঙ্গেল রুমগুলা ৩টা+৩টা মুখোমুখি, এরকম। এর মাঝে একটা করিডোর। আর যেগুলা বিল্ডিঙের কিনারা বরাবর, সেগুলা একটা বারান্দাসহ ৩টা রুম পাশাপাশি দেয়া, ওই বারান্দাই কমন করিডোর। আমি ৩ রুমওয়ালা করিডোরের এক কোণার রুমে আছি, যেটাতে পুরা হোস্টেলে সবচাইতে বেশি গরম পড়ে। আর আজ রাতে না আমার পাশের দুই রুম ফাঁকা। ওরা কেউ নাই। আমার রুমটা খুব গরম, রুমের বাথরুমে পানিও থাকে না ঠিকমতো, আমি এসব মেনেই মেসে উঠসি। অতো আহ্লাদি হলে তো হবে না, তাই না? আমি টপ ফ্লোরে থাকি তো, গরমে একটু-একটু মরে যাচ্ছি! সেটাও নাহয় সহ্য করা যাবে, কিন্তু তুলতুল বেটা, আমার সামনে বারান্দার কোণার দিকে একটা গ্লাস ভাঙা। আমি খুবই ভয় পাচ্ছি! আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, ওই ভাঙা ফুটাটা দিয়ে আপনার পুরাতন প্রেমিকার আত্মা এসে আমার উপর প্রতিশোধ নিবে! টিভিতে দেখেন না, এমন ঘটে! আমার ভীষণ ভয় লাগতেসে, তুলতুল। আপনি প্লিজ ওদেরকে বুঝায়ে দেন যে আমি শুধু সফটচিঠিই দিসি, আর কিছুই না। আর আমি আপনাকে অতো জ্বালাইও নাই। আমি কিন্তু জ্বিন ভূত পেত্নী পরী সবই বিশ্বাস করি। আমার ভয় করতেসে। পেত্নীটা এসে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে আমাকে সুড়সুড়ি দিলে প্রবলেম নাই, বরং খুশিই হবনি, শুধু খামচাখামচি না দিলেই হল! আমাকে দেখে লোকে আবার ভুল বুঝবে! খামচির দাগের অন্য অর্থ বের করে ফেলবে! আমাদের দেশের পাবলিক খুবই আজাইরা আর জাজমেন্টাল—অন্যের ব্যাপারে। আচ্ছা বেটা, খোদা হাফেজ। আর জ্বালাচ্ছি না আপনাকে, কিন্তু দয়া করে আপনার পুরাতন বান্ধবীদের সামলান! ওরা তো সবাইই আমার বন্ধুর মতনই, তাই না? এটাই ওদেরকে বোঝান। অন্তত আজ রাতের জন্য!
তুলতুল, ২০৩১০ টাকা বেতন পেয়ে আপনি কীভাবে চলেন, বলেন তো? আমি তো পারতেসি না। আমার ভাগ্নি তুলতুলিকে আমি ৫ হাজার টাকার গিফট দিসিলাম প্রথম মাসেই, এই মাসে ওর কাছ থেকে সে টাকা ধার হিসেবে ফেরতও নিসি। আবার খালামণিদের কাছ থেকে চার হাজার টাকা ধারও নিসি। আমি দামি কিছু কিনি না, তাও কেন নিজের সুবিধামত চলতে পারতেসি না? এদিকে আবার এসি গাড়ির ভাড়াও ১০০ টাকা বাড়ায়ে দিসে। এ মাসে রাজশাহী গেলে আমাকে নন-এসি বাসেই যেতে হবে। আমার সমান বেতন পায়, অথচ আমার ফ্রেন্ডরা ঘড়ি কিনে ১২-১৪ হাজার টাকা দিয়ে। কীভাবে সম্ভব এটা? ওদের অন্যান্য ফুটানি তো আছেই! তার মানে কি ছেলেরা চাকরি পাওয়ার পরও কি বাবার কাছে হাত পাতে? অবশ্য, এইসব ফুটানি আমারও একটু আছে, তবে সেগুলা ফ্যামিলি থেকে খয়রাত সূত্রে পাই! ওই ফুটানির টাকা আমার নিজের না। তার উপর নতুন যে যন্ত্রণা শুরু হইসে, তাতে তো আমার আর চাকরিই করতে ইচ্ছা করতেসে না। আমার মত গরীব কুত্তির চাকরি ছাড়ার ধৃষ্টতা নাই, কিন্তু আমার আগেকার আপনি-এর মত স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে ইচ্ছা করতেসে, যেখানে সব হবে আমার ইচ্ছাতে। নিয়ম করে ৫ দিন যেতে-আসতে হবে না। আমার বুদ্ধি মতই সবকিছু পরিচালিত হবে। তার মানে কিন্তু এই না যে, আপনি যেভাবে বড়লোক হতে চাইতেন, আমিও সেভাবে বড়লোক হতে চাই। নারে ভাই, লাগবে না অতো টাকা। ব্যাংকে টাকা জমতে থাকলে কী হয়? অ্যাকাউন্টে কিছু শূন্য বাড়ে। আর তা দেখে শান্তি লাগে। যাদের অনেক টাকা, এতই যে সেটা ওরা জীবিত অবস্থায় খরচ করতে পারবে না, তাদের টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া মানে এক ধরনের বোকাবোকা আত্মতৃপ্তি বাড়া ছাড়া আর কিছুই নয়। ব্যাংকে অলস টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি মানেই কিছু সংখ্যার বৃদ্ধি, এইতো! এমন সংখ্যা দিয়ে কী হয়, তুলতুল? আমার বরং ফইন্নি হয়ে থাকতেই ভাল লাগে। তুলতুল, আপনি এখন আবার একটা দোকান দিয়ে আমাকে কর্মচারী রাখেন না! তারপর আমি টাকা জমায়ে কিনে নিব সেটা! তারপর আস্তেআস্তে সেটাকে একটা প্রতিষ্ঠান বানাব। তারপর আরেকটা, তারপর আরও একটা।
এরপর টাকা জমাতে পারলে একটা এতিমখানা খুলব। আমি সেটার শিক্ষক হবো। আমি যেহেতু ১ থেকে ১০০ পর্যন্তই ঠিকমতো গুনতে পারি না, সেহেতু আমি ওদের মানসিক বিকাশের ক্লাস নিব আর ওদেরকে পড়াশোনার করানোর জন্য অন্য লোক রাখব। তারপর আপনাকে দাওয়াত দিব অতিথি বক্তা হিসেবে। আপনি ফ্রিতে ওদের দুইটা ভাল কথা বলবেন, ওরা অনুপ্রাণিত হবে। তারপর আমি আমার কাকা-মামাদেরও দাওয়াত দিব। ওরাও ফ্রিতে ক্লাস নিবে। ওরাও এতিমদের জন্য খয়রাত দিবে। আমি আপনার কাছেও খয়রাত চাইব। আপনি বলবেন যে, আমি তো বিজি আছি, পরে কথা হবে। বাই। বলেই খট্ করে কলটা কেটে দিবেন। তারপর আমার নাম্বারটা সাইলেন্ট করে রাখবেন। ওতে কোনও অসুবিধা হবে না, খয়রাত দেয়ার অনেক লোক আছে আমার পরিচিত, আপনার কাছে তো যাব জাস্ট একটা বাহানা নিয়ে। আসল উদ্দেশ্য, আপনাকে দেখা। এমনিএমনি দেখতে গেলে যদি আপনি আমাকে রুমে ঢুকতে না দেন, তখন? আমার নিজের সম্পর্কে একটা ধারণা এই যে, আমি পড়াশোনা করাতে না পারলেও বাচ্চাগুলাকে সঠিক মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পারব। উফফফ্! কোথা থেকে কোথায় চলে গেলাম! আমি জানি, এসবের কিছুই আমাকে দিয়ে হবে না। আহা, তারপরও কত স্বপ্ন দেখি! আসলে আমার স্বপ্ন দেখতেই বেশি ভাল লাগে। আচ্ছা তুলতুল, আপনি আইবিএ’তে কেন পড়লেন? আরইউ’তে আইবিএ খুলসে বেশ কয়েক বছর হল। ওটাতে মোটামুটি এ-টু-জেড পর্যন্ত লিখতে যে জানে, সে সহজেই চান্স পেয়ে যায়। তো বাসা থেকে একটু বের হতে পারব, এই আশায় সেখানে ভর্তি হইসিলাম। এরপর দেখলাম, ছিঃ! এত নিয়মকানুন! রোজরোজ ক্লাসটেস্ট, হোমওয়ার্ক, প্রেজেন্টেশন……ওয়াক! এইসব কী? আবার দেখলাম, ক্লাসে না থাকলেও মার্কস কাটে! আমি কি ছোট বাচ্চা নাকি? মিডটার্মের একজাম দিসিলাম আর সেমিস্টার ফাইনালের কিছুদিন আগে বাদ দিয়ে দিই। বাসায় এটা বলার পর কত খোঁটা যে শুনসি! আমার যদি এই চাকরিটা না হত, তাইলে আমার আত্মহত্যা করা লাগত!
আচ্ছা তুলতুল, আপনাদের আইবিএ’র যে এমবিএ প্রোগ্রাম হয়, ওইটাতে কী শেখায়? কীভাবে শোষকশ্রেণীকে আরও বেশি শক্তিশালী করা যায় যাতে তারা শোষিতদের আরও বেশি শোষণ করতে পারে? নাকি, কীকরে কোম্পানিকে করের টাকা ফাঁকি দিতে সাহায্য করে দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নেয়া যেতে পারে? নাকি, কীভাবে কর্পোরেট স্লেভ হয়ে স্লেভারির পক্ষে সকল যুক্তি দাঁড় করায়ে জীবনকে হাসিমুখে যন্ত্রণাময় করে তোলা যায়? আমি অবশ্য এসব কারণে এমবিএ ছাড়ি নাই, আমার আসলে রোজরোজ ছোটোদের মত পড়তে ভাল লাগত না। তুলতুল, তুমি কেন ডিইউ’র আইবিএ’তে পড়তে গেলা? তুমি তো এমনিতেই ভাল ছাত্র, তোমার কি আর কোনও সার্টিফিকেট লাগত? নাকি তুমিও শোষকশ্রেণীর দলে যেতে চাও? কেন বলোতো? তুমি তো লেখালেখি কর, চাইলে ওইটাকেও পেশা বানাতে পারো। তুমি কত্ত জ্ঞানী! কত্ত কিছু জানো তুমি! তো তুমি ক্যান ওইদিকে যাবা? দ্বৈত চরিত্র তোমার! ভাল্লাগেনা! আমার এমন চরিত্র পছন্দ না। সরি! প্লিজ আমার উপর রাগ কোরো না। আমি পাগল মানুষ তো, কী বলতে কী বলে ফেলি, কোনও ঠিক নাই। কার সাথে কী বলতে হয়, তা আমাকে কেউ কোনওদিনও শিখায় নাই, তাই জানিও না। অবশ্য এইজন্য বকাও কম খাই না। শুধু তুমিই আমাকে একটুও বকা দাও না। আচ্ছা, তুমি এত ভাল কেনগো? তোমাকে আমি তেল দিই না, তাও তুমি আমাকে খারাপবাসো না, ঝাড়ি দাও না, টিটকারি মারো না। মাঝেমাঝে নিজেকে অপরাধী লাগে। তুলতুল, তুমি যদি বলো যে আমি যেন তোমাকে আর বিরক্ত না করি তো আল্লাহ্র কিরা খেয়ে বলতেসি, তোমার উপর আমার কোনও রাগ কিংবা অভিমান হবে না। (তবে এরপর থেকে আমি তোমাকে জ্বালানো বন্ধ করে দিব কি না, সেটা শিওর না।) তুমি এটা চাইলেই বলতে পারো। আমি তোমার মত সংবেদনশীল না, আমি সব সইতে পারি।
তুলতুল, কেমন আছেন? আর আপনার বাবা কেমন আছেন, জানালেন না কেন? এটা জানালে আপনার সাথে আমার প্রেম তো আর হয়ে যাবে না। তো? সমস্যা কী? উনার আর আমার একই অসুখ, তাই উনাকে একটু আপনআপন লাগে আরকি! আর উনার সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা হয়। জানেন, আপনার সাথে না আমার আব্বার খুব মিল আছে! কীরকম? বলতেসি। আমার আব্বার কাছ থেকে ছোটবেলা থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত যা যা চাইসি, সবই পাইসি। একদম সঅঅঅব্বব্ব কিন্তু—শুধু মুখেই! তার কাছে কোনওকিছু চাইলে সে কখনওই বলে না যে দিব না। যা-ই চাই না কেন, সে বলবেই যে, দিবনি! অমুক মাসে তমুক বিল পাব, তখন দিব। সামনের মাসে দিবনি। কিন্তু কখনওই সেই সামনের মাসটা আর আসে না। আর আমি তো গাড়ি থেকে শুরু করে বিশ্বভ্রমণ, কিছুই বাদ রাখতাম না চাইতে। তুলতুল, তুমি পুরাই আমার আব্বার কপি! আরেকটা মিল আছে। তোমরা দুইজনই খুব ফর্সা। তুলতুল, তুমি যে এত ফর্সা, আমাকে একটু মোটিভেট করো না ফর্সা হওয়ার জন্য। আজকাল আমার মন খুব খারাপ যাচ্ছে। যে মেয়েরা কিছু পারে না, তারা জীবনে আর কিছু হতে পারুক না পারুক, তাদেরকে অন্তত ফর্সা হতে হয়! আমি তো কিছু পারি না, আবার আমি তো ফর্সা নইই, উল্টা আমার গায়ের রঙ যেটা, সেটাও আরও কালো হয়ে যাচ্ছে। দিনদিন আমি পুরাই মানুষ থেকে কয়লা হয়ে যাচ্ছি, তুলতুল! আমি যে রুমটাতে উঠসি, সেখানে উঠতে আমার একটুও কষ্ট হয় নাই, কারণ এ রুমে উঠার জন্য কোনও কম্পিটিশনই ছিল না বলতে গেলে, কারণ এ রুমটা আমাদের হোস্টেলের সবচাইতে গরম রুম। গরমে আর দুঃখে আমার মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করতেসে।
সবাই আমাকে বলে, তুই তো বিয়া করবি না, তুই কালিয়া হইলে প্রব কী? ওদের কেমনে বুঝাই যে আয়নার সামনে দাঁড়িয়েও যদি একটা মেয়ে সুখ না পায়, তখন সে মেয়ে আর বাঁচে কীকরে? আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজের চেহারা দেখে নিজেই ভয়ে আঁতকে উঠি! নিজের চেহারা অন্য কাউকে দেখানোর চাইতে আমার নিজেকে দেখানোটা আমার কাছে বেশি জরুরি। সেই আমি যদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়েও শান্তি না পাই, তবে আমি আর বাঁচব কীভাবে? আমার রুমে এমন কিছুই রাখি নাই, যা আমার রুমের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দিতে পারে। রুম দেখতে পচা লাগে, এমন কিছুই আমি কিনি নাই। দরকার হলে আমি ওয়েট করব, টাকা জমলে সুন্দরসুন্দর জিনিস কিনে রুম সাজাবো। অথচ ভাগ্যের কী খেলা দেখেন, আল্লাহ্ আমাকেই দিনদিন কুৎসিত বানায়ে দিচ্ছে! আমার রুমে সবচাইতে পচা দেখতে যে জিনিসটা, সেটা আমি নিজেই! আমার কান্তে-কান্তে মরে যেতে ইচ্ছা করতেসে। অবশ্য, আমার নিজেরও দোষ আছে। আমি খুবই অলস বলে কখনওই নিজের কোনও যত্ন নিই না। আমি আলু-পটল-ঝিঙ্গা-পেঁপে ভর্তা মেখে রূপচর্চা করা দূরে থাক, মাঝেমধ্যে তো গরমেও গোসল করি না। ফেসওয়াশ কিনেকিনে ড্রেসিংটেবিল ভরায়ে ফেলসি, একটাও ইউজ করি না আলসেমির কারণে। এতো অলস আমি, সারাদিনই খালি ভোঁসভোঁস করে ঘুমাই। কেউ আমাকে ২৪ ঘণ্টা ঘুমাতে দিলে আমি ২৪ ঘণ্টাই ঘুমায়ে থাকতে পারব। সিরিয়াসলিই পারব কিন্তু! আমার ব্যক্তিগত জীবনদর্শন হচ্ছে: “আমরা বেঁচেই আছি কেবল ঘুমানোর জন্য। আমাদের ঘুমানোর জন্য, ঘুমানোর জন্য, এবং শুধুই ঘুমানোর জন্য বেঁচেথাকা উচিত।” কথা সেটা না। কথা হচ্ছে, আমি আয়নার সামনে দাঁড়ানো মাত্রই আমার মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অন্তত পাঁচ-পাঁচ দশ কিলোমিটার হেঁটে অফিসে আসাযাওয়া করি, ভাবতে পারেন? তাও আমার ভুঁড়ি বেড়ে যাচ্ছে। আচ্ছা, আপনি কি শুধু তাদেরকেই বেঁচে থাকার উৎসাহ দেন, যারা কেবল নোবডি হওয়ার কারণেই মরতে চায়? আমি যদি বলি, নোবডি হওয়াটা একটুও দুঃখের কিছু না, বরং অন্যান্য খারাপলাগা থেকেই মানুষ মরতে চায় বেশি, তখন? আমাকে একটু ট্রিটমেন্ট দেন না যাতে আমি একটা কালো ও মোটা মেয়ে হয়ে বেঁচে থাকতে অনুপ্রাণিত হই! নাকি আপনি শুধুই মুমূর্ষু বিসিএস রোগীদের ট্রিটমেন্ট দিবেন ঠিক করসেন? অন্যান্য কোনও বেদনা কি মানুষের থাকতে পারে না? বিসিএস-বিসিএস করে তো সবাই রীতিমত অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে! দুনিয়ার সিক পাবলিকগুলা! দেখে মনে হয়, যেন বিসিএস একজাম চাকরি পাওয়ার রাস্তা না, ডাইরেক্ট স্বর্গে পৌঁছে যাওয়ার রাস্তা! ভাল কথা, আমি তো ওয়েট করতে-করতে ভুলেই গেসিলাম যে আমি কী জানতে চাচ্ছিলাম! (আসলে ভুলি নাই কিন্তু, একটু ইয়ে হয়ে গেসিলাম। ‘ইয়ে’ মানে কী, জানি না।) আপনি বিসিএস-আইবিএ-চাকরি-নোবডি-মেয়েমানুষ এইগুলা ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারেন না? আপনি কি এইমাত্র আমার এই প্রশ্নটা পড়লেন? পড়ে কি বেশি রাগ হইসে, নাকি অল্প রাগ হইসে? তাইলে আমি সরি যে এইটা আপনাকে পড়তে হল। আসলে আমার এইসব ক্যারিয়ার-ফ্যারিয়ারের কথা শুনলেই ঘিন্যায় গা গুলায়ে উঠে! আমি কী করব?
আপনি যদি বলেন যে আপনাকে বিসিএস নিয়ে জ্বালাব, এই ভয়ে আপনি আমার ফোন ধরতেন না, তাহলে আমি একটুও বিশ্বাস করব না। আমি ভাবব যে আমার আপনার পিছেলাগার ব্যাপারটা ছুটানোর জন্যই আপনি বুদ্ধি করে আমার ফোন ধরতেন না। আমি বিশ্বাস করব যে আপনি বিজি থাকেন। আমার মত একটা ইন্দুরই (বলা বাহুল্য, আকারে না, কাজে!) যদি ওইভাবে কারও সাথে কথা বলতে না পারে, মানে অতো সময় বের করতে না পারে, তো আপনার মত উটের (আকারেও) সেই টাইম হয় কীকরে? আমি আপনাকে দুই ভালোবাসাই বাসি—এক। প্রেম-ভালোবাসা, মানে দুষ্টু মেয়ের ভালোবাসা। দুই। ভক্তি-ভালোবাসা, মানে লক্ষ্মী মেয়ের ভালোবাসা। কিন্তু আমার কোনও ভালোবাসাতেই কোনও দাবি নাই, এইজন্য নিশ্চয়ই না যে আপনি অপারগ। এইজন্য যে আমি নিজেই অপারগ। আমার দুঃখ এসবও না, আমার দুঃখ একটাই যে আমি কালো হয়ে যাচ্ছি। আমি ফর্সা হওয়ার জন্য অনেকগুলা টাকা দিয়ে ওলে ক্রিম কিনসি, কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই সেটা গালে মাখতে ভুলে যাচ্ছি। ফর্সা হওয়ার ক্রিম কিনলেই যদি ফর্সা হয়ে যাওয়া যেত, তবে আমার মত অলস যারা, ওদের জন্য অনেক সুবিধা হত। আমার ব্রাঞ্চে অনেকগুলা ল্যাবের ৩টা ল্যাবই আমার দখলে। (মানে, জোর করে আমার ঘাড়ে চাপায়ে দিসে। আমি খুব ভদ্র টাইপের বাচ্চা, বসদের কোনও সিদ্ধান্তের তেমন একটা প্রতিবাদ করি না, তাই।) আমার সারাদিনই কাটে খুব ঠাণ্ডা এসি রুমের মধ্যে বসে, কিন্তু যে-ই বাসায় ফিরি, তখনই আমার অগ্নিকুণ্ড মার্কা রুমে ঢুকতে হয়, আর আমি তীব্র গরমে পুড়েপুড়ে কালাবান্দর হয়ে যাচ্ছি। আমি শিওর, আমাকে আর কেউ বিয়ে করবে না। কেউ যদি করতে রাজিও হয়, তবে আমিই ওকে বিয়ে করব না। ওইরকম বলদমার্কা ছেলেকে বিয়ে করলে জীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। তার চাইতে এখনই তো বেশ ভাল আছি।
ও তুলতুল, ভালো যদি না-ই বাসো, একটু করো ছলনা। (করুণা না কিন্তু!) এইটা কি আপনার প্রিয় গান? গানটা কার, বলেনতো? এটা আপনার জন্য ক্যুইজ। (আপনি মানুষকে ক্যুইজ দেন না, আমিও আপনাকে ক্যুইজ দিলাম। হুহ্!) আচ্ছা তুলতুল, আপনি তো কত মিথ্যা কথাই বলেন, তো আপনি যদি মিথ্যামিথ্যা করেই আমাকে একবার ভালোবাসি বলে দিতেন, তাহলে কি আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যেত? মাথার চুল কয়েকটা পড়ে যেত? মুখের বাম পাশের উপরের পাটির তিন নম্বর দাঁতটা নড়ে যেত? আপনার থলথলে ভুঁড়িটা কি আরও একটু বাইরের দিকে বের হয়ে আসত? ওইটা বললে আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাইতাম, এই ভয়ে থাকেন, না? এহহহ্! আমি কি আপনার মত বিয়াপাগ্লা বাবু নাকি? চৌধুরী সাহেব, শুনে রাখেন! শানায়া বাবু অতো বিয়ের স্বপ্ন দেখে না। শানায়া বাবুর স্বপ্ন একটাই: সে যাতে প্রচুর মজারমজার খাবার খেলেও তার ভুঁড়িটা আর না বাড়ে! তুলতুল, দুঃখের কথা আর কী বলব! সারাজীবনই ভারিভারি ব্যাগ টেনে কাটালাম। এখনও ভারিভারি বই বহন করতে হচ্ছে। অফিস থেকে ধরায়ে দিসে। বাসায় গিয়ে পড়তে বলসে। আমি বাসায় গাধার মতন বই বহন করেকরে নিয়ে যাই ঠিকই, কিন্তু কিছুই পড়া হয় না, পরেরদিন আবার বইগুলা অফিসে বহন করেকরে নিয়ে আসি। পড়া তো কিছু হচ্ছেই না, মাঝখান থেকে হাড়ে, মাজায়, পিঠে, কাঁধে ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। হাড়ের জয়েন্টে-জয়েন্টে বাম মাখতে-মাখতেই একটা সোনার জীবন ধ্বংস হয়ে গেল! কে তার খোঁজ রাখে! কোনদিন যে সারাজীবনের জন্য দুম্ করে বিছানায় পড়ে যাই! আমাকে অন্য একটা চাকরির বুদ্ধি দেন না! আমি বিছানায় পড়ে গেলে কিন্তু আপনাকে আরও বেশি করে জ্বালানোর সুযোগ হয়ে যাবে। তখন কিন্তু আপনার পুরা লাইফটাই ত্যানাত্যানা করে ফেলব। অতএব, আপনার নিজের স্বার্থেই আমাকে হেল্প করা উচিত!
তুলতুল, একটা জরুরি কথা আছে। যেটার কথা লিখে এসএমএস করসিলাম, ওইটা না, আরেকটা কথা। তুলতুল, ধরেন যে আমাদের তো যেকোনও সময়ই যেকোনও কিছুই ঘটতে পারে, তাই না? তো ধরেন যে, আমি মরে গেলাম। জাস্ট ধরেন আরকি! তো আমি চাই কী, আপনি আমার কথা কোনওদিনই কাউকে বলবেন না। এই অনুরোধটা রাইখেন, কেমন? প্লিজ টুনটুনি, আপনার লেখালেখির দোহাই লাগে। শুধু এই কথাটা রাখবেন, আর কোনওদিনই কিছু চাইব না। আমি বেঁচে থাকলেও কাউকে আমার কথা বলবেন না, আর মরে গেলে তো জীবনেও না! আমি চাই না, আমার অগোচরে কেউ আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করুক। যেহেতু আমি নিজ থেকেই এসএমএস আর মেইল দিসি, সেহেতু আমি কীকরে বলি যে ওইগুলা মুছে দেন! আপনি আমার জন্য টাইম নষ্ট করে মুছতে বসবেন, এটাই বা আমি কীভাবে চাইব? একটা-দুইটা টেক্সট তো আর না! সেগুলি আপনি আপনার নিয়মেই মুছে ফেলেন, কিন্তু তুলতুল, প্লিজ কাউকেই সেগুলার কথা বলবেন না, এমনকি আপনার মাকেও না, জিএফকেও না, বউকেও না, ভাইকেও না, বেস্ট ফ্রেন্ডকেও না। (অবশ্য, আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড বলে কিছু থাকার কথা না। আপনি কাউকে আন্তরিকভাবে সময় দেন বলে তো মনে হয় না!) একদম কাউকেই না। প্লিজ তুলতুল, আপনার পায়ে পড়ি! আমি মরলে অবশ্য আপনি জানতেও পারবেন না, তাও! আমি যেখানেই থাকি, আমার এই কথাটা রাইখেন, কেমন? এখন কথা হচ্ছে যে আমি মরতে যাব কেন? তাইতো! আমি তো মরতে যাবোই না, মরে গেলেও না! ছিঃ! কেন আমি ওরকম করব? কিন্তু আমি চাই আর না চাই, মৃত্যুটা তো আমার কাছেই আসবে, তাই না? (খাইসেরে! বেশি সাহিত্য মারাতে গিয়ে কীসব মৃত্যুফৃত্যু লিখে ফেলসি! ইঃইইইল্লিক্কাআআ……) আজ হোক, বা কাল, আসবেই আসবে।
এইটুকু বুঝসেন? তাহলে আপনাকে একটা জরুরি কথা জানায়ে রাখা ভাল। একটা ঘটনা ঘটল। ওই মরা-মরা করতে গিয়ে আমার ভয় লেগে গেসে। আমি যদি জানতাম যে আমার দুই প্রতিবেশি, মানে পাশের দুই রুমের দুইজন, আজ রাতে আর বাসায় ফিরবেন না, তাহলে তো আমি অফিস থেকে বাসায় না গিয়ে সোজা আমার বড় বোনের বাসায় চলে যেতাম। কাল যাব অবশ্য, বড়মামা আসবে, মামার সাথে ঘুরে বেড়াব। সবই তো বুঝলাম! কিন্তু আজকের রাতটা কীভাবে কাটাব? আমার যে ভয় লাগতেসে। মনে হচ্ছে, খাটের নিচে কী একটা যেন আছে! বারান্দায় কে একটা জানি হেঁটে বেড়াচ্ছে! পেছন থেকে কার জানি হাত এসে আমার কাঁধে পড়বে! জানালার ওইপাশে কে জানি দাঁড়ায়ে আছে! দেয়ালে কী একটা অপরিচিত ছায়া! সিলিঙের টিকটিকিটা কেমন জানি আমার দিকে তেড়ে আসার ভয় দেখাচ্ছে! দরোজায় এখনই মনে হয় কে যেন এসে টোকা দিবে! আমার মৃত বড়চাচীর কণ্ঠস্বর স্পষ্ট শুনতে পাইসি দুইবার! আমি চেয়ারে বসলে, বা খাট থেকে নামতে গেলেই কেউ একজন আমার পা টেনে ধরবে, শিওর! পাশের রুম থেকে ক্রমাগত কীসের জানি খুটখাট শব্দ ভেসে আসতেসে! কোনও এক দমকা বাতাসে জানালাটা খুলে গেলে তখন কী হবে? আমার বাথরুম পাইসে মনে হয়, আবার পায়ও নাই! আজকে পানি খাওয়া টোটালি বাদ দিতে হবে, যাতে কোনোভাবেই বাথরুম না চাপে! বাথরুমে গেলে বেশি ভয় লাগে আমার। এই পুরা ব্লকে আমি একা! দরোজা খুলে অন্য ব্লকে যে যাব, সে সাহসটাই আমার হচ্ছে না! যদি করিডোর দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু হয়? করিডোরের লাইটটা দেখি নষ্ট, নাকি কারেন্ট নাই, আমার বাথরুমে আসলে আলো জ্বলতেসে না, আমার দেখার ভুল? কী করব আমি? হায়! এখন তো জোর করে হলেও তাড়াতাড়ি ঘুমায়ে পড়তে হবে! যতক্ষণ জেগে থাকব, ততক্ষণই ভয় লাগবে। আবার বোবাটোবায় যদি ধরে তো আমি শ্যাষ!
ও টুনটুনি মুনতুনি শুনমুনি পাখি, চা খাবা? আসো, রান্নাবাটি খেলি। আসো পুতুলের বিয়া দিই, পুতুলের বিয়ার বয়সই তো পার হয়ে যাচ্ছে, পরে ওর জন্য বর পাইবা কই! আসো না পক্ষি! সবুজ চা/ রঙ চা/ লেবু চা/ আদা চা/ দুধ চা/ কালো কফি/ ক্রিম কফি/ হট চকোলেট/ আরেকটা কী জানি নাম, মনে নাই, ওয়ারড্রবে বিদেশি একটা অর্গানিক চা-পাতি আছে। ওই পাতির ঠোঙাটা ফেলে দিসি তো, নামটা বলতে পারতেসি না। কিন্তু মনে আছে, খুব সুন্দর ফুলের মত ঘ্রাণ! কোনটা খাবা তুমি টুনটুনি বাবু? একটাও খেতে হবে না, হাঁ করে বসে থাকো। টুনটুনিরা আবার চা খায় নাকি? ওরা তো খায় পোকা! কীসের চা-ফা? যাও, ফোটো! গিয়ে চুপচাপ স্ট্যাটাস আপডেট করোগে! আচ্ছা, টুনটুনি কেন শুধু মেয়েদেরকেই বলে? পুং টুনটুনি পাখি হয় না? পুং টুনটুনিদেরও তো ইগো থাকার কথা! শুধুই মেয়েদের টুনটুনি বললে ওদের কি খারাপ লাগে না? ও আচ্ছা, লেবুশসার খোঁজ তো দিলেন না, পরে আমি নিজেই দোকান খুঁজে বের করে কিনে নিসি। কী ভাবসিলেন? আমি গাধা? একটা দোকান খুঁজে বের করতে পারব না? হুহ্! তোমার কী আনব, টুনটুনি? কোন পোকা ধরে আনব? কোনটা তোমার ফেভারিট? ক্ষুধা পায় নাই তো, সোনা? আহালে বাবুতা! আমাল টুনটুনির পেটুনসোনাটা কত্ত নিচে পলে গ্যাসে! তুলতুল বাবুনসোনা, আমার আসলেই অনেক ভয় লাগতেসে! আমি কী করব?
এত যে কষ্ট করে সারারাত ধরে কী যে লিখলাম ঘুমের চোটে, দেখতেও পারলাম না, আর আপনি এটা পড়বেনই না? পড়েন না কেন, বলেনতো? মাঝেমধ্যে পড়বেন, কেমন? না পড়লেও সমস্যা নাই অবশ্য, তেমন কিছু তো লিখি না। তেমন কিছু হলে পড়তে বলতাম। এমনি-এমনিই লিখি। কাজ নাই তো, তাই! আচ্ছা, এই লেখা শেষলেখা হয় যদি? মানুষের হায়াতের কথা তো কেউ বলতে পারে না! তাই এই লেখার নাম দিলাম ‘মায়ের প্রার্থনা’। আচ্ছা খোদা হাফেজ।
ডাগাস, আসসালামুয়ালাইকুম।
আপনাকে লিখতে ইচ্ছা করতেসে না। আপনার উপর রেগে আছি। কিছুক্ষণের জন্য রাগটা তুলে রাখলাম। গত চারদিন আপনার ৪টা লেখা পড়লাম। আমার মনের মতন লেখা। আক্ষরিক অর্থেই প্রত্যেকটাতে ডাবল লাইক দিসি। (এতে একটা টেকনিকাল সমস্যা হইসে। ডাবল লাইকের দ্বিতীয় লাইকের কারণে প্রথম লাইকটাই উঠে গেসে। কী করি, বলেনতো?) আমার খুব ভাল লাগসে। অসম্ভব সুন্দর করে লিখসেন। আমি তো আসলে লিখালিখি কিছু বুঝি না, বুঝি শুধু ভাললাগা। তো অনেক সময় দেখি। চোরের মতন দেখি। (হয়তো আপনিও এমন করে কারও না কারও লেখা চুপচাপ দেখেন!) লেখা দিয়ে জোর করে (কুতকুতি, মানে আপনারা যেটাকে কাতুকুতু বলেন, সেটা দিয়ে) হাসাতে চায় বা জোর করে (চোখে পেঁয়াজের রস ঢেলে দিয়ে) কাঁদাতে চায়, এমন অনেক মানুষও লিখেন। ওদের আমার বিরক্ত লাগে। কিন্তু আপনার এই লেখাগুলা? হায় মোর খোদা! ভালোবেসে ফেলসি গো! আপনি যে এত সুন্দর করে লিখসেন, মানে বলসেন! উফফ! হায়রে সুন্দর! খুব সুন্দর, খুউব! আমি অন্যের কথা জানি না, আমার কেন এত ভাল লাগসে, বলি। বলতেসি, এক মিনিট। আপনার কাছে যদি লিঙ্কডইন থেকে আমার নাম করে কোনও মেইল যায় তো মুছে ফেলেন, আমি কাউকে কিছু পাঠাই নাই, অনেকের কাছেই আপনাআপনি চলে যাচ্ছে মেসেজ। বুঝতেসি না, কী হইসে, মানে বুঝতেসি, কিন্তু অত বকবক করতে ইচ্ছা করতেসে না, মানে অতো বিতং করে এর কারণটা বলতে ইচ্ছা করতেসে না। আমি একটু কম কথা বলি তো, তাই। কিছু মনে কইরেন না, হ্যাঁ? এখন লেখায় আসি? তো হাসি বলেন, কান্দা বলেন, আমার সবকিছুই ভাল লাগে জীবন থেকে নেওয়া, মানে নকল কিছু ভাল লাগে না। জোর করে আবেগ আনা আমার খুব বিচ্ছিরি লাগে। আপনার এই লেখাগুলা পারফেক্ট। আপনার বেশিরভাগ লেখাই সুন্দর, মানে সবগুলাই সুন্দর। কিন্তু এত কমসময়ে অ্যাত্তগুলা অ্যাত্ত সুন্দরসুন্দর করে লেখা নোট আমি কখনও পাই নাই। আগে এমন করে লিখসেন কি না জানি না। এগুলার প্রত্যেকটা লাইন আমার কাছে খুবই ন্যাচারাল আর নির্মল আর খুবই পরিচ্ছন্ন লাগসে। ন্যাকামোবিহীন লেখা, প্রেমে পড়ে গেলাম। সত্যি আল্লাহ্র কসম খেয়ে বলতেসি, একটুও পাম দিচ্ছি না। (আপনাকে মাঝেমাঝে পাম দেই অবশ্য! আপনি সেটা বুঝেন না, কারণ আমি পাম খাওয়ার জন্য অলওয়েজ মুখায়ে থাকেন। ভাল কথা, একটা মেয়ে যে সুইসাইড নোট লিখসিল না? তো মেয়েটার এখন কী অবস্থা? কেমন আছে?) এই সুযোগে একটা সত্যি বলে ফেলি, আপনার একটা লেখা আছে আমার অতটা ভাল লাগসিল না, যে গল্পের শেষ নেই, ওইটা। আমার যেটা মনে হয়, (অন্যের কাছ থেকে ধারকরা কথাও হতে পারে, আমার ভাই অতো মনে থাকে না) লেখক লিখবে নিজের মত করে, তার আর কোনও দায়িত্ব নাই। ভাললাগা, খারাপলাগা, বিরক্তলাগা, নেশালাগা, হাসিলাগা, কান্নালাগা এসব আমাদের দায়িত্ব। প্লিজ আবার বইলেন না যে আমার এই ফালতু কথাগুলা শুনে আপনি রাগ হইসেন! প্লিইইইজ!
শোনেন, আপনি একটা আজব পাব্লিক! কেন আশা করে বসে থাকেন যে লোকে খালি আপনার প্রশংসাই করবে, একটুও মন্দকথা বলবে না? আপনি কেন খালি পাম শুনতে চান? যদিও পাম, তবুও আরাম, তাই? আজিব! অতিআজিব! সবসময় প্রশংসা করা যায় নাকি? আমার তো ইলিশ মাছও ভাল লাগে না! সবাই আমাকে বলে, হায়রে স্বাদের মাছ, আর তুই কিনা খাস না! বলুক না! তাও আমি ইলিশ খাব না, ওটা আমার ভালই লাগে না! ইলিশ দেখলেই বমি আসে! তাতে কী? এই মাছের ডিমান্ড তো আর কমবে না! ইলিশ মাছ ভাল মাছ, আমি কদর করতে পারি না, সেটা আমার সমস্যা, কিংবা আমার রুচিই হয়তো ভিন্ন। আমার রুচি খারাপ হয় তো সেটা আমার দোষ, ইলিশ তো কিছু করে নাই! তো আপনার লেখাটা হয়তো ভাল ছিল, আমার অত ভাল লাগসিল না। কিন্তু আপনি খুব ভাল লেখেন, আমি আপনার লেখার ভক্ত, মায়ের কিরা খেয়ে বললাম। কিন্তু আপনার অনেক লেখাই আমার ভাল লাগে না, পড়লেই মেজাজখারাপ হয়। আমি সেসব নিয়ে দুইএকটা ফাউল কথা বলবই। পাঠক হিসেবে এটা আমার অধিকার। বলতে পারেন, চুপ করে থাকলেই তো হয়! আমি বলি, না, থাকব না, আমি ভদ্র পাঠক নই, আমি চুলকানিযুক্ত পাঠক। এটা নিয়ে এত খেপার কী আছেরে ভাই? বলতে পারেন, আমার লেখা কে পড়তে বলসে আপনাকে? আমি আপনাকে দাওয়াত দিয়ে আনসি নাকি আমার লেখা পড়ার জন্য? এইসব বলে লাভ নাইরে ভাই! আপনি লিখবেন, সেটা পাবলিকলি পোস্ট করবেন, আর পাবলিক পড়বে না, এটা তো হয় না! আপনি কি প্রাইভেসি সেট করে দিসেন নাকি আপনার পোস্টের? আমরা পড়বই আর কিছু ফাউল কমেন্ট করবই! আপনার লেভেলের মেন্টাল ম্যাচুরিটি থাকলে তো আমরাও লিখতে পারতামরে টুনটুনি!
আমার জ্ঞান অনেক কম, তাই আপনার কিছু শব্দ আমাকে খুঁজে নিতে হয়। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত, যেভাবে আমরা কথা বলি না, সেভাবে না লেখাই ভাল। যেমন, আমি মৃত্যুফৃত্যু না লিখে সরাসরি মরা লিখি, কারণ যে আমি অত সুন্দর করে কথা বলি না, তো শুধুশুধু লিখব কেন? আবার আমি কথাও খুব এলোমেলো করে বলি, তো শুধুশুধু চেষ্টা করে গুছিয়ে কেন লিখব? মিথ্যা হয়ে যাবে যে! সাহিত্যে অন্তত এইটুকু অনেস্টি তো থাকা দরকার! এটা অবশ্য আমার একেবারেই ব্যক্তিগত পছন্দ, বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই (আমি নিজেও) সুন্দর শব্দ আর গোছানো কথা বা লেখা বেশি পছন্দ করে। আবার আমি একটু খ্যাতও আছি। আমার আঞ্চলিক কথা অনেক বেশি পছন্দ। আর রাজশাহীর ভাষা আমি বলতে পারি না আমার ঢঙ্গি ফুপু-কাকাদের দোষে, ওরা বলে, আমাকে নাকি ভদ্র বাচ্চা হতে হবে, আর আঞ্চলিক ভাষা শিখলে নাকি আমি ভদ্র বাচ্চা হতে পারব না, তাই ছোটবেলা থেকে আমাকে ওই ভাষায় কথা বলতে দেয়া হয় নাই। কিন্তু রাজশাহীর ভাষা শুনলে খুশিতে অজ্ঞান হয়ে যাই। রাজশাহীর ভাষায় একটা আলাদা পৌরুষ আছে। খুবই সেক্সি আর সফিস্টিকেটেড ভাষা এই ভাষা। আপনি অবশ্য খুব সুন্দর করে কথা বলেন। কিন্তু আমার না আপনার মুখে আপনার এলাকার কথা খুব শুনতে ইচ্ছা করে! একদিন শুনায়েন তো! প্লিইইইইইইইইইইইইজ।
কোথা থেকে কোথায় গেলাম। যা-ই হোক, আপনার ট্রেনিংয়ের লেখাগুলা খুব সুন্দর হইসে। যদিও ২২ তারিখের লেখার অনেকগুলা টার্মই আমার অজানা, তবুও। আমি নিয়ে নিলাম কথাগুলা। জোর করে। অচেনা সুন্দর মানুষ দেখলে লোকে যেমনি মনেমনে আপন করে নেয়, পরিচয়ের ব্যাপারটা মাথায়ই আসে না সেসময়, তেমনি করে। হাহাহা……আমি খুব দখলবাজ আছি, না? এইটা হল লিগ্যাসি, আমার বাপ-দাদারা দখলবাজ ছিল কিনা, তাই! ওরা গায়ের জোরে মানুষের চর আর জমি দখল করে বেড়াত, আমি নাহয় আপনার সৃষ্টির কিছু অংশ দখল করে নিলাম! আচ্ছা আমি না অত সুন্দর করে প্রশংসা করতে পারতেসি না, মানে, আপনার ঢঙ্গি নায়িকাগুলার মতন করে। আপনি সত্যি অসম্ভব সুন্দর করে লিখসেন। লেখাগুলাকে কী বলব…..সাবলীল? স্বতঃফূর্ত? লেখাকে এসব বলা যায়? আমি জানি না। পারি না বলতে। কিন্তু খুব উপভোগ করসি। আমি ফুলটুল, গাছপালা, হাঁসটাস, বারান্দাফারান্দা, সব কিছুই দেখতে পাইসি, যা কিছু আপনি দেখসেন; এমনকি আপনার স্যারদেরকেও। মনে হচ্ছিল, আপনার সে যাত্রায় আমিও আপনার সাথে হাঁটতেসি, মুগ্ধ হচ্ছি, আর হেসে উঠতেসি আপনমনেই। লেখা নিয়ে কথা শেষ। এখন আমার রাগটাকে আবার নামিয়ে আনি, হ্যাঁ? আপনার সাথে অলওয়েজ রেগে থাকার চেষ্টা করব। নাহলে ওই পুতপুতা প্রেম না কী যেন একটা ছাই, গুঁতাগুঁতি শুরু করে দিবে!
আর আপনার সাথে আমার কথা আছে। আপনার সাথে বলে না, এমনিতেই আমার কথা। আপনাকে বললে একটু আরাম পাই, এই আরকি! কিন্তু সময়ের অভাবে বলতে পারি না, তাই মনটাও আর ভাল হয় না। পরে আসব, বিরক্ত করব। আমার মন খারাপ! আশপাশের মানুষের ভণ্ডামি দেখেদেখে আমি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি, গ্রন্থিক! ভাল লাগে না কিছু। ওই মানুষরাই স্বাভাবিক, নাকি আমিই অস্বাভাবিক, বুঝতেসি না। সবচেয়ে খারাপ আর অসহ্য লাগে কখন, যখন দেখি মানুষরা নিজেরাই জানে না তারা খারাপ বা ভুল। ওরা আত্মবিশ্বাসের সাথে ভুল কথা বলতেসে বা ভুল কাজ করতেসে আর সেটাকেই ভাল আর ঠিক মনে করতেসে। আমি বাপ-মা আর বোন বাদে আর কারও সাথে ঝগড়া করতে পারি না। আমি শুয়োরের মত, মানে কাপুরুষের (আচ্ছা, কামহিলা বা কানারী হয় না ক্যান? খালি ছেলেরাই কি কাওয়ার্ড হয়?) মত শুধু ওদের সাথেই গলাবাজি করতে পারি। আমি কাউকে কিছু বোঝাতেই যাই না। যা-ই হোক, এসব কথা আপনি শুনে আর কী করবেন! আপনাকে তো বলতে হবে সুড়সুড়ি দেওয়া কথা! এখন তো শীতকাল, তো সুড়সড়ি না দিয়ে একটু গায়ে জ্বালা ধরায়ে দেই? ধরেন, এমন কিছু বললাম যে রাগের চোটে আপনি একদম হিসহিস করতে লাগলেন! বলি? আচ্ছা থাক, মায়া লাগতেসে। আমার মনে আবার পেটভর্তি মায়া! আর এমনিতেও বাপ-মার কাছ থেকে দূরে আছেন, দেখা গেল, কেন্দেটেন্দে অজ্ঞানটজ্ঞান হয়ে একাকার হলেন! তখন? আর আমি এমনিতেও চাইনা আপনি ট্রেনিং-এ খারাপ রেজাল্ট করেন। থাক। মাফ করে দিলাম। আসসা ছুনেন না, দুত্তুমি কললাম কিন্তু! আচ্ছা, আপনি এমন ক্যান? ফাজলামোও বোঝেন না! ধ্যত! বোরিং বুড্ঢা কোথাকার! আর কখনই লিখব না আপনাকে। যান! যখন আমি আর আপনাকে লিখব না তখন তো মিস করবেন অবশ্যই, কিন্তু সেটা তো কখনও বলবেনই না, সেটাও আমি জানি। আমি জানি, আপনি ভাবেন, ওটা বললে আপনি পুং থেকে ইশ্তিরিতে রূপান্তরিত হয়ে যাবেন, এদিকে যে, চুপচুপ করে হায়রে মিস করবেন, (একটু হলেও তো করবেন! গডের কিরা খেয়ে বলেন তো করবেন না!) তাতে আবার আপনি ঠিকই পুরুষ হয়েই থাকবেন! হাহ্! চিন্তার কী ছিরি আপনার! নেন, একটা গান শুনেন……তেরে গালিওমে না রাখেঙ্গে কাদাম……আজকে এইগুলা বাদ। হুহ্! আচ্ছা, আজকে বাদ না, ইস ম্যাহিনেকে বাদ। সামনে মাস থেকে না একদম আলবিদাআআআ! আচ্ছা? আর বিরক্ত করব না নে। যানগা! বসেবসে মেয়েদের চিমটি খেয়েন আর আরামে থেকেন। আচ্ছা, মেয়েরা আপনাকে সবার সামনে চিমটি কাটে ক্যান? আমার খুব রাগ লাগে! আচ্ছা, ওদের একটু অপেক্ষা করতে বলেন, যখন আমি চলে যাব, তখন আরাম করে চিমটি খামচি যা খুশি কাটুকগা! এর মধ্যে আরেকবার আপনাকে চিমটি কাটলে আমি যেয়ে ইট দিয়ে ওদের মাথা ফাটাই দিয়ে আসব! ঢঙ্গি মেয়ে কত্তগুলা! দেখলেই গা জ্বলে!
আমার একটা ভাগ্নি হইসে কিন্তু! আমি ওর নাম রাখসি তুলতুলি। কেমন হইসে? তুলতুলি নামটা আবার সংক্ষেপে হয়ে গেসে তুতলি! এটা আরও কিউট! ওকে তুতলিসোনা বলে ডাকলে উপরের দিকে চোখ পাকায়াপাকায়ে দেখে আর ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসে আর ছোট্ট পা দুইটা নাড়ে! কী যে আনন্দ লাগে তখন! আচ্ছা, ইল্লিকবিল্লিকচিল্লিক ব্যাডবাই। আপনার সাথে কথা বলতে রাগ লাগতেসে। খারাপ মানুষ আপনি! আপনি সত্যি খারাপ মানুষ। আমার কানতে ইচ্ছা করতেসে! কিন্তু কানলে একটু প্রব আছে—আমি চোখে কাজল দিসি। বুঝতেসি না কী করব!