ঈশ্বরের পরিহাস



তুমি প্রশ্ন করলে, সুখ কী?
ব‌ইপাড়ার বইয়ের ধুলো আর ধোঁয়াওঠা চা-ই সুখ।

তুমি প্রশ্ন করলে, মায়া কী?
এই যে তোমার শরীরের ঘ্রাণ আমি সবখানে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াই, পরিচিত চোখের দৃষ্টি খুঁজি অচেনা চোখে, এসব মায়া ছাড়া আর কী?

আচ্ছা, এবার বলো তো, ঈর্ষা কী?
তুমি কি জানো, মিথ্যা আর অসত্যের পার্থক্য কী? প্রেয়সী আর পূর্ণতার তফাত কোথায়?
আচ্ছা, এই যে তোমাকে প্রতিক্ষণেই অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে নিতে পুড়ে যেতে হয়, এটাকে কি ঈর্ষা বলা চলে?

কেউ যদি তার ভবিষ্যৎ আর বর্তমানের সাথেই আনন্দে থাকে, তবে কেউ একজন কি অতীত হয়ে যায় না?
সময় যে বড্ড কৃপণ, মাত্র তিনটি কালই রেখেছে সে।

জীবনের প্রতিটি বসন্ত কেবলই ত্যাগের শিক্ষা নিয়ে আসে।
সুখ হলো রাইন নদীর জলের মতো...তীরের দুর্গে যতই জলই দিই না কেন, ফুরিয়ে তা যাবেই।

কে সবচেয়ে অভাগা? যাকে কেউ ভালোবাসে না? না কি যে কাউকেই ভালোবাসতে পারে না?
না কি সে, যে কাউকে নিজের সবটা দিয়েও, তাকে খুব করে চেয়েও...ধরে রাখতে পারছে না?

ঈশ্বরের পরিহাস ভয়ংকর। পরমাত্মা যখন মোক্ষের সমস্ত দরজা বন্ধ করে, পথের ক্রোশ কত, প্রশ্ন করে, তখন তাকে আর কীই-বা বলা যায়?

এমন নিয়ম কে করল যে,
কাউকে ভালোবাসলে যেতে দেয়া যাবে না?

ধরে রাখব না আর।
আমি আর না কাঁদলে তুমি চলে যাবে, তা-ই তো?
তবে...বেশ!
আমি কাঁদব না!

এতটা কাল অন্ধ হয়েই ছিলাম, এখন থেকে এভাবেই থাকব...
তাতে কষ্ট আর স্পর্শ করতে পারে না একদম।

তুমি এবার এসো।
সে যে অপেক্ষা করছে, বেলা যে যায় যায়...