প্রিয় বিকেল, কেন এতটা সহজেই তোমায় ভালোবেসে ফেলি? আমার রক্ত কি তবে নেশাগ্রস্তই...তোমার ভালোবাসায়? না কি আমি ঘোরাসক্ত শুধুই তোমার নেশায়? কী জানি, কেন যে এত অনায়াসেই ভালোবাসি তোমায়! ওহ্ ভালো কথা, আমি সকাল বলছি! কোনও এক পড়ন্ত বিকেলকে নিঃশঙ্ক চিত্তে ভালোবেসে আমি আজ সকাল হয়েছি। বিকেল, তুমি কখনও কি শরতশুভ্র মেঘ দেখেছ? কিংবা, নীলাভ সহজ আকাশ? দেখেছ কখনও…দোলের মুঠোয় মুঠোয় রাঙা আবির? কিংবা, রাঙা-মাটির সারি সারি লাল পাহাড়? কখনও শুনেছ…নীল সমুদ্রে ঢেউয়ের মাতম? কিংবা, শিউলিতলায় জলের প্লাবন? কিছুই শোনোনি? কিছুই দ্যাখোনি? তবে তো তুমি বিকেলের প্রবল ঝড়ে পুরো সকালটাকেই লন্ডভন্ড হয়ে যেতে...দ্যাখোনি তা-ও! তুমি শোনোই তো নি বিকেলের ভালোবাসার তীব্র টানে সকালটা ওদিক থেকে কীভাবে ছোটে! আহা, গোটাকতক জ্যান্ত সেসব মহাকাব্য! বিকেল, তুমি যদি সকালে মিলো, তবে কেমন হবে? পাঁকের নোংরাতেও ফুটবে নাকি অনিন্দ্য এক গোলাপ হয়ে? না কি হবে ভুলপ্রেমে কেটে-যাওয়া প্রথম একুশটি বছর? বলো, কী হবে তুমি? কৃষ্ণকলির কাজলকালো দুচোখ হবে? না কি সেই সাধারণ মেয়ের এলো চুলের ফুলই হবে? বুকের মাঝে খুব যত্ন করে লুকিয়ে-রাখা সুখ…হবে কি তা? না কি হবে পাঁজরভাঙা বেদনা-ফোটা ভীষণ অসুখ? কী হবে তুমি, বিকেল…বলো? বলছ কী! জানো না কি তা-ও? তবে যে তুমি মানবেই না তোমার রক্তআভায় ক্ষুদ্র আমার অনুপ্রবেশটুকু! বিকেলের বিষণ্ণ ঠোঁটে সকালের বিপন্ন চোখের শোভা…ওগো, পারবে না তুমি সেও হতে! তা-ও, সব জেনে বুঝেও, এত সহজেই কেন তোমায় ভালোবেসে ফেলি? প্রিয় বিকেল! শুনতে পাচ্ছ? আমি তোমার সকাল বলছি!