আপন অনন্তের ছায়াপথে



জানি, এভাবে জড়িয়ে ধরে কিছুই বলতে পারিনি সেদিন তোকে।
তবুও খুব করে বলতে চেয়েছিলাম—
তুই আমাকে ছেড়ে যাস না।
তোকে ছাড়া ভীষণ অসহায় লাগে নিজেকে।
মনে হয়, অনুভূতিহীন হয়ে যাব—
তোকে ছুঁয়ে থাকতে না পারলে।

আচ্ছা, এটা বুঝি অনেক বেশি চাওয়া হয়ে যাবে?
অতটাও চাওয়া কি আমাকে মানায়?
তুই কি আমাকে স্বার্থপরদের দলে ফেলতে চাইবি?
যদি বলিস— স্বার্থপরের মতো
নিজের অনুভূতি বাঁচিয়ে রাখতেই
তোকে আটকে রাখতে চেয়েছিলাম গভীর আলিঙ্গনে—
তবুও বলতে চাই,
তোর সঙ্গে থাকতে ভীষণ ইচ্ছে করে…
কিন্তু পারি না।

কেন আমার সমস্তটা জুড়ে আজও থেকে গেছিস তুই?
শূন্যতায় তোর-আমার অভিমানের হিসেব মিলে যাক
আমাদের অনুভূতির সব রঙে।

তোকে ছাড়া আমি ভালো থাকি না।
আমার অনুভূতিগুলো আহত হতে থাকে কিছুক্ষণ।
হঠাৎই তোর স্পর্শ পেতে চায়।
আমার চোখজুড়ে রেখে দিতে
খুব করে চেয়েছিলাম তোকে।
কী করে বোঝাই সে কথা তোকে?

ভীষণ বোকা ছিলাম রে আগে।
ভেবেছিলাম, ভালোবাসা দু-জনে মিলে হয়।
হা হা হা…
তোর প্রতি এ গভীর ভালোবাসার অনুভূতি সহ্য করে
যে একা আমাকে বাঁচতে হবে— তা বুঝিনি।
ভালোবাসা বোধ হয় এককেন্দ্রিকই সবসময়।

আমি যে তোকে ভালোবাসি,
এতে তো তোর কোনো দায়ভার নেই।
তোকে ভালোবেসে আমি নিজেকেই বাঁচিয়ে রাখছি।
এর বাইরে তোকে নিয়ে আমার আর কীই-বা প্রত্যাশা থাকতে পারে, বল?

তোকে অতটাই ভালোবেসে ফেলেছি বলেই
এ জীবনে একবার শান্তির খোঁজ পেয়েছিলাম।

আমি পারি না রে তোকে নিজের থেকে আলাদা করতে।
তোর অনুভব ছাড়া বাঁচতে আমার ভীষণ কষ্ট হয়।
তোকে বলে রাখছি আমাদের কিছু কথা—
তুই যত্ন করে রাখিস।
পারবি তো?

যদি আর কখনও আমাদের কথা না হয়,
তোর কাছেই রেখে যেতে চাই
আমাদের শেষস্পর্শ।

আজও কি তোর মন খারাপ হয়—
আমার চলে যাওয়ায়?

আমাদের আত্মিক অনুভবের তীব্র স্পর্শ
তোকে দিয়ে গেলাম আমি।
তুই চলে গেলে তা আর যত্নে আগলে রাখা যাবে না—
হারিয়ে যাবে।

ভালোবাসার সত্যতা দু-জনের উপস্থিতিতে নিশ্চিত না হলেও,
আমাদের হৃদয়ের অপ্রকাশিত অনুভূতির স্মৃতিগাথার পূর্ণতায়
তোকে ভীষণ প্রয়োজন…
আমাকে ভীষণ প্রয়োজন…
আমাদের নিশ্চয়ই প্রয়োজন।

আমি তোকে দেখতে পাচ্ছি না কেন?
তবে কি আমার চোখে অসহ্য যন্ত্রণার অশ্রুতে
তোকে অনুভব করতে পারছি?

আশ্চর্য!
কে ওখানে?