: তারও কিছু কথা ছিল, যা একান্তই নিজের; তারও কিছু অনুভূতি ছিল, যার ব্যাপ্তি কাউকে বোঝানো সম্ভব হয়নি, যা সে শুধু নিজেকেই বলে গিয়েছিল—এমনভাবে ফিসফিসিয়ে বলেছিল যেন কানে আওয়াজ না লাগে।
জেনেছি, তারও কিছু ব্যথা ছিল, যা নিয়েই সে বেঁচে ছিল এক বিশ্বস্ত চাতকের মতন। এই পৃথিবীতে কেউ কারও নয়, তা-ও সে বুঝেছিল আচমকা ঝড়ো আঘাতে, ক্রমশ সরে গিয়েছিল তার অনুভবের পরোয়া না করেই…
একদিন...সে-ও নিজেকে নিয়ে বাঁচতে মাতোয়ারা হয়ে উঠল, নিজেকে সে খুঁজে নিল একমুহূর্তের আবেগের পরিসমাপ্ত ধ্বংসস্তূপ হতে, এই বর্ণিল অগ্নিশিখায় কেবল তারই অধিকার এখন অনন্তকাল।
তার সাথে থাকছেন কীভাবে আপনি তবে? সে যে আপনার নয়, আর কারও নয় এক নিজ আত্মা ব্যতীত। সে নয় আসক্ত এ জগতের কোনো কিছুতেই, তার সাথে নিবিড়ভাবে কেবল আমারই বসবাস। কেন তাকে কাছে পাবার বৃথা চেষ্টা করছেন?
: আরাধ্যে মগ্ন থেকেও নিজের ভেতরে ঈশ্বরের অধিষ্ঠান বুঝতে ব্যর্থ যে-জন, অসন্তোষে নিজেকে হারিয়েও নিঃস্ব হয়নি যে-জন, তার জন্য সত্যিই করুণা হয়—দৃঢ়কন্ঠে বলতে পারি, আমি অবশ্য এই দলের মানুষ নই।
পুনশ্চ। তাকে আমি নিজের কাছেই রাখতে চেয়েছি, তার নিগূঢ় আত্মদর্শনে আমার বিশেষ মুগ্ধতা রয়েছে। নির্দ্বিধায় সে থাকবে আমার সম্ভাব্য প্রকাশিত প্রায়শ্চিত্তে, অসহনীয় সুখের বিলাসে, অশ্রুর সীমাহীন আবেগে। আমার নিঃশব্দে-করা ইবাদতের প্রতিটি মুহূর্তে তাকেই রেখেছি আমি।
তার সম্যক অনুভব যেন আমারই উন্মত্ততায় ভুলে থাকে—এটা আমার এক বিশেষ ইচ্ছে বলতে পারেন! এটাকে আপনি ‘ভালোবাসা’ বলেও আখ্যায়িত করতে পারেন! কেবল তারই মাঝে আমি খুঁজে পেয়েছি নিজেকে। যদি বলি, সে আমার আত্মার সঙ্গী, আপনি মেনে নিতে পারবেন তো আমার মনেপ্রাণে তার অস্তিত্বের নিবিড় স্বীকারোক্তি?
: নিশ্চয়ই! এ আত্মা প্রস্তুত আপনাকে মেনে নিতে। কেননা ভালোবাসা আত্মার সেই ফয়সালা, যার কাছে পৃথিবীর সকল শক্তি পরাভূত।