- আচ্ছা, ওই মেয়েটা কি তোমাকে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসে? - হা হা হা…কী যে বলো না! - বলতে বাধ্য করো যে! নিজে থেকে কি কিছুই বলো আমাকে? - ওর সাথে আমি মাঝে মাঝে শুধু কথা বলি। যার সাথে বিয়ের কথা হচ্ছে, তার সাথে একটু আধটু কথা তো বলতেই হয়, সেজন্যই বলি। - আমারও তো বিয়ের কথা হয়েছে; কই, আমি তো তাদের সাথে কথা বলতে যাইনি! - সামনেও কথা বলতে যেয়ো না। কখনওই যেয়ো না! - কেন? - এর উত্তর আমার জানা নেই। - শুধু আমার বেলাতেই আলাদা নিয়ম? - আলাদা না, একটা। একটাই নিয়ম। তুমি যেয়ো না, তুমি যাবে না, তুমি যেতে পারবে না। ব্যস্! - তোমাকে খুব হাসিখুশি লাগে আজকাল। মানুষজন এত আগে থেকেই সুখে রাখার কাজটা শুরু করে দিয়েছে বুঝি? - যা দেখা যায়, সব সময় তা-ই কি সত্যি হয়? - তার মানে, আমার চেয়ে বেশি ভালোবাসে না সে? - হতে পারে। - তোমরা এমন কেন? সরাসরি কিছু বলতে কেন বাধে? কেন ধরা দাও না? - ধরা দিই না বলেই হয়তো তোমরা এমন করে ভালোবাসো। - তোমরা বলতে? ওই মেয়ের কথাই বলছ? এখন আমাদের কথার মাঝখানেও উনি জায়গা করে নিয়েছেন? বাহ্ বাহ্! - ধুর্। - আজকাল খুব সুখী সুখী লাগে তোমাকে। বিয়ের পরের কাজটা এত আগেই শুরু করে দিয়েছেন উনি? - তোমার ক্লাস কি এখন বন্ধ? - আর কী কী ঠিক করলে দুজনে মিলে? - তোমার মাথাব্যথাটা কি আজকে একটু কমেছে? - আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে। - যে মানুষটা আমাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে, সে এরকম কিছু বললে, আমার এই নতুন করে বেঁচে থাকার শিক্ষাটাই যে অর্থহীন হয়ে পড়ে! - আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই কি এই নতুন করে বেঁচে ওঠা? ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল অন্তি। আহনাফ ফোনের এপাশ থেকে চুপ করে শুনছিল। অন্য সময় হলে হয়তো সে ফোনটা কেটে দিত, নয়তো কথা অন্য দিকে ঘুরিয়ে কথার ছলে অন্তির কান্না থামিয়ে দিত। আজ আর তা দেয়নি। ও শুনতে চাইছে অন্তির কান্না, ভালো করেই শুনতে চাইছে। হয়তো এরকম করে শোনার সুযোগ সে আর পাবে না। তিন মিনিটেরও কয়েক সেকেন্ড বেশি সময় পার হবার পর আহনাফ ফোনটা নামিয়ে রাখল। সে নিজেও যদি সত্যি সত্যি অন্তির মতন করে কাঁদতে পারত, তবে সেই কান্না কখনওই ওকে এমন করে মিথ্যে অভিনয় করতে দিত না।