প্রজ্ঞা এমন এক আলো—
যা সময়ের ময়দানে জড়িয়ে পড়ে না।
এর নেই কোনো শুরু, নেই কোনো শেষ।
শব্দ ছুঁতে পারে না যাকে,
বোঝাপড়ার কোনো তুলনা নেই যার সঙ্গে।
তবুও, আমি কিছু পর্যবেক্ষণ বলার চেষ্টা করব।
ভাবুন—
ঘুমিয়ে পড়ার ঠিক আগে সেই নিখুঁত শান্তির মুহূর্তটি।
যখন কিছুই আর থাকে না,
তখন অবশেষে শরীর-মন প্রশান্ত হয়,
শূন্য বিস্তারে মিশে যায়—
ভাবনার সব বোঝা ছেড়ে,
চিরন্তন স্বপ্নে ডুবে যাবার আগে।
এই শূন্যতার পরিসর সর্বদাই বর্তমান—
এ-ই অনন্ত স্বচ্ছ আলোক-সচেতনতা,
নিঃশব্দ উপস্থিতি।
তবুও, এই নীরবতার ভেতরে
সকল সম্ভাবনার জন্ম হয়—
পরিস্থিতি বুঝে অসংখ্য সম্ভাবনা,
অগণিত উদয় ও বিলয়।
সব কিছুই ঘটে
অন্তর্নিহিত বুদ্ধি, প্রজ্ঞা,
এবং নিখুঁত সময়ের সঙ্গে—
এ-ও এক স্বপ্ন মাত্র।
তবে, অনুগ্রহ করে আমার কোনো কথায় বিশ্বাস করবেন না;
কারণ বাহ্যিক বিশ্বাসই এ জীবনের সবচাইতে বড়ো অন্তরায়।
একমুহূর্তের জন্য
সব কিছু ভুলে যান।
নিজের কোনো গল্প, কোনো পরিচয়—
কিছুই সত্য নয়।
সব কিছু সঁপে দিন “অজানা”-র কাছে,
যতক্ষণ না সব চিন্তা নিস্তব্ধতায় থেমে যায়।
যখন মন নির্জন, ভাবনা-শূন্য,
যেখানে কোনো ধারণা নেই, কোনো আসক্তি নেই—
তখন অহম্ তার দখল ছেড়ে দেয়
চিরন্তন সচেতনতার ওপর থেকে।
সেই মুহূর্তেই জেগে ওঠে সত্য—
যার নেই কোনো শুরু, নেই কোনো শেষ।
অলৌকিক করুণা তখন উন্মোচন করে
গোপন শিক্ষাগুলো,
যেখানে সব পরিপূর্ণতা প্রকাশিত হয়,
কিছুই অসম্পূর্ণ থাকে না।
আমরা মাত্র এক-পা দূরে,
এক ন্যানো-সেকেন্ডের ব্যবধান—
সেই মুহূর্ত থেকে।
সকলেই সমানভাবে আহ্বান পায় এই মুহূর্তের।
আমরা যেন পরবর্তী নিঃশ্বাসত্যাগেই
এই কালাতীততাকে স্বাগত জানাই।
অপেক্ষার প্রয়োজন নেই।
অপেক্ষা কোনোদিন কাউকে সাহায্য করেনি।
কোথাও কোনো শব্দ থাকবে না।
তারপর, পরের দিন—
আপনি জেগে উঠবেন এই দেহ-সহ,
যার আছে তার প্রয়োজন, যন্ত্রণা ও ক্লান্তি।
তবুও ভেতরে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে,
যা শব্দে প্রকাশ করা যায় না,
যার কোনো তুলনা নেই।
ঠিক পথে চললে,
আপনি আবার সময়ের ক্ষেতে কাজে বের হবেন।
তবুও, চেষ্টা করবেন—
একটি সচেতন, আনন্দময় জীবনযাপনের।
নিজের সত্যের প্রতি অবিচল থাকবেন...
পরিস্থিতি যা-ই হোক—আপনার এই যাত্রা
কোনো আসক্তি নয়, কোনো শর্ত নয়।
অন্তর্দৃষ্টি ও ভালোবাসায় বাঁচবেন।
সত্যকে অনুশীলন করবেন,
দয়ালু হৃদয়ের পথ অনুসরণ করবেন।
এবং, প্রফুল্ল চিত্তে সদাসচেতন থাকবেন যে—
এ সব কিছুই স্বপ্ন মাত্র।
কিছুই আলাদা নয়,
কিছুই অবিদ্যা নয়।