সাত।
আমি সিন্ধুজলে ভিজিয়েছি মন,
বুঝেছি শুদ্ধ অনুভবে,
স্রেফ এক বিন্দুতেও
বিরক্তি তোমার আসে কতখানি!
আর কিছু নয়,
কখনও তোমার এক ফোঁটাও রাখে না আমায়,
মনের ভুলেও!
জানো, এই ধাক্কা এমন,
এই ভেতরের সবটা জুড়ে কেমন লাগে!
তোমার ও দুই ঠোঁটের নেশায়
রাতদুপুরে ঘুম ভেঙে যায়,
মনে হয় কেবল তোমার লালায়
চুম খেয়ে নিই একজন্মের!
আমার এই অসহায় বুকের ভাঁজে
দাও পুড়িয়ে
সুখের অসুখ,
পাঁজরজুড়ে থাক ছড়িয়ে
ওই চেনা মুখ!
তোমার প্রশস্ত ওই
স্নিগ্ধকোমল
বুকের ঘ্রাণে,
ঢেউ জেগে যায়
মৃতের প্রাণে!
আহা, ওই মায়ার মাঝে আছে কী যে,
সব ভুলে যাই....
নিজেকে বোঝাই, সরাই; ফিরি আবারও!
কী করব, বলো! ভুলতে তোমায় পারি না যে!
যে তোমার আসেনি কাছেই,
সে কীকরে সরল দূরে?
ফিরেই বা আসে কেমন করে?
বুঝি না কিছুই!
কাল কালোরাতে আকাশ যখন কেঁপেছে ঝড়ে,
তখন আমার খুবটি করে......
নাহ্......কিছু নাহ্!
আট।
ভালোবাসারা, কখনওবা,
বুঝে ফেলে ঠিক,
ওরা তোমার কাছে
ঠুনকো কী যে...
ওরা লজ্জায় পড়ে বলে না কিছুই,
কেবল লজ্জাবতীর পাতার ছায়ায়
লুকিয়ে বাঁচে!
সে লজ্জাবতী আরো লজ্জায়
গুটায়, পালায়।
লজ্জাবতীর ছোট্ট পাতার চাপটুকুও,
সইতে না পেরে
ভালোবাসারা কাঁপতে থাকে,
ঝরেঝরে যায় ওরা টুপ-টুপা-টুক!
ক্লান্ত দেহে ভাবে অবসাদে,
এখন তারা কই লুকোবে!
নয়।
অমন কোনও পুণ্য যে হায়
হয়নি করা,
যে কারণে থাকব ভাল
ওই জগতে!
মৃত্যু-পরের জগত আছে,
সে জগতে থাকব মেতে আনন্দেতে--
এই উছিলায় এই দুনিয়ায়
মরার আগে বাঁচছি মিছেই!
এই দুই জগতের
মাঝে আছে
কবর নামের আঁধার জগত,
সবাই বলে,
সে জগত নাকি বেশ ভয়ানক!
এই তিন জগতের
কোনোটাকেই যায় না দেয়া
একটু ফাঁকি...
রোজই তো ভাবি,
সত্যি এবার করব কিছু
থাকতে ভাল তিন জগতে!
জানি নাতো,
সেই দিনটা আসবে কবে,
যে দিনে সব ভালই হবে!
খুব করে চাই,
সে দিন হোক আজকে, আজই!
হয় না তবু......
এমনি করেই দিন চলে যায়,
দিনটা তবু আর আসে না!
ওই দুই পৃথিবী থাকুক পড়ে,
এই পৃথিবী কাটলে ভাল,
পরের দুটো আপনিই গড়ে!
দশ।
আকাশেতে চোখ রেখে যাই,
কল্পনাতে যাই ভেসে যাই....
শোনো না...এই!
এই আমারই জন্যে রাখা
ভেতরে তোমার
অনুভূতিহীন চেতনা যত,
রাঙিয়েছ কি নীলের আভায়?
তাই কি দেখি অতটা নীলে
আকাশগায়ে নীলে নীল খেলে?
নাকি সে রঙ দিয়েছ সবুজ?
তাইতো বুঝি প্রকৃতি ঘিরে
চোখধাঁধানো অমন অবুঝ!
বুঝেশুনে সব
অবোধ হতেই
ইচ্ছে করে
সবচে’ বেশি!
ভালোবাসুক কিবা
ঘৃণাই করুক প্রকৃতি তাকে--
রঙধনু তবু সাতটি রঙেই দিব্যি থাকে!
মহাসাগর যদি করে গর্জন,
সাগর যে রয় চুপ করে,
নদী বলে ওঠে, ওগো, কহো কথা,
আসে কৈফিয়ত মৃদু হাসিতে: বললে কথা, হারাবে যে তুমি!
এগারো।
এই......৫ মিনিট! ফোন দিচ্ছি!
৫ মিনিটে ঘণ্টা গড়ায় সপ্তাহে,
এরপরে মাস, তারওপরে বছর......
৫ মিনিটে পাঁচ-পাঁচটি বছর এলেও কী এসে যায়?
দ্বৈত বলে, ফোনটা কেন দেবে, বলতো? দায়টা কীসের?
চুপ করে যাই! কিছু উত্তরের প্রশ্ন হয় না।
পৃথিবীর যত অণু, পরমাণু,
সমস্ত কিছু,
স্বার্থপরতায় এত যে মেশা,
সত্যি পারি না দম নিতেও!
আহা, এই পৃথিবীর বাইরে গিয়ে
একবুক ভরে খুব দম নিয়ে যদি ফিরে আসতাম!
তবু আশ্চর্য এই বেঁচেথাকাটুকু--একটু হলেও স্বার্থ গিলেই,
তা না হলে যায় না বাঁচা!
স্বার্থহীনে দেয় নাকো ঠাঁই এই পৃথিবী,
ভারী লোনাজলে ভেসে যেতে হয় দূর অজানায়।
বারো।
তোমার চুলে এই আঙুলের ভাঁজ....
ভুলে গেছ, শানু?
আবারও ফিরে আসবে বলে
আর কখনও আসলে নাতো!
আজো তো আমি রই চেয়ে পথ
পথের বাঁকে......
ওহে, বুঝি তো সবই!
আমি অভাগিনী ফালতু মানুষ,
আমারও খবর কে রাখে, বলো!
এ মন নিলে, শরীরও নিলে,
প্রাণখানিও তুমিই নিলে!
তোমার ও প্রাণে ঢুকতে যাব...
অমনি দেখি--
সেইখানেতে অন্য রাণী!
নেশা যত আজ, ঠোঁটেই কেবল,
চোখ তো গেলই, ও পোড়াপাখি!
অধর যেন না যায় ওরে,
যায় যাক না সে ভুল আঁখি!
কিছু ভোর থাকে, রাত দেখে না,
কিছু রাত আছে, ভোর পায় না।
কালো প্যাঁচাটি কখন থেকে সন্ধে ফুরায় রাতের আশায়,
এক বিন্দু নিশির শিশির বেঁচে থাকে শুধু ভোর হবে তাই।
রাত ফুরিয়ে ভোর হয়ে যাক,
ভোর মাড়িয়ে সকাল মাতাক,
সকাল গড়িয়ে বিকেল নামাক,
......সন্ধে কি রাত--আমায় বাঁচাক!