আমায় ভালো না বাসো, তবু ভালোবাসার প্রলেপে ঢেকে দিয়ো না এতটা। তোমার একরাশ উপেক্ষা আর তাচ্ছিল্যের ব্যারিকেড পেরিয়ে আমি তোমার কাছে যেতে পারি না। আমায় খুঁচিয়ে মারে, রক্তাক্ত করে, এমন মানুষ অনেক আছে। আমায় কাছে টানে, অথচ মনে টানে না, এমন মানুষও অপ্রতুল নয়। এদের মাঝে ভালোবাসা বোঝার কাউকে আমি কখনও দেখিনি। ভালোবাসা পাবার আকুতিতে ঝরা-অশ্রুর কৈফিয়ত চাইবার, আমার নিঃশব্দ প্রেমকে ভ্রূকুটিতে বিদ্ধ করবার মানুষ আমি চোখ মেললেই দেখি। ওদের হাসিকে আমি বিশ্বাস করতে পারি না। ছুড়ে ফেলে দেবার, আহত করবার অনেকেই আছে। শুধু মায়ায় আর প্রেমে বুকে টেনে নেবার কেউ নেই। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখো, সেখানে কোনও মিথ্যে নেই, কোনও ভান নেই… আমি করুণা চাইছি না, আমি একটু আশ্রয় চাইছি। একটা ঘর, ক্লান্ত হলে যেখানে একটু বসা যায়, খিদে পেলে যার ছাদের নিচে দুমুঠো খাওয়া যায়, যেখানে গেলে কেউ কোনও দিন ফিরিয়ে দেবে না, উঠোনে পা রাখলে দেখা যায় প্রতীক্ষারত একজোড়া চোখ, যেখানে ভালোবাসা পেলে আকাশ নেমে আসে, ঘুম এলে কোনও কুণ্ঠা ছাড়াই যেখানে ঘুমিয়ে পড়া যায়… তেমন একটা ঘর চাইছি তোমার কাছে। দেবে না? আমি বড্ড ভালোবাসার কাঙাল, তাই বলে মনে প্রেম না এলেও আমায় প্রেম দেখিয়ো না, শীতল চোখে তাকিয়ে থেকে ঠোঁটে আদর এনো না… মিনতি করে বলছি, ভ্রমের সাগরে আমায় আর ডুবিয়ো না! ভ্রম কেটে গেলে, বড়ো কষ্ট হয়, যন্ত্রণায় কাঁদতে ইচ্ছে করে। অতটা দুঃখ নেওয়া যায় না, আমি আর পারি না… আমায় মিথ্যে করে ‘ভালোবাসি’ বোলো না, মায়ায় বেঁধো না। তার চাইতে বরং ছুড়ে ফেলে দিয়ো, ওরা যেমনি দেয়। ইদানীং আমি ভালোবাসার কথা শুনলে আঁতকে উঠি। মনে হতে থাকে, কে যেন আমার হৃদয়টাকে ছিঁড়ে ফেলতে চাইছে! হয়তো আমার মধ্যে আর প্রেম নেই, কেবলই প্রেমের ক্ষুধা আছে। যদি সত্যি কখনও, ভালোবাসায় সমস্ত বিশ্বাস উঠে যায়, সেদিন আমি কোথায় যাব? আর বাঁচব কী করে? আমি ঘৃণার চাদর গায়ে জড়াতে জানি না, গায়ে ভালোবাসার চাদরটাও কেউ রাখতে দিচ্ছে না। বলো, আমি কোথায় যাব? হয়তোবা, পূর্বজন্মের কোনও ঋণ এখনও শোধ করে চলেছি, আমার গায়ে কোনও চাদর নেই…নয় ভালোবাসার, নয় ঘৃণার। আমি এই নগ্নতার হাত থেকে কবে মুক্তি পাবো? আর কতটা প্রায়শ্চিত্ত করলে পরে প্রায়শ্চিত্ত করা হয়?