এক অনুসন্ধিৎসু প্রমত্ততায় তোমায় ছুঁয়েছি, তবেই আত্মদর্শনের আনন্তর্যে মিলেছে পরমোৎকৃষ্টতা, যার অভ্যাগমে অকৃত্রিম অনুভূতির অদূরবর্তিতা প্রতিমুহূর্তে আমাকে উৎকণ্ঠিত করেছে।
অনবস্থিত চিত্তদাহে, এই বিশেষ আত্মিক সংযোগে পরিতুষ্ট অন্তিম যাত্রার শ্রান্তিলগ্নে মিলেছে বড়ো অভিমানী এক অপার্থিব শক্তি—
আত্ততে রেখে লালন না করলে যা হারিয়ে যেতে বাধ্য।
তোমার হৃদয়ঙ্গমেই একমাত্র তা সম্ভবপর হয়েছে।
তোমার অনুভব কখনও আমায় ক্লান্ত করে না,
কখনও আমাকে গভীর নিদ্রার আচ্ছন্নতায় মগ্ন হতে দেয় না।
অতীন্দ্রিয় দৃষ্টির ব্যাপ্তিতে নিবদ্ধ এই আত্মস্বরূপ।
জানতে চেয়েছিলে না, আমি কেমন আছি?
তোমার অনুচিন্তনে যতক্ষণ লিখে যাই, ততক্ষণই আমি ভালো থাকি।
সেই উপেক্ষিত শাব্দিক ভাষার ছন্দপতনে আবদ্ধ আমি—
যার আবির্ভূত মর্মকথা
তোমার হৃদয় জুড়ে পৌঁছে দিতেই শুরু হয় এক গভীর প্রতীক্ষা।
আমার অনুভূতির অব্যক্ত, প্রজ্জ্বলিত উপকথা
যতক্ষণে স্পর্শ করে আসে তোমায়,
পরমুহূর্তেই
তোমার প্রত্যুত্তরে তছনছ হয়ে যায় আমার যন্ত্রণার খড়কুটো।
শান্তির স্পর্শতায় ব্যাকুল থাকে এই মন।
ঠিক তক্ষুনি আমি বেঁচে থাকি।
আমার এই বেঁচে থাকা আর ভালো থাকার দূরত্বে
তোমার আকস্মিক আগমন অব্যবহিত।
ভালোবাসার মানুষের কাছে হয়তো কৃতজ্ঞতা থেকে যায় অনন্তকালের সীমানায়।
তাই অদৃষ্টের পুনর্লিখনে আমিও তোমার কাছে ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ।
নিজেকে ভালো রাখতে এর থেকে বড়ো শক্তির সাক্ষাৎ আমি এ জীবনে আর কখনও অর্জন করতে পারব না।
এই আত্মসমর্পণে পুরোনো জীবনের স্থৈর্য—
যা খুঁজে পেতে চরম অকৃতকার্যতা এনেছিল আমার আমি—
তোমার অনুভূতির দীপ্তি সেই আত্মস্থের পূর্ণরূপ দিয়েছে।
সাধারণ নিয়মের বহির্ভূত এই ঐশ্বরিক মুগ্ধতার স্পর্শ—
তা খুব সহজে ধরা দেয়নি আমার কাছে।
চরম অক্ষমতার ধূম্রজাল থেকে বেরিয়ে
তোমার মনের গভীর পরিব্যাপ্তিতে বিচরণ কখনোই সহজ ছিল না।
আমি তো তোমার মনের মতো হতে পারিনি।
সেই ক্ষণে মনে হয়েছিল—এই জায়গাটা আমার জন্য নয়।
পরক্ষণেই, তোমার হৃদয় ছুঁয়ে দেখতে—
একসহস্র মুহূর্তের স্রোতকে সাক্ষী রেখে শুধু মনে হয়েছে—
এই জায়গাটা কেবলই আমার, একমাত্র আমার।
আশ্চর্যজনক!
তুমিও কীভাবে তোমার সবটা জুড়ে আমায় রেখেছ?
জানো, তুমি ভয়ংকর রকমের সুন্দর!
আমাদের আর দেখা না হলেও—
আমাদের ভেতরের মানুষটার শুদ্ধতম অনুভূতির সাথে সাক্ষাৎ হয় প্রতিদিন।
আমায় এভাবে করে তোমার কাছাকাছি আমৃত্যু ঘেঁষে থাকতে দেবে তুমি?
(—নিশ্চয়ই।
তোমার মতো করে যে আমার মনের এতটা গভীরে যেতে পারেনি আর কেউই!)
এত দীর্ঘপথের ব্যবধান আমাদের!
এত দূরে থেকেও কীভাবে সর্বক্ষণ তোমার অস্তিত্ব ছুঁয়ে থাকি আমি?
হঠাৎই নিজেকে বড়ো অদ্ভুত লাগে—
আমি বোধ হয় তোমাতেই হারিয়ে গেছি।
নিজেকে ফিরে পেতে চেয়েছিলাম কি কখনও এভাবে?
না চাইতেই আমাকে অনেকটা দিয়ে দিয়েছ তুমি।
সবটা বড়ো কাল্পনিক, অসম্ভব মনে হলেও—
ভীষণ রকমের বাড়াবাড়িতে তুমি অনেক বেশি সুন্দর, অনেকটাই অন্যরকম।
তোমাকে ভালোবাসার সৌভাগ্যই বুঝি আমার এই অধ্যায়ের সমাপ্তি!