৩৬তম বিসিএস প্রিলির প্রস্তুতিকৌশল: ইংরেজি (কালের কণ্ঠ)

Stop smoking.

Stop to smoke.

পার্থক্যটা কোথায়? Stop’য়ের পর কি সবসময়ই verb+(-ing) হবেই? এটা বুঝতে কী লাগে? শুধুই গ্রামার? নাহ! কমনসেন্সও লাগে।

ইংরেজিতে ভাল করার মূলমন্ত্র ২টি:

এক। বানান ভুল করা যাবে না।

দুই। গ্রামাটিক্যাল ভুল করা যাবে না।

এই ২টি ব্যাপার মাথায় রেখে একেবারে সহজ ভাষায় ইংরেজিতে লেখার চর্চা করুন। ফেসবুকে খুব সহজ ইংরেজিতে একটু বড়-বড় স্ট্যাটাস আর কমেন্ট লিখুন।

ওপরের কথাগুলি কেন বললাম? ৩৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ইংরেজি প্রশ্নটা দেখলে বুঝতে পারবেন, লিখিত পরীক্ষার কিছু-কিছু ব্যাপার মাথায় রেখে প্রিলির প্রস্তুতি নিলে চাকরি পাওয়াটা সহজ হবে।

আরেকটা কাজ অবশ্যই করবেন। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল অনুবাদ। খুব একটা সহজ অনুবাদ বিসিএস পরীক্ষায় সাধারণত কখনওই আসে না। এই অংশটা এখন থেকেই একটু ভিন্নভাবে পড়ে রাখতে পারেন। বিভিন্ন ইংরেজি আর বাংলা পত্রিকার সম্পাদকীয়কে নিয়মিত অনুবাদ করুন। কাজটি করাটা কষ্টকর, কিন্তু বাজি ধরে বলতে পারি, এটা নিয়মিত করতে পারলে খুবই কাজে দেবে।

এখন প্রিলি নিয়ে কথা বলছি। ল্যাঙ্গুয়েজ পার্টে গ্রামার এবং ইউসেজের উপর প্রশ্ন আসবে। কয়েকটি গাইড বই এবং জব সল্যুশন থেকে প্রচুর প্র্যাকটিস করুন। ইংলিশ ফর দ্য কম্পিটিটিভ এক্জামস্, অ্যা প্যাসেজ টু দ্য ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ, অক্সফোর্ড অ্যাডভান্সড লার্নারস ডিকশনারি, লংম্যান ডিকশনারি অব কনটেম্পোরারি ইংলিশ, মাইকেল সোয়ানের প্রাক্টিক্যাল ইংলিশ ইউসেজ, রেইমন্ড মারফির ইংলিশ গ্রামার ইন ইউজ, জন ইস্টউডের অক্সফোর্ড প্র্যাকটিস গ্রামার, টি জে ফিটিকাইডসের কমন মিস্টেকস ইন ইংলিশ সহ আরও কিছু প্রামাণ্য বই হাতের কাছে রাখবেন। এসব বই কষ্ট করে উল্টেপাল্টে উত্তর খোঁজার অভ্যেস করুন, অনেক কাজে আসবে। যেমন, এনট্রাস্ট শব্দটির পর ‘টু’ হয়, আবার ‘উইথ’ও হয়। ডিকশনারির উদাহরণ দেখে এটা লিখে-লিখে শিখলে ভুলে যাওয়ার কথা না। ইংরেজি শিখতে হয় লিখে-লিখে। ইংরেজির জন্য বেশি পরিশ্রম করুন, অনেক কাজে লাগবে।

ভোকাবুলারির জন্য ম্যাক ক্যারথি এবং ও’ডেলের ইংলিশ ভোকাবুলারি ইন ইউজ (সবগুলো খণ্ড), নর্ম্যান লুইসের ওয়ার্ড পাওয়ার মেইড ইজি সহ দুএকটি দেশীয় বইও দেখতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার আগের বছরের প্রশ্নগুলি থেকে শুধু ভোকাবুলারি সেগমেন্টটা সল্ভ করলে কাজে লাগবে। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ুন। বিভিন্ন ইস্যুর উপর রিপোর্ট, সম্পাদকীয় আর সম্পাদকের নিকট পত্র অর্থ বুঝে সময় নিয়ে পড়ুন; রিটেনেও কাজে লাগবে।

লিটারেচারের প্রস্তুতি নেয়ার সময় মাথায় রাখবেন, দুএকটি প্রশ্নের উত্তর যাঁরা ইংরেজিতে অনার্স-মাস্টার্স, তাঁরাও পারবেন না। নেগেটিভ মার্কিং হয় এমন কম্পিটিটিভ পরীক্ষার নিয়মই হল, সবক’টার উত্তর করা যাবে না। আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ গাইড বই আর সাথে ইন্টারনেটে ইংলিশ লিটারেচার বেসিকস্ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে কাজে আসবে।

৩৫তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষায় একটা প্রশ্ন ছিল এরকম: Women are too often ___ by family commitments. (ক) confused (খ) controlled (গ) contaminated (ঘ) constrained

এটা কেন লিখলাম? আমাকে একটা প্রশ্ন প্রায়ই শুনতে হয়: “ভাইয়া, ইংলিশ গ্রামারের জন্য কোন বইটা পড়ব?” আমি দুইটা বইয়ের নাম বলিঃ Oxford Advanced Learner’s Dictionary আর Longman Dictionary of Contemporary English. সাথে আরও কিছু বইয়ের কথাও বলি। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ওরা তো আমার কাছ থেকে গাইড বইয়ের নামই জানতে চেয়েছিল। আর আমি কিনা! অথচ গতবার গাইড বই থেকে কয়টা প্রশ্ন ‘কমন’ এসেছে? আপনি লংম্যানের ডিকশনারির constrain এন্ট্রিটাতে গিয়ে দেখুন। ওই এন্ট্রির শেষ একজাম্পলটা: Women’s employment opportunities are often severely ‘constrained’ by family commitments. কী বুঝলেন? প্রশ্ন কোথা থেকে হয়? যাঁরা প্রশ্ন করেন ওদের কি সময় আছে গাইড বই দেখে প্রশ্ন করার? কিংবা কোচিং সেন্টারের গাদা-গাদা ‘শিটমার্কা’ শিট পড়ার? সত্যিই নেই। গতবারের বিসিএস পরীক্ষা সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে। একটা গ্রামারের প্রশ্ন না পারলে আমরা গাইড বই খুঁজতে শুরু করি। একেক গাইডে একেকরকমের উত্তর। এরপর কোচিংয়ের স্যারদের পেছনে ছুটি। কী দরকার, ভাই? ওই গাইড বইয়ের লেখক কিংবা ওই কোচিংয়ের স্যার কি আপনার চাইতে খুব বেশি জানেন? কী হয় একটু কষ্ট করে ডিকশনারির এন্ট্রিতে গিয়ে একজাম্পলগুলো স্টাডি করে শিখলে? আমি ডিকশনারি মুখস্থ করতে বলছি না। আমি বলছি, যেসব প্রশ্নের উত্তরে কনফিউশন থাকবে, সেসব প্রশ্নের উত্তরের কনফিউশন দূর করার দায়িত্বটা ডিকশনারিকে দিয়ে দিতে। এতে অনেক মূল্যবান সময় বেঁচে যাবে, আপনি সঠিক জিনিসটাও শিখতে পারবেন। উদাহরণ সহ শিখলে মনে থাকে সবচাইতে বেশি। প্রথম-প্রথম একটু কষ্ট হলেও এভাবে করে প্র্যাকটিস করে দেখুন, কয়েকদিনের মধ্যেই নিশ্চিতভাবেই এর সুফল পাবেন। একটা প্রশ্ন কিন্তু আরও কয়েকটা প্রশ্নের সূতিকাগার। ওই বইগুলো হচ্ছে সকল গাইড বইয়ের বাইবেল। ওখানে যা আছে, সেটাই কারেক্ট। ব্যাপারটা খুব কঠিন কিছু না। বই দুটোর পৃষ্ঠা উল্টে-উল্টে প্রশ্ন সলভ করা প্র্যাকটিস করবেন। প্রথম-প্রথম একটু বিরক্ত লাগবে, আস্তে-আস্তে অভ্যেস হয়ে গেলে সেটা নেশায় পরিণত হবে। আমি ‘আপনি আচরি ধর্ম শিখাও অপরে’ নীতিতে বিশ্বাসী। আমি নিজে ওই কাজটা করেছি, তাই আপনাদেরকেও করতে বলছি। এই কষ্টটা করতে না পারলে, আপনার জন্য একটাই পরামর্শ: ভুল শিখুন, ভুল করুন, ফেল করুন।

কিছু টিপ্‌স:

# প্রিলির জন্য কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, আজকের বিশ্ব, অর্থনৈতিক সমীক্ষা টাইপের বইপত্র পড়া বাদ দিন৷ একেবারেই সাম্প্রতিক বিষয় থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন আসে বড়জোর ৫-৬টা, যেগুলো শুধু ওই বইগুলোতেই পাওয়া যায়৷ এর মধ্যে অন্তত ২টা পেপারটেপার পড়ে, টিভিতে সংবাদ শুনে আনসার করা যায়৷ বাকি ৪টাকে মাফ করে দিলে কী হয়? এই ৪ মার্কসের জন্য অ্যাতো পেইন কোন দুঃখে পাব্লিক নেয়, আমার মাথায় আসে না৷ আসলে, ওই যন্ত্রণাদায়ক বইগুলো পড়লে নিজের কাছে কেমন জানি পড়ছি-পড়ছি মনে হয়৷ এটা অতি উচ্চমার্গীয় ফাঁকিবাজির পর্যায়ে পড়ে৷

# একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে, যেগুলো বারবার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ কারণ এই ধরনের একটি প্রশ্ন আরও কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷ প্রিলিমিনারি হাইয়েস্ট মার্কস্ পাওয়ার পরীক্ষা নয়, স্রেফ কাট-অফ মার্কস পেয়ে পাস করার পরীক্ষা৷ আপনি ১৯০ পেয়ে প্রিলি পাস করা যে কথা, ১৩০ পেয়ে প্রিলি পাস করা একই কথা। অপ্রয়োজনীয় মার্কসের বাড়তি শ্রম রিটেনের প্রিপারেশন নেয়ার পেছনে দিন, কাজে লাগবে। কে কী পারে, সেটা নিয়ে কম ভাবুন। আপনি যা পারেন, সেটার চাইতে অন্যরা যা পারে, সেটা শেষ পর্যন্ত বেশি কাজে আসবে, এরকমটা নাও হতে পারে।

এ লেখাটি ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার কালের কণ্ঠের ‘চাকরি আছে’ পাতায় ছাপা হয়েছিল। লেখাটির লিংক নিচে দিচ্ছি:

http://www.kalerkantho.com/feature/chakriache/2015/09/09/266312