৩০তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম ১০জন

প্রায়ই আমাকে একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়: ভাই, আপনি যে ৩০তম বিসিএস পরীক্ষায় ফার্স্ট হইসেন, তার প্রমাণ কী?

দুঃখজনকভাবে আমি তো আর বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের অ্যানুয়াল রিপোর্ট সাথে নিয়ে ঘুরি না, তাই ‘নগদ প্রমাণ’ দেখিয়ে উনার অহেতুক কৌতূহলটা তখুনিই নিবৃত্ত করতে পারি না। পরের বৌ সুন্দরী হওয়ার দুঃখে উনি কাঁদতে থাকেন, আর মনেমনে আমাকে বলেন, “শালা বাটপার!” (ভাবখানা এমন, যেন আমি নিজেই পিএসসি’র কর্ণধার হয়ে নিজেকে প্রথম ঘোষণা করেছি!)

গতকাল ‘বিসিএস: আওয়ার গোল’ গ্রুপে এটা নিয়ে একজন অতি উৎসাহী ভদ্রলোক একটা পোস্ট দিলেন। লোকজন প্রবল উৎসাহে আমাকে পচানোর জন্য জীবনবাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। ওই ভদ্রলোকসহ আরও কিছু ব্যক্তি খুব কটুকটু কথাবার্তা লিখে কিংবা সমর্থন জানিয়ে (মানে, লাইক দিয়ে) এই সিদ্ধান্তে এলেন, “সব মিডিয়ার সৃষ্টি। সুশান্ত একটা ফাউল, নিজেকে আজাইরা হুদাই ফার্স্ট বলে জাহির করে।” (পোস্টটি এখন আর নেই। ওই ভদ্রলোক সরিয়ে ফেলেছেন। আমি পোস্টটি রিমুভ না করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করেছিলাম। পোস্টটি রাখতে ওই মেরুদণ্ডহীন ভদ্রলোকের সাহসে কুলায়নি। কারণ, উনি নিজেও খুব বাজেবাজে কথা লিখে যাচ্ছিলেন আমার সম্পর্কে এবং অন্যান্য বাজে কমেন্টগুলিতেও লাইক দিয়ে সমর্থন জানাচ্ছিলেন।)

বই পড়ছিলাম, তাই ফেসবুকে ছিলাম না, ইনবক্সে অনেকেই এই ব্যাপারটা নিয়ে টেক্সট পাঠিয়েছেন, ছিলাম না বলে খেয়াল করিনি; এক ছোটভাই ফোন করে ফেসবুকে আসতে বলল, ওর কথায় এলাম, এসেই দেখলাম, সানি ভাই উনার কথার সমুচিত জবাব দিয়েছেন আমাদের রেজাল্ট বের হওয়ার বছরের (২০১১) বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনের মেধাতালিকার পৃষ্ঠাটির ছবি তুলে শেয়ার করে দিয়ে। আমার অনুপস্থিতিতে এই অস্পষ্টতা দূর করার কাজটি করে উনি আমার আপন ভাইয়ের কাজটিই করলেন, যে কাজটি সবসময়ই করে থাকে আমার আরও কিছু খুব-খুব প্রিয় মানুষ। শুধু আপনার ভাইই আপনার পাশে থাকবে, এমনকি যখন পুরো পৃথিবী আপনার পাশ থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে।

আমার হাতের কাছে এই মুহূর্তে বার্ষিক প্রতিবেদনটি নেই, তাই সানি ভাইয়ের দেয়া ইমেজ ফাইল দুটিই শেয়ার করলাম।

যাঁদের বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, তাঁদের জন্য আমি মেধাতালিকাটা নিচে লিখে দিচ্ছি:

প্রথম. সুশান্ত পাল (বিসিএস শুল্ক ও আবগারি)

দ্বিতীয়. ফারহানা হামিদ টিনা (বিসিএস স্বাস্থ্য)

তৃতীয়. সৈয়দ শাহ্ সাদ আন্দালিব (বিসিএস পররাষ্ট্র)

চতুর্থ. এ এস এম সায়েম (বিসিএস পররাষ্ট্র) ……… (ক্যাডারের নামটা ভুল টাইপ করা হয়েছে)

পঞ্চম. মোঃ গোলাম সাকলায়েন (বিসিএস পুলিশ)

ষষ্ঠ. মোঃ মনোয়ার মোকাররম (বিসিএস পররাষ্ট্র)

সপ্তম. মোঃ বশির (বিসিএস পররাষ্ট্র)……… (ক্যাডারের নামটা ভুল টাইপ করা হয়েছে)

অষ্টম. মোঃ রিয়াজুল ইসলাম (বিসিএস শুল্ক ও আবগারি) ……… (ক্যাডারের নামটা ভুল টাইপ করা হয়েছে)

নবম. মোঃ বেলাল হোসেন (বিসিএস পররাষ্ট্র) ……….. (হোসেইন টাইপ করা হয়েছে, গেজেটে হোসেন আছে)

দশম. ফজলে লোহানী বাবু (বিসিএস পররাষ্ট্র)

লিখিত পরীক্ষায় আমি পেয়েছিলাম ৬৪৪। ভাইভা পরীক্ষার মার্কস জানা যায় না।

যাঁরা বিসিএস পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাঁদের জন্য একটা ক্যুইজ: ৩০তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের মেধাতালিকায় ফারহানা হামিদ টিনা ষষ্ঠ হয়েছিলেন, প্রথম হয়েছিলেন রেবেকা সুলতানা। তাহলে, সম্মিলিত মেধাতালিকায় ফারহানা হামিদ টিনার নাম এল, কিন্তু রেবেকা সুলতানার নামটা এল না কেন?

কেউ এটার সঠিক উত্তর দিতে পারলে, (শুধু প্রথম উত্তরদাতাকে) সত্যিই কফি খাওয়াবো।

(অনেক পুরনো লেখা)

Content Protection by DMCA.com