তুমি সন্ধেবেলার টুকরো-টুকরো মেঘ হয়ে এলে,
হতেম আমি ঠিক এক ফালি সেই রুপোলী চাঁদ--শুভ্র ফেনিল,
তোমার আমার কথা-গল্প আছে যতো,
ছড়িয়ে দিতেম, হারিয়ে যেত দূর ছায়াপথে!
রাত জাগত নির্ঘুম চোখে, তার সাথে আমি।
বিষণ্ণ সব তারার মেলা হাসে নিশিভর,
ওদের অবাক চোখে কীসের নেশা,
প্রিয়র পরশ বয়ে হাওয়া উড়ে আসে
আঁখিপল্লবে জাগায় কেমন হারানো সে তৃষা!
আনমনে ভাবি, তবু আছো পাশে,
দুইটি নয়ন বিদ্রূপে বলে--নেই,
জানি, তবু ভালোবাসি, তবু জেগে থাকি,
তোমাকেই তবু চাই বিশ্বস্ত ভুলেই!
একটা হিম জোছনা হবে? আমায় দেবে?
মখমলের ওই চাদর ছাড়াই আসব আমি
চুপিচুপি--জোছনাস্নানে মাতব দুজন।
ঝরা পাতার শরীর ঝেরে শিশির নেবো,
পা ধুইয়ে হিমরাত্রে বিরহী হবো,
থরোথরো কাঁপবো ভীষণ, তারপরেতেই--
আসবে তুমি। ম্যাপল পাতা গুঞ্জনে খুব মাতবে তখন,
ঝরবে পাতা, ঝরবো আমি,
ফুলগুলি সব খিলখিলিয়ে হাসবে দেখো, ওদের সাথে দেখবে আমায়,
এমনি করেই পদ্মদিঘি আমার চোখে ছড়বে যখন,
দৃষ্টি তোমার আটকে যাবে আমার অধীর প্রতীক্ষাতে।
হলই নাহয়! তারপরেতে?
চন্দ্র যখন নগ্ন হবে পূর্ণ হয়ে,
তোমার বুকে নাচবে দারুণ হৃদয় আমার,
ভেতরে আমার চলবে বয়ে রক্ত তোমার--উষ্ণ ভীষণ!
বিশ্বাস করো, কল্পনাতে মানসী তোমার যেমনি আসে,
আমিও ঠিক ওই অমনই!
যেমনি করে তোমার বুকের ওই গভীরে
ঠাঁই দিয়েছ আপন করে,
আমি ঠিক ওই অমনই--সময় করে মিলিয়ে নিয়ো!
কেমন ভীষণ ন্যাকাবোকা, তাই না, বলো?
যে চোখ থাকে অপেক্ষাতে, মিথ্যে সে চোখ বলে নাকো,
তোমার সকল পৃথিবীকে কী সহজেই নিল কিনে,
স্বচ্ছ চোখের, ভেজা ঠোঁটের মায়া দিয়ে,
শুদ্ধ প্রেমের পরশ বেয়ে,
সাজিয়ে দিল তোমার যতো ভাঙাভাঙা তট,
মরুভূমিতে তুলল কী ঝড়, জল ঝরাল পাহাড় ফুঁড়ে--
এসব কিছুই ভুলভাল সব মিথ্যে বেচে কেনা খেলনা, আর খেলো সুখ?
চেয়ে দেখো—
যেদিন আমি থাকবো না আর, সেদিনটাতেও মিথ্যে করে যুগল চোখের বলবে তোমায়--
এখনও আমি আছি বেঁচে দিব্যি কেমন!
বিশ্বাস করো, আমি ঠিক ওই অমনই, যেমন করে ভাবছ তুমি!
এই শোনো না, তোমার পাশে একটুখানি বসতে দেবে?
একটু তোমার কাছে ঘেঁষে স্নানের পরে তোমার দেহের ঘ্রাণটুকুকে জড়িয়ে নিতাম এই শরীরে--এই সকালের স্নিগ্ধ হাওয়ায়।
আমি অমন করেই ভালোবাসি--
কান্না দিয়ে, পাঁজর ভেঙে, হৃদয় খুঁড়ে!
আলো নিভে যাক, আসুক আঁধার, স্বস্তি পালাক যেমন করেই--তবু তোমাকেই ভালোবাসি!