সৃষ্টি করতে ঠিক কী কী লাগে, তা জানি না। তবে এটা খুব স্পষ্ট করে জানি, দুঃখ ছাড়া জন্ম দেওয়া যায় না।
যতক্ষণ না বুকের ভেতরের খচখচানিটা এক্কেবারে থেমে যায়, সে পর্যন্ত জন্ম দেবার জ্বালাটা সহ্য করে নিতেই হয়। আর হবে না-ইবা কেন? জন্মদাতা যে!
জন্ম আর সৃষ্টি একই জিনিস, বাপু! যা বলে লোকের একটুখানি বেশি সুবিধে হয় আর কি!
যতক্ষণ না নিজেকে পুড়িয়ে মারা যায়, ততক্ষণ অবধি জন্ম দেওয়া যায় না। যেতই যদি, সবাই-ই তো জন্মদাতা হতে চাইত তবে!
এই যে লিখছি, আঙুল ব্যথা করছে, অশান্ত মন কলম-খাতা ছুড়ে ফেলতে চাইছে---সবসময়ই হয় এমন; তবুও কি এই লেখা নামের জন্মদানটা বন্ধ করতে পেরেছি আমি? এ এক আশ্চর্য যাত্রা...পথে পথে পায়ে রক্ত ঝরে, তবু কিছুতেই এ যাত্রা যায় না থামানো!
আবার কত কত দিন যে সৃষ্টি করতে গিয়ে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছি, কিংবা নিজেকে জোর করেই টেবিলে বসিয়ে রেখেছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা... মাথায় কিছুই না আসা সত্ত্বেও, অমন শত-হাজার চেষ্টা করেও কি নিজের ইচ্ছেয় একটাও লাইনের জন্ম দিতে পেরেছিলাম সেদিন?
আমার গা কুটকুট করছে, ভেতরকার আগুনের ফুলকি বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইছে, আমি দেখাতেও পারছি না, ঠিকভাবে বোঝাতেও পারছি না, ...মুখ টিপে টিপে হাসছি শুধুই।
এই হাসিতে কতটা যে কষ্ট মাখামাখি হয়ে আছে, যদি কেউ বুঝত! হে ঈশ্বর, তোমার সৃষ্টিকে কেন তুমি সৃষ্টিশীল বানালে?