৩১। মিলনের পথে বাধ সাধল মরণ, হৃদয় তাকে করল আরও বরণ। ভালোবেসে শুধু ওটুকই পুরস্কার, মৃত্যুও তাকে করেছে জীবনসার।
৩২। জেনেই তুমি গেছ আমার কাছে, আমি তোমায় গভীর ভালোবাসি; বলব নাকো, কত যে ব্যথা আছে, ক্ষতি যা হোক, থাকবে মুখে হাসি।
৩৩। একলা হয়ে বিষাদ মেখে, কাঁদি বসে ঘরের কোণে, তোমার কথাই সারামনে। কতদিন তোমায় না দেখে, বাঁচি তোমার স্বর না শুনে, বয়স বাড়ে বছর দ্বিগুণে।
পাঠাতে এপারে সাজিয়ে রেখো ফেরি, আসতে আমার হবেই না তেমন দেরি!
৩৪। কতদিন আজ গত হয়ে গেল, তবু ব্যথার সে দাগ মুছল না। সময়ের সাথে কষ্ট কি কমে? কই, বিচ্ছেদ-জ্বালা ঘুচল না!
৩৫। নিত্য সে যে বাজে আমার মনের মাঝে হয়ে ভালোবাসার ধন, সে হয় কি বিস্মরণ?
৩৬। শোক আছে যা, মানে না সান্ত্বনা, ক্ষত আছে যা, ওষুধেও সারে না।
হৃদয় যে কত বেদনায় গড়া, অর্ধেকটা তার যায় যে পড়া।
৩৭। হারানোর কী ব্যথা, জানে বিধাতা আর যে হারায়, বাকিরা কেবল করে অনুমান আর কথাই বাড়ায়।
বিধাতা বলেন, শান্ত হও, ধৈর্য ধরো, নীরব থাকো, প্রেয়সী তোমার আজও বেঁচে আছে, হৃদয়ে দেখো।
৩৮। আঁধার ভেঙে চেয়ে থাকি শুধু, নেই ঘুম দুই চোখে, সে যদি ফেরে কোনো জাদুতে, ফিরিয়ে দিব্যলোকে!
৩৯। বিরহে তোমার সকলই অন্ধকার, স্মৃতিঝড় ওঠে, মনে বেদনা হানে, শূন্য এ ঘর, হৃদয়ে ঘন হাহাকার, অপেক্ষা…কবে স্বর্গ মিলন আনে!
৪০। হে ঈশ্বর! এবার দাও তারে চিরশান্তি প্রাণে! মরার আগে বেচারি পায়নি তা কোনোখানে!
৪১। জাগে কত ব্যথা, তবু স্মরণে মধুর, স্মৃতি যা তোমার, প্রিয়! কত যে সুন্দর, বড়ো মনোহর…আহা, সবটাই তার অমিয়! আঁধার ভেঙে আলোর পথে স্মৃতি চলে নিয়ে হাত ধরে, ওইখানে দেখি শান্তির ঘর, স্মৃতি সৌধ যেখানে গড়ে।
৪২। নাওনি বিদায় যাবার কালে, খাওনি চুমু ছেলের গালে, অদৃষ্ট তোমায় হঠাৎ নিলেন তুলে! বাপ-ছেলে'র মনের মাঝে, স্মৃতি তোমার নিত্য বাজে, আদরের ধন যাই কী করে ভুলে?
৪৩। এই নিঝুম নিরালায় তোমাকেই মনে পড়ে, নিজেরই চোখের আড়ালে অশ্রু পড়ে ঝরে। ব্যথায় হিয়া কুঁকড়ে আসে, ধরে রাখাই দায়, নিঠুর বিধি তোমায় নিল, খুন করল আমায়।
৪৪। সময়ের সাথে সাথে হয় শোক যদিও ক্ষীণ, স্মৃতি তারে জীবিত রেখে করে চিরনবীন।
৪৫। এসো…নয় গোপনে, নয় ভয়ে, নয় স্তিমিত নূপুর পায়ে, এসো…যেখানে রৌদ্রের ঘায়ে ত্রস্ত বসুন্ধরা, এসো…দেহাতীত দেহে, মৃত্যু সরিয়ে, স্বস্তি মেখে গায়ে, এসো…আলো যেখানে সূক্ষ্ণ আলোতে ভরা।