লিপি ধূসরিত: এগারো

১৫১।
চলেছি পথে নিজেকে নিয়েই,
বলেছি কথা নিজের সাথেই,
বলেছে আমি নিজেই আমায়:
নিজের দিকে নিজেই দেখো,
নিজের ভালো নিজেই বুঝো,
কেই-বা আর ভাবে তোমায়?




চেয়েছি তাই নিজের দিকেই,
দিয়েছি জবাব নিজের স্বরেই,
দুঃখ কি সুখ, নিজের পথেই।
দেখলে দেখো যেমন‌ই দেখায়,
ভাবলে ভাবো যেমন‌ই ভাবায়,
থাকব তবু ঠিক এমন‌ই মতে।




১৫২।
কোথা হতে এসে আবার কোথায় চলে যাই,
আসা-যাওয়া'র মাঝে তা জানার কী উপায়?




১৫৩।
এত চটজলদিই জীবন কীভাবে হলো সাঙ্গ,
অনেক ভেবেও পাই না খুঁজে তার বৃত্তান্ত!




১৫৪।
দেবতার মন্দির! ধসে পড়ে সে-ও…
হৃদয়মন্দির! টিকে থাকে মৃত্যুতেও!




১৫৫।
বাঁচার সময়
পরিচয়ের গর্ব যে কত!
মরার পরে 
পরিচয় একটাই: মৃত!




১৫৬।
সবাই কি আর মরণশীল?
কেউ কেউ যে অমর!
আয়ু যাকে করে আপন,
মরলেই সে হয় পর!




১৫৭।
এ জীবনে যে রেখে না গেল কিছু,
বিস্মরণ ছোটে তার‌ই মৃত্যুর পিছু!




১৬৮।
বাঁচে যে-জন অনেক প্রাণের তরে,
জীবন যে তার শুরুই মৃত্যুর পরে।




১৬৯।
চিরতরে চলে গেলে আর কে রাখে মনে!
তবু কত বিদ্বেষ লোকে পোষে কী যতনে!




১৭০।
যারে করে বিশ্বাস ভুলেছি সকল ভাণ,
এ জীবনের মৃত্যু যত, সব তার‌ই দান!




১৭১।
কী হবে বলো পেয়ে এত মানুষের দেখা?
নিজের সাথে হয়েছে কি থাকতে শেখা?
মৃত্যুর পর যে অনন্তকাল কাটবে একা!




১৭২।
রয় না মানুষ, কর্ম‌ই রয়,
লাশের কি আর ধর্ম হয়?




১৭৩।
জীবন যাকে দিল না ফুল একটাও কোনোদিন,
মরণে তার কবরের গায়ে গোলাপ মেটায় ঋণ।




১৭৪।
: মৃত্যুর পর বলো স্বর্গ কে পায়?
: বেঁচে থাকতেই স্বর্গে যে যায়!




১৭৫।
যে-জন মর্ত্যে কিছুতেই মানুষ হলো না রে,
স্বর্গে গেলেও সে কি আর মানুষ হতে পারে?
Content Protection by DMCA.com