১। পৃথিবীর ধূলি হলো পবিত্র নবীন আলোর পরশে, দেবসন্তান ধরণীর মোরা, জেগেছি নবীন হরষে।
ঘুচবে এবার ধরণীর জ্বালা, পরে আলোকের শান্তি-মালা; এসেছে যত চেতনা-আলোক পৃথ্বী-মানব-মানসে, জাগল ধুলায় জ্যোতির চেতনা অসীম করুণাবরষে।
২। নূতন যুগের নবীন ঊষায় নবসুরে হিয়া জাগে, আমার পরানে নূতন জ্যোতি-মাধুরীর ছোঁয়া লাগে।
আনন্দ আমার অঙ্গে অঙ্গে, উথলে ওঠে সদা নৃত্যভঙ্গে; নীলিমার বুকে মেলেছি পাখা আলোকের অনুরাগে, নব সৃষ্টির কল্লোল আমায় নীরবে আজকে ডাকে।
৩। পেখম মেলে উঠি গো দুলে শুনে মেঘের মন্ত্র, আমার প্রাণেতে লাগায় দোলা পুলকমধুর ছন্দ।
কামনার ফণী করে বিদীর্ণ, বিষ-বন্ধন করি গো ছিন্ন, নৃত্যে নৃত্যে মেলে ধরি আমি বোধের বিজয়ানন্দ।
৪। ঘুরি ঘোষণা করে পুরো পৃথিবীতে শান্তির মহাবাণী, সত্যজ্যোতির বিজয় গেয়ে রাঙাই নিখিলখানি।
ভুলে যাও সবে বিভেদ-দ্বন্দ্ব, জাগাও প্রাণে প্রীতির ছন্দ; (আমি) হৃদয়ে হৃদয়ে মিলনমাধুরী আনি।
৫। সবারে আমার লেগেছে ভালো আলোর পরশ লভি, ঘুম ভেঙে উঠে সৌরভে-রসে জ্যোতির মন্ত্র জপি।
হৃদয়ে আমার ফোটে প্রেমহাসি, চিরসুন্দরে বড়ো ভালোবাসি, গোপনে বিজনে কাননে কাননে সব প্রীতি অনুভবি।
৬। আমি পঙ্ক ভেদে উঠেছি ছুটে নবীন আলোর ডাকে, অরুণ-কিরণ ললাটে আমার মধুচুম্বন আঁকে।
খুলে দল মোর বিধাতার পানে, নব নব রাগে, নব নব গানে; আকুতি আমার ধুলার বুকে অমৃতের জয় আঁকে।
৭। এবার ধরণী মুক্ত হবে গো হীনসত্তার বাঁধন দলি, নূতন আলোকে নব চেতনায় উঠবে মানবসত্তা জ্বলি।
ভেঙে যাবে ভবে মানুষী সুপ্তি, মানবাত্মার আসবে মুক্তি, খুলবে দু-চোখ ফুটলে হৃদয়ে জ্ঞানের কমলকলি।
৮। আমি যে প্রকৃতি, নিখিল-প্রসূতি, শশী-সূর্যের জননী, গ্রহ-তারাদল সন্তুতি মম, আমি যে ধরার ধরণী।
আমার বুকে বই যে সবারে, সযত্নে রাখি সবে স্নেহাধারে; অনল-অনিলে, নীলিমা-সলিলে আমি সবারই মাতৃ-ভরণী।
যত জীবকূল আছে চারিদিকে, মম সত্তায় নিয়েছে জন্ম, তরুলতা, পাখি, যত নর-নারী, সবাই বোঝে আমার মর্ম।
এল এবার নূতন আলোক আমার বুকে বুকে, ভরবে ধরণী সময়ে সময়ে শান্তির সুখে সুখে। নামলে আঁধার আলোর ঝরনা দেখাবে যে পথ, বোধের সরণী।