ডেটলাইন ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ আমার রুম থেকে বের হয়ে বাইরের লম্বাটে টানা বারান্দায় দাঁড়িয়ে গ্রিল ধরে সুপারি বাগান দেখতে অনেক ভালো লাগে, আরাম লাগে, কারণ গ্রিলে লাল পিঁপড়েরা হাঁটে না। গাছগুলো এলোমেলো সজ্জায় বিন্যস্ত। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে মনে হতে থাকে, এই বাগানে এঁকেবেঁকে একটা দৌড় দিলে বেশ হতো। কেন? ছোটোবেলায় সিনেমাহলে গিয়ে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দেখেছিলাম। ওখানে এরকম একটা দৃশ্য আছে। অবশ্য, নায়ক একা দৌড়োচ্ছিল না। সুন্দরীদের পেছনে তো মরুভূমিতেও দৌড়োনো যায়। ভালো কথা, মৌসুমী তখন সত্যি সত্যি দৌড়োতে পারতেন এবং দৌড়োনোর সময় ধুলোতে যতটা ঝড় উঠত, তার চাইতে ঢের বেশি ঝড় উঠত ছেলেদের বুকে। ওই সুপারি গাছগুলোর নিচের মাটি এতটাই টানে, ছুঁয়ে দেখতে, গন্ধ নিতে বড্ড ইচ্ছে হয়। এই সরু সরু সেপাইয়ের রাজ্য ভোরবেলায় আর গোধূলিবেলায় সবচাইতে সুন্দর। রাতারগুলের মিনিয়েচার যেন! রুমের পেছনের বারান্দাতে দাঁড়ালে সব কিছু চোখের মধ্যে এসে পড়ে। ওই করিডোরের ক্লান্তিহীন ছোটা, এর পাশে নেমে গেছে ঘাসে-ঢাকা এবড়োখেবড়ো মাঠ, সেখানে আড়াআড়ি সারিতে আম, কাঁঠাল, বরই আর জামফলের বীথিকা। ওদিকটায় তাকালে মনে হতে থাকে, এই শীতের রাতে ওখানটায় বারবিকিউ পার্টি করলে বেশ জমে যেত। কাঠখড় পোড়ানোর (আক্ষরিক অর্থেই) সব ব্যবস্থা আশেপাশেই আছে। আহা! রুমের বাইরে কী নৈসর্গিক সৌন্দর্য! হায়! রুমের ভেতরে কী মর্মান্তিক মশা! ভোরে ঘুম ভেঙে এইসব কিছু ভাবতে ভাবতে ঘরের ভেতরের ঘর থেকে বের হলাম। যে-বিল্ডিংটার বাইরের দিকের পলেস্তারা উঠে গেছে, সেটার দিকে মাঘের ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্য দিয়ে তাকিয়ে দেখতে দেখতে একটা সময়ে সেটাকে ভূতুড়ে মনে হতে থাকে। যদি বিল্ডিংটা হয় ধু-ধু মাঠের ওপারটায় আর কুয়াশার অস্পষ্ট ঘোলাটে শাদা চাদর মাঠের শরীরকে সমান্তরালে ঢেকে দেয়, তবে সেই চাদরটাকে মনে হবে ধুলোতে-বোনা আর ভূতুড়ে বাড়িটাতে ঠিক ওই সময়েই গিয়ে থাকতে ইচ্ছে করবে। মানুষ গা ছমছম-করা বাড়িতে থাকতে চায়। উত্তম-সুচিত্রার ‘একটি রাত’-এর কথা মনে আছে? সেই বাড়িটার মতো দেখতে স্কুলঘরটাকে দেখা যায়, এমন দৃষ্টি পেরিয়ে প্লাস্টার অব প্যারিসের স্ট্যাচু’র দল জোরকদমে এগিয়ে গেল। একটা ঘরের ইটগুলোতে ভোরের আলো এসে পড়েছে। পোড়া ইটের নকশাতে অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়া ঘরের অবয়বটাকে দেখাচ্ছে অজন্তা গুহার ফ্রেস্কো’র মতো। লাইন থেকে একটু বেরিয়ে গিয়ে সেটাকে ছুঁয়ে এলাম। ঘরের সামনের সিঁড়িটা এত সুন্দরভাবে ভাঙা যে, দেখলেই ওখানটায় টুক করে বসে পড়ে হুট করে উদাস ঢং নিয়ে চট করে একটা স্ন্যাপ নিয়ে দুম করে ফেইসবুকে কভার ফটো দিয়ে দিতে ইচ্ছে করে খুউব। সিঁড়ির পাশটা শ্যাওলায় স্যাঁৎসেঁতে। সামনের পাতা-হারানো গাছটা ওই শ্যাওলাসবুজের দিকে ঈর্ষা নিয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে আর বিধাতার রহস্য বোঝার অনর্থক চেষ্টা করে। যে-বাসাটির ব্যালকনি এই ক-দিন নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিল লালচে ঘেরাটোপে, আজকের ভোরবেলার ফোটা-আলোয় স্পষ্ট দেখলাম, ওই রং রং নয়, ওটা জং। জংকে রং ভেবে কী স্বপ্নসুখেই-না কাটিয়েছি এতদিন! লেকটাতে রোদের ছায়া এসে পড়তে না পড়তেই ওটাকে পেছনে ফেলে আমরা সোজা টেনিস-কোর্টে। হাসতে হাসতে পিটি শেষ হলো। পিটি’র শেষে হেসে হার্টকে বলতে হয়, “প্রিয় হৃদয়, ভালো থেকো।” আজকের দিনে অ্যাকাডেমিক ক্লাস দুটো। বাকি তিনটে সেশন নিজেদের চাকরি নিয়ে কিছু বলার সেশন। আমরা ১৮টি ক্যাডার আর বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস মিলে মোট ১৯টি সার্ভিসের লোকজন এখানে আছি। প্রত্যেক সার্ভিস থেকে ১ জন সবার সামনে এসে নিজের সার্ভিস নিয়ে পাওয়ারপয়েন্টে বলবেন। সাড়ে ৮টায় প্রেজেন্টেশন সেশনের শুরু। অডিটোরিয়ামে সব সেকশনের কমন সেশন। অডিটোরিয়ামে যাবার করিডোরে দু-পাশের অর্কিডের গার্ড অব অনার-এ আপেল-কুলের বাগান স্ক্যান স্ক্যান করতে করতে যাচ্ছি—কোথাও কুল-টুল ধরে আছে কি না। হঠাৎ দেখি, লেকের ওপারে ঝোপগাছের সারি সরে গেছে। কপালের ওপরে ডান হাতের তালু টুপির ছাদের মতো করে রেখে চোখদুটো আরও মেলে বুঝলাম, গোলাপের বাগানের ওধারে পাম গাছের সারিতে লুকিয়ে লেকটা ঝোপের সারিতে এসে মিশেছে কিংবা সারিটাই কীভাবে জানি নিজেই লেকের দিকে সরে গেছে। এরকম হয় কীভাবে? ক্লাসে একেবারে সময়মতো আসার শাস্তি হলো, পেছনের সিটগুলোতে বসার জায়গা পাওয়া যায় না। তাই পরে বসতে একটু আগে আসতে হয়। এলাম, পেছনের দিকে বসলাম। প্রেজেন্টেশন শুরু হলো। সবার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলাটা মজার এক অভিজ্ঞতা। গলা শুকিয়ে যায়, হাত-পা কাঁপতে থাকে, চোখ বেশি বেশি নাচতে থাকে, চশমা ওপরে-নিচে ওঠে-নামে, বাহু-ঘাড় মাইকেল জ্যাকসন হয়ে যেতে শুরু করে; এমনকী ‘দৃশ্যমান’ চুলগুলোও ফুলে-ফুলে ওঠে। আজ মোট ১৯টা প্রেজেন্টেশন হলো। অনেক মজার মজার প্রশ্ন হলো, মজার মজার উত্তরও এল। আজকের প্রেজেন্টেশন সেশন থেকে আমার অবজারভেশনগুলো শেয়ার করছি: # কেউ কেউ প্রেজেন্টেশনের আগেই প্রশ্নোত্তর পর্বটা ইঞ্জিনিয়ারিং করে রাখেন। মানে, আগেই ঠিক করা থাকে, কে প্রশ্ন করবে, কী প্রশ্ন করবে। প্রায়ই সেটেলড প্রশ্নগুলো একটু দীর্ঘ হয় যাতে করে প্রেজেন্টারকে কম লোক প্রশ্ন করার সুযোগ পায়। # প্রেজেন্টেশনের সময় নার্ভাসনেস একেবারে বাপ-দাদার ভিটেমাটির মতো, প্রাণ যায় যাক, তবুও অবচেতন মনে ওটা আঁকড়ে ধরে রাখে সবাই-ই। আমরা আজ কিছু মজার বাংরেজি উপহার পেয়েছি...মানে, I mean...ঘটনা হলো, This problem can’t be... # কিছু কিছু মানুষ আছেন, কিছু একটা প্রশ্ন করতে না পারলে যাঁরা অস্বস্তিতে ভুগতে শুরু করেন। ওঁরা যতক্ষণই ক্লাসে থাকেন, ততক্ষণই ফিল করতে থাকেন, কিছু একটা তো জিজ্ঞেস করা উচিত। এঁদের অনেক প্রশ্নই “বাবু, তোমার বাবা তোমার কে হয়?”-টাইপ প্রশ্ন। একটা প্রশ্ন শেয়ার করি। বিসিএস সড়ক ও জনপদ বিভাগের এক কর্মকর্তার প্রেজেন্টেশন শেষে প্রশ্ন এসেছিল, “Why are there so many cars on the roads?” # আমাদের মধ্যে দু-একজন প্রায় সব প্রেজেন্টারকেই কোনো-না-কোনো প্রশ্ন করছিলেন। প্রশ্নগুলিও খুব লাইনের! রীতিমতো প্রফেশনাল প্রশ্নকর্তা! ডাল ম্যায় কুচ… (আজ সন্ধেয় কফিকর্নারে এত কফি-উপঢৌকন ওঁরা গিলবেন কী করে?) # আজকের সেশনে কিছু হাততালিদাতাকে দেখলাম, যাঁদের দেখে মনে হয়েছে, ওঁদের সাথে প্রেজেন্টারের ‘নেসক্যাফে উইন-উইন কনট্র্যাক্ট’ ছিল, সেটা বলাই বাহুল্য। # আগে শার্টের সাথে ম্যাচ করে টাই পরতাম। এখন টাইয়ের সাথে ম্যাচ করে শার্ট পরি। পিএটিসি’তে আমাদের টাই নির্দিষ্ট করে দেওয়া। কী আর করা, ম্যাচিং করে শার্ট পরতে হয়। আজ প্রেজেন্টারদের দেখে মনে হলো, টাইয়ের সাথে ম্যাচিং করে শার্ট জোগাড় করতে বেচারাদের বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। আমাদের ৫৮তম বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সের স্লোগান হলো, “Whatever you do, do wholeheartedly.” আমি এই উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করি ক্লাসে ঘুমোনোর সময়টাতে। আমি যখন-তখন যেখানে-সেখানে ঘুমিয়ে পড়ার অসম্ভব প্রতিভাসম্পন্ন একজন মানুষ। আজ দুটো ক্লাস ছিল, দুটোতেই (নাক না ডেকে) নির্লজ্জের মতো ঘুমিয়েছি। পৃথিবীর সবচাইতে সুখের ঘুমঘর হলো ক্লাসঘর। ক্লাসে দিবানিদ্রাযাপন পৃথিবীর সবচাইতে শান্তির কাজগুলোর একটি। এতে কোনো লজ্জা নেই, ভয় নেই, সংকোচ নেই। আর যদি স্যার কিছুই না বলেন, তাহলে তো ক্লাসে নিদ্রাযাপনই তপস্যা! বোরিং ক্লাসগুলোতে ঘড়িও স্লো চলে। কয়েক ঘুম অনায়াসেই ফুরিয়ে যায়, অথচ ক্লাস কিছুতেই ফুরোতে চায় না। ঘুম ভেঙে যায়; ক্লাস করি না, চারপাশে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি, কে কী করে। ক্লাসে গেলে বড়ো মানুষেরা শিশুদের মতো আপনমনে খেলতে শুরু করে। আজ দেখলাম, একজন দুই ঠোঁটের ফাঁকে কলমটাকে আটকে রেখে সেটাকে নাড়াচ্ছেন আর চোখদুটোকে নাচাচ্ছেন। আরেকজন খাতায় টম অ্যান্ড জেরি’র জেরিকে আঁকছেন। জেরিকে দেখাচ্ছে নিনজার মতো। আরেকজন ওঁর কোনাকুনি বসা একজনকে ভেংচি কাটছেন। কেউ একজন ঘুমন্ত আরেকজনের হাঁ-করা মুখের ভেতরে একটা কাগজের দলা পাকিয়ে ছেড়ে দিলেন। এরকম আরও অনেক কিছু। আজকের ক্লাসে শিখলাম, সাইকেল কেনার জন্য সরকারি কর্মকর্তারা ৩ হাজার টাকা লোন পান যেটা ‘সর্বোচ্চ’ ৩৬ কিস্তিতে ‘অবশ্যই’ পরিশোধ করতে হবে। জমি কিনে বাড়ি বানাতে সরকারি কর্মকর্তারা লোন পান ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা! আমি ভাবছিলাম, বাড়ি বানাতে এত টাকা লাগে নাকি? এত টাকা দিয়ে করবটা কী! ক্লাস শেষে ভোট অব থ্যাংকস দিতে হয়। আজ এমন একজন ভোট অব থ্যাংকস দিলেন, যাঁর মধ্যে ‘আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’ সিম্পটোম অতিপ্রবল। সুদীর্ঘ ভোট অব থ্যাংকস! আমি তো ভাবছিলাম, সেরেছে রে! আবার লেকচার শুরু হলো বুঝি! আমাদের ক্লাসগুলো হয় সিন্ডিকেট ভবনের ৩ তলায়। ও-শেপড ভবন। মাঝখানটায় একটা বিশাল আকৃতির ক্রিসমাস ট্রি। সেটির চারদিকে চিলির ম্যাপের মতো দেখতে একটা জলাধারের মধ্যে আফ্রিকান মাগুর খেলে। ৩ তলার করিডোরের রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ালে চোখে পড়ে, মাছগুলো রোদ আড়াল করে করে ছোটাছুটি করতে থাকে। হাত বাড়িয়ে শীতের ১১টার রোদ ছুঁই আর ওদের খেলা দেখি। ক্লাস শেষে রুমে ফেরার সময় দেখলাম, কফি-কর্নারের ওদিকটায় ডোয়ার্ফ ব্যাম্বু, পাতাবাহার, ক্যাকটাসে প্রথম বিকেলের নরোম রোদ পিছলে পিছলে ওদের কোমল পাতাগুলোকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। ওপাশটায় পেয়ারা আর কাঁঠালচাঁপা গাছের আন্তরিক ছায়ায় অলস বিকেলযাপনের আমন্ত্রণ। এসব কিছু ফেলে রেখে রুমে গিয়ে দ্রুত ড্রেস পালটে মাঠে ছুটলাম। বাস্কেটবল সেশন শেষে ভূপেন হাজারিকা স্যার কিছু ব্রিফিং দিলেন। ওঁর কথাগুলো আর কথা বলার ধরন দুই-ই মজার। কথা বলার সময় প্রায় প্রত্যেকটি কথার শেষেই ‘হাঁআআআ...’ অ্যাড করে দেন। আজ বলছিলেন, “আপনি না আসা মানে, আপনি নেই। আমরা তবুও আপনাকে খুঁজব। যদি আপনাকে এর পরেও পাওয়া না যায়...তবে...(খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে)...তো আপনাকে পাওয়া গেলই না! মানে, আপনি স্পোর্টসে অ্যাবসেন্ট!” “আমাদের সেশন শুরু হয় বাঁশির শব্দে। তার মানে, আপনারা মাঠে একজায়গায় এসে জড়ো হবেন বাঁশির শব্দ শুনে। তবে একটা কথা...যে-কোনো বাঁশি ফলো করলেই হবে না, এখানকার বাঁশি ফলো করতে হবে।” স্যার একটা সহজ জিনিসকে যে কতটা সময় নিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গিমায় ভেঙে ভেঙে বলতেই থাকেন বলতেই থাকেন, সেটা না দেখলে বলে বোঝানো যাবে না। মাঠ থেকে বিকেলের টিফিন আর কফি খেয়ে রুমে ফিরছি। এরই মাঝে বিকেলের শেষ আলোয় গোধূলির নিমন্ত্রণ। একটু উঁচু একটা ঢিবির ওপর দিয়ে শুকনো পাতা মড়মড় করে সরিয়ে সরিয়ে হাঁটছি। মাটির ঢেলা হাতে নিয়ে লেকের জলে ছুড়ে ছুড়ে দেখছি, কতদূর পেরোয়। এভাবে করে সন্ধে নামল। রুমে ফিরলাম। আলো-আঁধারির নৈঃশব্দ্য চিরে বাইরে ঝিঁঝিরা একটানা ডেকে চলেছে। ভেতরে মশারাও থেমে নেই। শুধু অসহায়ভাবে থমকে আছে ঘরে ফেরার মায়া। যে-কথাটি বলতে গিয়ে এত কিছু লিখলাম: আজ বিকেলবেলায় যে-ট্রাউজারটা পরে মাঠে খেলতে গিয়েছিলাম, সেটির পকেটে ১টা এলাচ আর ৩টা লবঙ্গ ছিল। স্যারের ব্রিফিং শোনার সময় ৫টা কচি হালকা সবুজ রঙের দূর্বাঘাস এলাচ-লবঙ্গের সাথে খুব ভালোভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলেছি। ‘খাওয়ার পর আমার অনুভূতি?’...ফিলিং স্মার্ট গরু গরু...(একদম সত্যি কথাটি বলছি: চিনি-সহ ওই জিনিস খেলে খুব একটা খারাপ লাগত না, আমি শিওর!)