নির্লিপ্ত সুরের গুঞ্জন


: ভালোবাসা নিয়ে লিখতে চাইনি কিছুই, ভালো না বাসলে লিখতে পারা যায় না কিছুই। ওসব ভালোবাসা-বাসি অনেক কঠিন উপাসনার পরবর্তী গন্তব্য; ভালোবাসার অনুভূতি সুপ্ত রাখার কি কোনো প্রয়োজন মনে করছ?

তুমি না বললেও আমি বুঝে নিতে চাই, এই অবেলায় তুমিই একজন, যে আমায় ভালোবেসেছিল—ভুল হয়ে গেল, এখনও ভালোবাসো তো তুমি আমায়—সেই অনুভবেই তোমাকে নিয়ে লিখে যেতে চাই এই ক্ষণিকের মুহূর্তবন্দি বিষণ্ণতায় আঁকা শত পৃষ্ঠা, ছিঁড়ে ফেলি অভিমানের বিনিদ্র পাতা, ছুড়ে ফেলি তোমাকে না দিতে পারা ফুলের পাপড়িগুলো, ফিরে আসি অপেক্ষমাণ নাবিকের মতন স্রোতের ওপারে; তোমার শরীরে সুঘ্রাণ হঠাৎই আমাকে নিঃশেষ করে দেয়…

: তবে এ বিচ্ছেদ কেন?

: বিচ্ছেদ আমাকে আরও কিছু লিখতে শেখাবে, এতে স্বার্থপরতার কী আছে, শুনি? শুধুই লিখতে চাই আমি তোমায় ভেবে ভেবে; তবে বিচ্ছেদ মেনে নিতে দ্বিধা কই? তুমি কি ভাবছ, এতে ভালোবাসা কমে যাবে? তুমি নিশ্চয়ই জানো, বিচ্ছিন্ন এ সময়ের টানা-পোড়েন থামবার নয়, সবটা মেনেও তোমাকে বুকের গভীরে পুষে রাখতে যতটা কষ্ট সহ্য করে যেতে হবে, ওতেই কেবল তোমায় ভীষণ ভালোবাসার তীব্র স্পর্শ পাবো।

যে নিষিদ্ধ মোহে আমি তোমার নই, সেই কারাগারে বন্দি তুমি থেকো না। আমার জন্য নাহয় অত্যন্ত অভিমানে রেখে যেয়ো তোমার চুম্বনের অধীর অপেক্ষা; নির্লিপ্ত সুরের মনোমুগ্ধকর গুঞ্জনে ভেবো, আমি তোমার জন্য আমার সবটাই রেখে যেতে চেয়েছিলাম।

পারিনি বোধ হয় আজও তোমার মনের মতন হতে; বোঝোনি বোধ হয়, আমি তোমার ভালোবাসা গ্রহণে আজও ব্যর্থ। তুমি নাহয় আমাকে ভুলে যেয়ো, দূরে সুখের মিছিলও যে শুধুই তোমার খোঁজে উত্তাল…কী করে আটকাই বলো তোমায়!

কোন অধিকারেই-বা বলি, থেকে যাও, যেয়ো না! তোমায় ছাড়া ভীষণ দমবন্ধ লাগে, প্রতিক্ষণে ভেঙেচুরে যায় তোমার বিরহে সাজানো তুচ্ছ এ স্মৃতির ঘর।

: চলে যেয়ো না তবে; ফিরবে না তুমি আর, জানি।
Content Protection by DMCA.com