: নীড়…
: বলো।
: তোমার স্পর্শকে কি শাব্দিক রূপ দেওয়া সম্ভব?
: শব্দের ভিড়েও অনুভূতির চাষ হয়—অবশ্যই সম্ভব।
: জানো, নীড়, আজ স্বপ্নে তোমার ছোঁয়া পেয়েছি—আমি সহ্য করতে পারছিলাম না তোমার ভালোবাসা। তোমার ভালোবাসা ভয়ংকর রকমের বেশি। আমার শরীর কাঁপছিল।
: তোমার অনুভব খুব প্রখর, তিথি।
: তুমি আমায় বাস্তবে কখনও এত ভালোবেসো না…আমি তলিয়ে যাব।
: আবার সিগারেট ধরেছ, তিথি?
: ভীষণ ঠান্ডা লাগছে, চাদরটা দেবে?
: ইস্, তোমার গায়ে এত জ্বর থাকে কেন, তিথি? আমার খুব দিশেহারা লাগে তোমাকে এভাবে দেখতে।
: ভেজা শরীর অবসাদে ভুগছে, তখনও আমি তোমার খেয়ালে দিশেহারা। দমকা হাওয়া তছনছ করে দিয়েছে আমার এ তুচ্ছ খড়কুটো, শুধু সিগারেটের প্রগাঢ় ধোঁয়ায় উদ্বিগ্ন চারপাশ। তোমায় অনেক খুঁজেছিলাম, জানো?
: আহ্, অমন পাগলের মতো জড়িয়ে ধরছ কেন, তিথি? তোমাকে ভীষণ ক্লান্ত, ভঙ্গুর, দ্বিধাগ্রস্ত লাগছে।
: তোমাকে কাছে থেকে জড়িয়ে আদর করতে না পারলে আমার দমবন্ধ লাগে।
: শুনছ, তিথি?
: এই মিউজিকটা আমার ভীষণ পছন্দের, তুমি বাজিয়েছ?
: "Nothing's the same without you..." আহ্, এই সুরের মুগ্ধতায় যেন বেড়ে চলেছে আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন।
: তোমার হৃদয়টা অনেক বেশিই সুন্দর।
: দেখো, আমাদের নিঃশ্বাসের মাঝে আর কোনো দূরত্ব নেই। কতটা কাছে থাকলে আর দূরে যাবে না তুমি, নীড়?
: কী করে বোঝাব তোমায়? আমিও যে ভালোবেসেছি তোমায় প্রতিমুহূর্তে, যা কখনও জানতে চাওনি তুমি।
: সেদিন ভুলে যেয়ো আমায়, যখন সময় ডেকে নেবে অন্য প্রদীপের আলোতে। দূরে সুখের মিছিল, থেকো না আটকে এই অচল আমাতে।
: তোমাকে ঘিরেই সবটুকু পাওয়া না-পাওয়ার দোলাচলে আটকে রবে হৃদয়, আটকে রবো আমি।
: তুমি আমার সামনে হাসো না কেন, নীড়? তোমার ওষ্ঠযুগলে চাপা পড়ে থাক আমার অনুরাগ।
: অবেলার অনুতাপে নিংড়ে গিয়েছি আমি, তবু আলিঙ্গনের নেশায় বার বার ফিরে আসি। সুখকর সে মুহূর্তের রেশ যেন আমার বুকের ভেতরটা এলোমেলো করে দিয়েছে সহস্রাধিকগুণে। সময়-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আমি। পারবে তুমি আমায় সারিয়ে তুলতে?
: আমাকে আর ফোন করো না কেন, নীড়? আমি কি তোমার কথা কখনও শুনতে পাবো না তবে? এতটা শাস্তি দিয়ো না আমায়।
: ধুর, পাগলি!
: আমি যে তোমার যোগ্যও নই, তা মনে করিয়ে দিতেই বুঝি যোগাযোগ বন্ধ রেখেছ?
: কে বলেছে আমাদের যোগাযোগ নেই?
: হা হা! "কী একটা মুঠোফোন!" তা-ই দিয়েও নাকি তোমায় ব্যক্ত করা সম্ভব?
: আজ তোমার আমার বুকের মধ্যে থাকার কথা ছিল, তুমি এলে না।
: আমাদের হয়েছিল কথা, যখন হৃদয়কে শাসন করেছিল শূন্যতা।
: এত কাছে এলে কেন, তিথি?
: চলো না, এ পথ বদলে ফেলি। অচেনা ঠিকানায় তোমার খোঁজেই চিঠি লিখেছি রোজ।
: আহ্, এত গভীর আলিঙ্গনে আমাকে বেঁধো না, তিথি। তোমার দীর্ঘশ্বাসে নিঃস্ব আমার বুকের পাঁজর।
: জানো, আমার কল্পনায় যে তুমি আমাকে কী প্রচণ্ড ভালোবাসো, তা আমার কাছে এক আকাশছোঁয়া বিস্ময়।