তিরিশ বছর পরে আবার যদি তোমায় দেখতে পেতাম!
তখন যদিও তুমি হবে এক্কেবারেই বুড়ো— তোমার দাঁত পড়ে যাবে, চামড়া ঢিলে হয়ে আসবে, মুখ থেকে বিশ্রি গন্ধও আসবে হয়তো!
তিরিশ বছর পরে, তখন তোমার যৌবন আর থাকবে না, উষ্ণতা দূরে সরবে, কেমন শীতল হতে থাকবে তুমি…
খুব ইচ্ছে হয় তখনও তোমায় কাছে পেতে। তুমি অসুখে ভুগবে, আমি পাশে জেগে থাকব, তোমার চুলে হাত বোলাব, তোমার কপালে চুমু খাব; তোমার চোখের কোণ বেয়ে জল গড়াবে, আমার হাতটা বুকে জড়িয়ে বলবে, এত ভালোবাসো আমায়! সেদিন সবাই চলে যাবে, এক আমিই থেকে যাব।
কিন্তু দ্যাখো, আমি আর কখনও তোমাকে দেখতে পাবো না…কোনোভাবেই না! এটা মাথায় এলেই সব কেমন শূন্য শূন্য লাগে।
ঈশ্বর আমার মধ্যে এত ভালোবাসা কেন দিল, যদি তোমায় না দিল! আমি যে ভালোবাসা চাইনি, শুধু তোমায় পেতে চেয়েছিলাম!
তোমার কষ্ট হলে, অসুখ করলে তোমার স্ত্রী, সন্তানেরা সেবা করবে। যদি কখনো এমন হয়, সবাই তোমায় ছেড়ে যায়, সেদিন ফোন কোরো— তুমি এক বার, মাত্র এক বার চাইলেই আমি সমস্ত পৃথিবী ছেড়ে চলে আসব তোমার কাছে।
আমি বিত্ত চাই না, প্রেম চাই না, শুধু তোমার কাছে থাকতে চাই। আমি সব কিছুর মায়া ছাড়তে পারি, সব কিছুই পেছনে ফেলে আসতে পারি… কেন জানি না, এক তোমাকেই ছাড়তে পারি না! আমার সব কমে যায়—কেবল তোমাকে দেখার ইচ্ছে কখনও কমে না।
তোমাকে আর কোনোদিন দেখতেই পাবো না যদি, আমার এ দু-চোখের তবে কী দরকার! এ পৃথিবীকে দেখে কী হবে, যদি তোমাকেই দেখতে না পেলাম!
তিরিশ বছর পর অথবা তার আগে, আমার আগেই যদি তোমার মৃত্যু হয়… তখন কোথায় যাবে তোমার আত্মা? পৃথিবীর বাইরে বুঝি? অনেক দূরে? কোথায় থাকবে তুমি আমায় ছেড়ে! বলো, তুমি কোথায় যাবে!
তোমায় যারা ভালোবাসে, তারা কি তোমায় আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে? তোমাকে ভোলার সাধ্য আমার নেই; পাবার, ছোঁয়ার সাধ্যও নেই।
তোমাকে পাবো না, তাই শুধু ভালোবেসে যাই। তুমি সুখী হও, পৃথিবীতেই স্বর্গসুখ পাও, যেখানে যতটা সুখ আছে, তার সবই পাও— এ পৃথিবীর সমস্তটাই তুমি যেন পাও, এ-ই আমার তৃষ্ণার্ত চাওয়া।