ক্যারিয়ার আড্ডা @ মুসলিম হল, চট্টগ্রাম (১ম অংশ)

ক্যারিয়ার আড্ডা

 জীবন থেকে নেয়া …….

  • যে দিনটাকে আপনি চাইছেন, কেউই মনে না রাখুক, সেই দিনটাই আপনার জীবনের সেরা দিন হতে পারে! বার্থডেতে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখার গল্প।
  • শুধু একটা সেকেন্ড আপনার জীবনের মোড় বদলে দিতে পারে। অদ্ভুত একটা মুহূর্ত আগের সব কষ্টকে ভুলিয়ে দিতে পারে। আল্লাহ কখনোই কাউকে চিরদিন অসম্মানিত করে রাখেন না। স্বপ্নের দিনটার জন্যে বিনয়ের সাথে অপেক্ষা করতে হয়।
  • শুধু একটা ভুল আপনাকে প্রচণ্ড ধাক্কা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারে।
  • Intellectual Humility থাকাটা খুব জরুরি। Why Google doesn’t care about hiring top college graduates? যারা ভুল করতে অভ্যস্ত না, তারা বেশিদূর যেতে পারে না।
  • মেনে নিন, ভুলটা আপনারই। নিজেকে ছাড়া আর সবাইকেই ক্ষমা করে দিন।
  • নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা বাদ দিন। এতোদিন যা করে এসেছেন, সেটাই যদি করে যান, তবে এতোদিন যেমন ছিলেন, তেমনই থাকবেন।
  • আপনি অক্সফোর্ড এমআইটি স্ট্যানফোর্ড কিংবা হার্ভার্ড গ্রাজুয়েট কিনা, এটা কেউ আসলেই কেয়ার করে না। দিনের শেষে শুধু আপনার ইম্প্রেসিভ আচরণ, ব্যবহার, কথাবার্তাই অন্যদের মাথায় থেকে যায়। আর কিছুই না।
  • বেশিরভাগ মানুষ সাফল্য পছন্দ করে কিন্তু সফল ব্যক্তিকে মনেমনে চরম অপছন্দ করে। সবাই আপনাকে পছন্দ করবে না। এটা মেনে না নিলে যারা পছন্দ করছে না, তাদের লাভই বেশি। You need some enemies in your life. If you don’t have any, create some. Birds of the same feather feel jealous of each other. এটাকে সহজভাবে মেনে নিন।
  • একটা কাজ দ্রুত করার চাইতে ভালোভাবে করাটা বেশি জরুরি। লোকে মনে রাখে কাজটা কতোটা ভালোভাবে হয়েছে, শুধু সেটা।
  • “Great minds discuss ideas; average minds discuss events; small minds discuss people.” কারোর চেহারা খারাপ, এটা বললেই কিন্তু আমার নিজের চেহারা আরো সুন্দর হয়ে যায় না।
  • বড় হওয়া যায় ২ভাবে। এক। নিজে বড় হয়ে। দুই। অন্যকে ছোটো করে। সেকেন্ড ওয়েটা সহজ, কিন্তু রিস্কি। কেনো?
  • ফেসবুকে অপদার্থের বন্ধু হওয়ার চাইতে জ্ঞানীর ফলোয়ার হওয়া ভালো। বোকা বোকা ভাব নিয়ে শিখতে থাকুন। বিনয় ছাড়া শেখা যায় না।
  • কথা শোনানোর চাইতে কথা না শোনানোর শক্তি অনেক বেশি। কাউকে কথা শুনিয়ে দেয়ার ইচ্ছে থাকলে মুখে নয়, আপনার কাজ দিয়ে শুনিয়ে দিন। একদিন আপনারও দিন আসবে। এর আগপর্যন্ত লোকজনকে বলতে দিন।

একজন নোবডির গল্প

  • এখানে যারা আছেন, যারা এখনো ক্যারিয়ার শুরুই করেননি, তারা কি সত্যিই পিছিয়ে আছেন? ‘পিছিয়ে থাকা’ আসলে কাকে বলে? আমার শুরু যেভাবে। আমি আমার বন্ধুদের চেয়ে অন্তত ৪.৫ বছর পর চাকরি করা শুরু করি।
  • বারবার জীবনের মোড় বদলানো। সিদ্ধান্তহীনতার গল্প। দেরি হয়ে যাচ্ছে, এটা বোঝার মতো সময় সবসময়ই হাতে থাকে।
  • আমার কোনো Aim in Life ছিলো না, শুধু এক্সামের খাতায় ছাড়া। কেউ একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, life এবং career নিয়ে আপনার আগামী ১০ বছরের plan কী? আমি উত্তর দিয়েছিলাম, আমি আমার জীবনে ১০ মিনিটের planও কখনো করতে পারিনি। Still I’m happy. No regrets! এক জীবনে মানুষ কতোটুকুই বা পায়? আমি প্রতি মুহূর্তের দুনিয়ায় বেঁচে থাকা মানুষ। এতো ক্যারিয়ারিস্ট হয়ে বেঁচে কী লাভ?
  • ক্যারিয়ার কী? ‘ভালো’ ক্যারিয়ারে (হোক সেটা চাকরি কিংবা ব্যবসা) কী কী থাকে? আমি মনে করি, ৩টা জিনিস থাকে। এক। Social recognition দুই। Solvency তিন। Time to spend your earning in your own way
  • অনেক প্রাচুর্যের মধ্যে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে অনেকদিন বাঁচার চাইতে আফসোস ছাড়া ছোট্টো একটা জীবন কাটানো অনেক ভালো। হ্যাঁ, সবাই যেভাবে করে ইঁদুরের মতো ইঁদুর-দৌড় জিততে দৌড়ায়, আপনিও সেভাবে করে দৌড়াতে পারেন। কিন্তু এতে সমস্যা দুটো। এক। এই দৌড় কখনোই শেষ হয় না। দুই। এই দৌড়ে যদি জিতেও যান, তাহলেও শেষ পর্যন্ত ইঁদুর হয়েই থাকবেন। ইঁদুর হওয়ার সমস্যা হলো, ইঁদুররা মানুষের জীবন উপভোগ করতে পারে না। চাকরি থেকে মানুষ কতোটুকুই বা পায়? আমরা কখনোই জানি না, আমাদের জীবনে কোনটা আগে আসবে…… পরের দিনটা? নাকি, পরের জীবনটা? তাই, মৃত্যুর আগেই যেনো নিজের মতো করে জীবনটা কাটাতে পারি, সেটা মাথায় রেখেই ক্যারিয়ার বেছে নেয়া উচিত।
  • ক্যারিয়ার ও ফ্যামিলি—কাঁচের জার ভর্তি করার গল্প।
  • খুব ভালো কিছু করতে যে খুব বেশি সময় নিয়ে করতে হয়, তা কিন্তু নয়। আমার ধারণা, সুন্দর কিছু ক’রতে পরিশ্রম কিংবা বুদ্ধিমত্তার চাইতেও আবেগটাই বেশি দরকার। কম সময়ে অনেক কিছু ক’রতে জানাটা মস্তো বড়ো একটা আর্ট। …… কেউ কথা রাখেনি। You fill up my senses. কুমার সানুর ২৮। দস্তয়ভস্কির গল্প। …….. অলস হোন। এতে একটা কাজ দুইবার করার ইচ্ছে কমে যাবে।
  • ফিরে দেখা। নোবডি হয়ে থাকার গল্প। সবচেয়ে বাজে রেজাল্ট করা ছেলেটার গল্প; যার একটা সময়ে অনার্স কমপ্লিট করারই কথা ছিলো না, যাকে নিয়ে কেউ কখনো স্বপ্ন দেখেনি। কারোর কাছ থেকে পাত্তা না পাওয়াটা ভয়াবহ কষ্টের একটা ব্যাপার। লোকে পড়াশোনা করার পাশাপাশি টিউশনি করে। আর আমি টিউশনি করার পাশাপাশি পড়াশোনা করতাম। প্রয়োজনে নয়, নেশায়। পরে ভেবে দেখলাম, টিউশনি আসলে আমাদের কী দেয়? ……. প্রায়ই পয়সা আর তাচ্ছিল্য; কখনোকখনো সম্মান। অপমানের দিনগুলো, কান্নার রাতগুলো। বিষের পেয়ালার হার ও অতঃপর। স্রেফ বেঁচে থাকলেও অনেককিছু হয়৷ সাঁতারু ও জলকন্যা পড়েছেন? জীবনে কিছু না পাওয়ার চাইতে কষ্ট পাওয়াও ভালো। Cry, only to smile better. যেটা আপনি করতে পারবেন বলে কেউ কখনোই ভাবেনি, সেটা করে দেখানোই হলো সবচেয়ে সুন্দর অর্জন। ভালো কিছু করা মানে কী? যা আপনার বাবা-মা আর কাছের মানুষদের মুখে হাসি ফোটায়, তাদের মাথা উঁচু করে দেয়, সেটা করাই হলো ভালো কিছু করা।
  • অন্য কারোর জীবনে না বাঁচা, জীবনের সাথে কম্প্রোমাইজ না করা একজন সুখী অসফল অ্যাক্সিডেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারের গল্প, একজন হতাশাগ্রস্ত উদ্যোক্তার গল্প। আমি অনেক খুশি কারণ আমি যা চেয়েছি, তা পাইনি। আল্লাহ মাঝেমাঝে আমাদের প্রার্থনা কবুল করেন আমাদের প্রার্থনা কবুল না করার মাধ্যমে। আল্লাহকে ধন্যবাদ, উনি আমার প্রথম জীবনের প্রার্থনাগুলো কবুল করেননি।
  • একটা কথা খুব সত্য৷ এ্যাকাডেমিক্যালি কেউ ভালো স্টুডেন্ট হওয়া মানেই কিন্তু তার ক্যারিয়ার ভালো হবেই, এমনটা নাও হ’তে পারে৷ ভালো স্টুডেন্টরা অনেকসময়ই আপনাকে সহজ টার্গেট ভাবে। তাদের এই দুর্বলতাকে কাজে লাগান। শেষ হাসিটা হাসার চেষ্টা করুন৷ মাঝের কিছুটা সময় না হয় কাটুক কান্নায়, অবহেলায়, তাচ্ছিল্যে৷
  • ক্যারিয়ার শুরু করার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস ক’রে নিন, কী আপনার ভালো লাগে৷ অন্যেরা এর উত্তর দিতে পারবে না৷ ওরা বড়োজোর জানে, কী আপনার ভালো লাগা উচিত৷ অন্য দশ জনের মতো ক’রে ভাববার মস্তো বড়ো অসুবিধে হ’চ্ছে এই, আপনি আসলে যতোটুকু করার ক্ষমতা রাখেন, সেটা একটা বাঁধাধরা ছকে প’ড়ে যায় এবং আপনার অ্যাচিভমেন্ট এমন কিছু হয় না, যেটাকে আলাদা ক’রে বলা যায় কিংবা দেখা যায়৷ আপনার জীবনটাকে আপনি গড়পড়তায় ফেলবেন কিনা, it’s your choice.
  • কোনো কাজ করার সবচেয়ে কঠিন ধাপ ২টিঃ এক। আপনি আসলে কী করতে চান, কীভাবে করতে চান, কেনো করতে চান সেটা ঠিক করা। দুই। কাজটা সত্যি সত্যি শুরু করা। কোনো কাজ শুরু করার সবচেয়ে সহজ টেকনিক হল, কাজটা  সত্যিই শুরু করে দেয়া।
  • সাফল্যের জন্যে আত্মবিশ্বাস জরুরী, নাকি আত্মবিশ্বাসের জন্যে সাফল্য জরুরী? আমাকে দিয়ে হবে না, আর পারছি না, I quit! শাহরুখ খানের গল্প।
  • “It always seems impossible until it’s done.” The difficulty level of most of the competitive exams is overrated. — Why? সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় যারা প্রথম হয় ওরা মানুষ তো? এইসব ভাবতাম। ………. আপনার বিসিএস হবে না বিসিএস হবে না এরকম ভাববেন না। আপনার প্রার্থনা কবুল হয়ে যেতে পারে।
  • Your passion pays!! Books, movies, music & of course Facebook!! No matter, whatever it is!! Basically, you were what you loved, you’re what you love, you’ll be what you’ll love!!
  • If you are not thinking about your dream, you are not thinking at all.
  • সাফল্যকে কখনোই ডিজার্ভ করা যায় না, সাফল্যকে আর্ন করতে হয়। আপনি সফল হওয়ার পর মনেমনে যেভাবে ভাবেন, এটা আপনার অর্জন, ঠিক একইভাবে আপনি ব্যর্থ হওয়ার পর অন্যরা মনেমনে ভাবে, এটা আপনার প্রাপ্তি।
  • বিল গেটসের কাছে চাল-ডালের ব্যবসার আইডিয়া চেয়ে কী লাভ? কৌশলী হোন।
  • লোকজন যেটা পারে না, কিংবা যেটাতে অভ্যস্ত নয়, ওরা ধরেই নেয়, আপনিও সেটা পারবেন না। কিছু কিছু ভাইরাস আছে, যারা কখনোই কারোর প্রশংসা করতে কিংবা সহ্য করতে পারে না। তাদের কোনো কথায়ই নিজেকে প্রভাবিত হতে দেবেন না। আপনার ঠিক কাজের প্রশংসা করতে পারে না যে, আপনার ভুল কাজের নিন্দা করার কোনো অধিকার তার নেই। তাদেরকে আপনার জীবন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিন। জীবনে চলার জন্যে সবাইকেই লাগে না। Kind words are healthier than a bowl of chicken soup.
  • ছোটোবেলায় ভালো স্টুডেন্ট হিসেবে সবার কাছে পরিচিত হয়ে যাওয়াটা একটা বিশ্রী জিনিস, নিজেকে কিছুতেই আর ছোটো ভাবা যায় না। অন্যরা আমাকে গাধা ভাবছে, এটা মেনে নেয়ার অনভ্যস্ততা খুব কষ্টের! Sometimes it’s your bad luck! People want to see you as they want, not as you want to see yourself. Still, live in your own life. Don’t listen to others, listen to your heart.
  • Don’t be serious, be sincere. সবাই তো আর সবকিছু পারে না৷ এটা মেনে নিন। আপনি কোন কাজটা সবচেয়ে ভালো পারেন, সেটা বের করুন।
  • Stop overthinking. If you’re going through hell, keep going. Que sera sera — Whatever was, was; whatever is, is; whatever will be, will be. যা হবার তা হবেই।
  • Life didn’t come to us with a user-manual. So, it’s our right to use and to abuse it! Sometimes, failures are just too good! To fail successfully is an art.
  • Deciding what you really want matters. It took me almost 2 decades to decide what I really want. When I’d decided finally, it took me only a few months to get what I really want.
  • Don’t only work hard, also work smartly.
  • Success. It’s not the opposite of failure as popularly believed, it’s just living without sighs. It’s just dancing in the manner you want and making people think you dance well even if you don’t. It’s making your style others’ favourite brand even if it’s foolish. It’s sometimes making people laugh listening to your even worst jokes. It’s making others hear you even when you don’t speak. It’s taking the opportunity to tell others that meeting your previous millionth failure was essential, anyway. It’s making your failures worth-mentioning by you or by others.
  • Only your results are rewarded, not your efforts. This is the way the world accepts or rejects you.

আইবিএ ভর্তি পরীক্ষা আর বিসিএস পরীক্ষার

  DOs & DON’Ts

বিসিএস এবং আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার ডিফিকাল্টি লেভেল আমার কাছে কিছুটা overrated বলেই মনে হয়েছে৷ এগুলো কম্পিটিটিভ এক্জাম, এটা যতটা সত্য, রিয়েল  কম্পিটিশনে আসার মতো ক্যান্ডিডেট খুব বেশি সাধারণতঃ থাকেনা, এটা আরো বেশি সত্য৷ বেশিরভাগ মানুষই এই ২টা এক্সাম নিয়ে ভয় দেখাতেই বেশি পছন্দ করেন। যা জানেন, তা বলেন; যা জানেন না, তাও বলেন। ২টা ফ্যাক্ট শেয়ার করি। এক। এই এক্সামগুলোতে ৫০% ক্যান্ডিডেট যায় জাস্ট ঘুরতে কোনো কারণ ছাড়াই, অনেকটা গেট-টুগেদার করতে। (মজার ব্যাপার হলো, এদের কেউকেউ সফলও হয়ে যায়! ‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’ টাইপের আরকি! ওদের সাফল্যে কষ্ট পেয়ে লাভ নাই।) দুই। রিয়েল কম্পিটিটিশনে আসার মতো ক্যান্ডিডেট থাকে মাত্র ৭% এর মতো। …………. এর মানে, আপনার কম্পিটিটর আপনি যতটা ভাবছেন, তত বেশি না। বিসিএস আর আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার কোনো সুনির্দিষ্ট সিলেবাস নেই, তাই এই ২টা পরীক্ষায় ১০০% প্রস্তুতি নেয়া কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। মাথায় রাখুন, শতভাগ শিখেছি ভেবে তার ষাটভাগ ভুলে গিয়ে বাকী চল্লিশভাগকে ঠিকমতো কাজে লাগানোই আর্ট৷ এই ২টা পরীক্ষায় ভালো করার জন্যে কী কী পড়বেন, সেটা জানার চাইতে অনেকবেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, কী কী বাদ দিয়ে পড়বেন, সেটা ঠিক করা। আমি পরের স্লাইডগুলোতে এ সম্পর্কে বলার চেষ্টা করেছি। এই গাইডলাইনটা নিজের মত করে কাজে লাগাবেন। যতটুকু দরকার, ততটুকু নেবেন, বাকিটা ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।

আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার সাতসতেরো

  • আইবিএ’র বিবিএ+এমবিএ, বিআইবিএম’এর এমবিএম, ডিইউ’র ইএমবিএ, প্রাইভেট ভার্সিটির এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার বিগত সব বছরের প্রশ্ন (সব না হলেও, অন্তত ১০-১৫ বছরের) ভালোভাবে বুঝে সলভ্ ক’রে ফেলুন৷ প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা নিন৷ এটা প্রস্তুতি শুরু করার প্রথম ধাপ৷
  • GRE Word-list শিখে ফেলা মানেই কিন্তু আইবিএ’তে চান্স পেয়ে যাওয়া নয়। মাথায় রাখবেন, GRE, GMAT’এর সবচেয়ে সহজ প্রশ্নগুলো আইবিএ’তে আসে। একটা প্রশ্ন আরো কয়েকটা প্রশ্নের সূতিকাগার।
  • একটা secret শেয়ার করি। সাধারণত ৫০% এর উপরে কোনো segment-য়েই cut-off marks থাকে না। তাই, চেষ্টা করবেন, যাতে সব segment-এ অন্তত ৫০% মার্কস পেয়ে viva board পর্যন্ত পৌঁছানো যায়।
  • কম্পিটিটিভ এক্জামগুলোতে ভালো করার ক্ষেত্রে প্রিপারেশনের চাইতে প্রিপেয়ার্ডনেসটা বেশি কাজে লাগে৷ I’m the best, এই ভাবটা এক্জাম হলে ধ’রে রাখুন৷ এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে! পরীক্ষার হলে আনকমন প্রশ্নের উত্তর করার ক্ষমতা ভূতে যোগায়!
  • Time Management. Because it does matter! এখন দেখা যাক, এর মানে কী? ২টা ব্যাপার মাথায় রাখবেন। এক। যতটুকুই প্রিপারেশন নিন না কেনো, এর maximum utilization করতে হবে। প্রস্তুতি নেয়া বড় কথা নয়, প্রস্তুতিকে ঠিকভাবে কাজে লাগানোই বড় কথা। দুই। আপনাকে প্রত্যেকটা segment-এ আলাদা আলাদাভাবে পাস করতে হবে। কাজেই আপনি যা পারেন, শুধু সেটার উপরেই পুরো effort দেয়া যাবে না। তাই, সময়টাকে ভাগ করে নেবেন। পুরো সময়ের দুই-তৃতীয়াংশ সময়ে যা যা পারেন, সব answer করে ফেলবেন। বাকি সময়ে left-out প্রশ্নগুলো answer করবেন।
  • আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে বেশি বেশি questions solve করুন। প্রশ্ন বুঝে বুঝে অনলাইনে নিয়মিত GRE+GMAT-এর প্রশ্ন সলভ্ ক’রতে পারেন৷ (সবগুলো নয়, যেগুলো পরীক্ষায় আসে, সেগুলো৷)
  • এখন কোনটা কোন বই থেকে কতোটুকু পড়বেন, সেটা নিয়ে কিছু বলছি।

Verbal part

  • Vocabulary. এটার জন্যে Barron’s GRE Wordlist, Word Smart দেখতে পারেন। হাতে সময় কম থাকলে বাজারের বইগুলোও দেখতে পারেন।
  • Analogy part’টা GRE Big Book (old edition) থেকে দেখতে পারেন। কষ্ট কমাতে ২-১টা গাইড কিনে পড়তে পারেন।
  • Sentence completion এর জন্যে GRE Big Book (old edition)  দেখতে পারেন।
  • Comprehension part-টা IELTS-এর বই থেকে পড়লে লাভ হবে।
  • Error Finding part-টা পড়বেন TOEFL-এর বই থেকে (যেমন, Cliff’s TOEFL)। Barron’s TOEFL-এর Essential Grammatical Rules অবশ্যই পড়ে নেবেন। S@ifur’s Grammar বইটা দেখতে পারেন।

Mathematics

S@ifur’s Math, S@ifur’s Geometry, NOVA’s GRE এই বইগুলো থেকে সলভ করতে পারেন। সময় পেলে ARCO SATও দেখতে পারেন।

Analytical Analysis

  • Puzzle/Logical inference-এর জন্যে Official GMAT দেখতে পারেন। বাজারের ২-১টা বইও সাথে রাখতে পারেন।
  • Critical Reasoning-এর জন্যে GRE Big Book থেকে ছোটো ছোটো comprehension + Official GMAT দেখতে পারেন।

আইবিএ’র ভাইভা নিয়ে পরে কথা আছে।

প্রিলিমিনারির বিভিন্ন টপিক নিয়ে…..

  • ভাষাঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ ৯ম-১০ম শ্রেণীর ব্যাকরণ বই+ হায়াৎ মামুদের ভাষা-শিক্ষা+ গাইড বই
  • সাহিত্যঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ সৌমিত্র শেখরের জিজ্ঞাসা+ গাইড বই
  • Language: আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ English for the Competitive Exams+ Oxford Advanced Learner’s Dictionary+ গাইড বই
  • Literature: আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ গাইড বই
  • বাংলাদেশ বিষয়াবলী+ আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ পেপার+ ইন্টারনেট+ গাইড বই
  • ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাঃ নতুন গাইড বই
  • সাধারণ বিজ্ঞানঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন
  • কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তিঃ জব সল্যুশন+ আগের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও টীকা+ নতুন গাইড বই
  • গাণিতিক যুক্তিঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন
  • মানসিক দক্ষতাঃ আগের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন+ গাইড বই+ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নব্যাংক
  • নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসনঃ কমনসেন্স+ নতুন গাইড বই

মাই এক্সপেরিয়েন্স উইথ বিসিএস প্রিলি + রিটেন

  • ১০ম থেকে ৩৪তম বিসিএস, ২-৩টা জব সল্যুশন কিনে পিএসসি’র নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নগুলো (সম্ভব হলে, অন্ততঃ ২৫০-৩০০ সেট) বুঝে বুঝে solve করে ফেলুন। দাগিয়ে দাগিয়ে রিভিশন দেবেন অন্তত ২-৩ বার। Read the mind of the question setter, not the mind of the guidebook writer. ৪ ঘণ্টা না বুঝে study করার চাইতে ১ ঘণ্টা questions study করা অনেক ভালো। তাহলে ৪ ঘণ্টার পড়া ২ ঘণ্টায় পড়া সম্ভব। Apply the POE. বেশি বেশি প্রশ্নের প্যাটার্ন study করলে, কীভাবে অপ্রয়োজনীয় টপিক বাদ দিয়ে পড়া যায়, সেটা শিখতে পারবেন। এটা প্রস্তুতি শুরু করার প্রাথমিক ধাপ। এর জন্যে যথেষ্ট সময় দিন। অন্যরা যা যা পড়ছে, আমাকেও তা-ই তা-ই পড়তে হবে—এই ধারণা ঝেড়ে ফেলুন। Invent your own style. নতুন সিলেবাসের নতুন টপিকগুলো নতুন গাইড বই বের হওয়ার পর অন্তত ২-৩ সেট কিনে পড়ে ফেলবেন। পড়া ভালো, চোখ বুলানো আরো ভালো। মডেল টেস্টের গাইড বই কিনে নিজে নিজে মডেল টেস্ট দিন। প্রতিদিন অন্তত ৩টা করে। নতুন টপিকগুলো নিয়ে অত গবেষণা করার সময় নাই। নতুন টপিকগুলো থেকে কঠিন প্রশ্ন না হওয়ারই কথা।
  • বেশিরভাগ স্টুডেন্টই প্রথমে রেফারেন্স বই পড়ে, পরে প্রশ্ন সলভ করা শুরু করে। এখানে ২টা সমস্যা আছে। এক। বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ করার সময় পাওয়া যায় না। যত বেশি প্রশ্ন সলভ করবেন, ততই লাভ। দুই। রেফারেন্স বইগুলোর বেশিরভাগ অংশই বিসিএস পরীক্ষার জন্যে কাজে লাগে না, অথচ পুরো বই পড়তে গিয়ে সময় নষ্ট হয় এবং বিসিএস নিয়ে অহেতুক ভীতি তৈরি হয়। তাছাড়া অতকিছু মনে রাখার দরকারও নেই। ………… তাই, উল্টো পথে হাঁটুন। আমিও তা-ই করেছিলাম।
  • আজাইরা ফালতু জিনিসপত্র পড়া বাদ দিন৷ বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্যে আপনি কী কী পড়বেন, সেটা ঠিক করার চাইতে অনেক বেশি জরুরী আপনি কী কী পড়বেন না, সেটা বুঝতে পারা৷ রেফারেন্স বই পড়ুন আর না-ই পড়ুন, বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ্ করা ফরজ৷ যে জানে, সে সফল নাও হ’তে পারে; কিন্তু যে সফল, সে নিশ্চয়ই জানে৷ (না জানলেও জানে) অসফল পণ্ডিত অপেক্ষা সফল গর্দভ উত্তম৷ যাঁরা বিসিএস নিয়ে থাকেন, তাঁরা দুই টাইপের হ’য়ে ওঠেন৷ এক। বিসিএস বিশেষজ্ঞ৷ দুই। বিসিএস ক্যাডার৷ …… ক্যাডার হোন৷
  • একটা বুদ্ধি দিই৷ বিসিএস পরীক্ষার জন্য যেকোনো বিষয়ের রেফারেন্স পড়ার একটা ভালো টেকনিক হচ্ছে, জ্ঞান অর্জনের জন্য না প’ড়ে, মার্কস্ অর্জনের জন্য পড়া৷ জ্ঞান অর্জন করলে জ্ঞানী হবেন, মার্কস অর্জন করলে ক্যাডার হবেন। এটা করার জন্য আগে বিগত বছরগুলোর প্রশ্নগুলো পড়ে পড়ে কোন টাইপের প্রশ্ন আসে না, সেই আইডিয়াটা নিন৷ আরো ভালো হয়, প্রিলি আর রিটেন’এর প্রশ্নগুলো ভালোভাবে দেখে, এরপর রেফারেন্স বই ‘বাদ দিয়ে বাদ দিয়ে’ পড়ুন৷ যেমন, বাংলা সাহিত্যের জন্য যদি কেউ মাহবুবুল আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস কিংবা সৌমিত্র শেখরের জিজ্ঞাসা (কথার কথা) পড়তে চান, আগেই প্রিলিতে সাহিত্যের প্রশ্ন + রিটেনে সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন কী কী টাইপের আসে মাথায় ম্যাপিং করে ফেলুন৷ এরপর পড়ুন৷ কম্পিটিটিভ পরীক্ষায় ভালো করার বেস্ট ওয়ে, আগে রেফারেন্স বই পড়ে তারপর প্রশ্ন সলভ্ করা নয়; বরং প্রশ্ন সলভ্ করতে করতে রেফারেন্স বই পড়া৷ সবকিছু পড়ার সহজাত লোভ সামলান। একটি অপ্রয়োজনীয় topic একবার পড়ার চেয়ে প্রয়োজনীয় topic গুলো বার বার পড়ুন৷
  • প্রিলির জন্য কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, আজকের বিশ্ব, অর্থনৈতিক সমীক্ষা টাইপের বইপত্র পড়া বাদ দিন৷ একেবারেই সাম্প্রতিক বিষয় থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন আসে বড়জোর ৫-৬টা, যেগুলো শুধু ওই বইগুলোতেই পাওয়া যায়৷ এরমধ্যে অন্তত ২টা পেপারটেপার প’ড়ে আনসার করা যায়৷ বাকি ৪টাকে মাফ ক’রে দিলে কী হয়?! এই ৪ মার্কসের এ্যাতো পেইন কোন দুঃখে পাব্লিক নেয়, আমার মাথায় আসে না৷ আসলে, ওই যন্ত্রণাদায়ক বইগুলো প’ড়লে নিজের কাছে কেমন জানি পড়ছি পড়ছি মনে হয়৷ এটা অতি উচ্চমার্গীয় ফাঁকিবাজির পর্যায়ে পড়ে৷ একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বার বার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ কারণ এই ধরণের একটি প্রশ্ন আরো কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷ প্রিলিমিনারি হাইয়েস্ট মার্কস্ পাওয়ার পরীক্ষা নয়, স্রেফ পাস করার পরীক্ষা৷ কে কী পারে সেটা নিয়ে কম ভাবুন। আপনি যা পারেন সেটার চাইতে অন্যরা যা পারে, সেটা শেষ পর্যন্ত বেশি কাজে আসবে, এরকমটা নাও হতে পারে।
  • বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা মূলতঃ চারটি বিষয়ের উপর অনেকংশে নির্ভর করে—ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও বাংলা৷ এই চারটি বিষয় বেশি জোর দিয়ে পড়ুন৷ শুধু সাধারণ জ্ঞানে সুপণ্ডিত তোতাপাখিসদৃশ ব্যক্তিবর্গ বিসিএস পরীক্ষায় সাধারণত ফেল করে অথবা অতি সাধারণ মানের রেজাল্ট করে৷ সাধারণ জ্ঞানে বেশি পণ্ডিত হয়ে লাভ নাই, কারণ ওই segment-টাতে সাধারণত average marks আসে, তাই অন্যান্য ক্যান্ডিডেটের তুলনায় আপনি খুব বেশি marks পেয়ে কোনো competitive advantage পাবেন না, যেটা ওই চারটা বিষয়ে পাওয়া সম্ভব। প্রিপারেশন নিচ্ছি নিচ্ছি—নিজেকে এবং অন্য সবাইকে এটা বোঝানোর চাইতে সত্যি সত্যি প্রিপারেশন নেয়া ভালো। ‘প্রিপারেশন প্রিপারেশন ভাব, প্রিপারেশনের অভাব।’ কম্পিটিটিভ এক্সামের প্রিপারেশন নেয়ার ক্ষেত্রে এটা হয়। অনেক পরিশ্রম করে ফেল করার চাইতে, বুঝেশুনে পরিশ্রম করে পাস করা ভালো। আপনাকে প্রত্যেকটা segment-এ খুব ভালো কিংবা মোটামুটি ভালো করতে হবে। কাজেই preparation নেয়ার সময় আপনি যা পারেন, শুধু সেটার উপরেই পুরো effort দেয়া যাবে না। আমার টেকনিক হল, আমি যা পারি সেটার বেশিবেশি যত্ন নিই, যাতে অন্যদের চাইতে অনেকবেশি সুবিধা আমি সেটাতে নিতে পারি। তবে তার আগে দেখে নিই, যেটা বেশি পারি, সেটা আদৌ সুবিধা নেয়ার মতো কিছু কিনা। ধরুন, ক্লিনটনের ওয়াইফের বান্ধবীর পোষা কুকুরের নামও আপনার মুখস্থ, কিন্তু আমার নানার একটা কালো কুকুর ছিল’কে ইংলিশে লিখেন, My grandfather was a black dog……… কোনো কাজ হবে না।
  • বিসিএস পরীক্ষা বার বার দেয়া যায়, এটা সত্যি। কিন্তু তার চেয়ে বড় সত্যি, এটা একবারে পাস না করার পানিশমেন্ট হল, এই বিরক্তিকর ক্লান্তিকর পড়াগুলো আরেকবার পড়তে হবে। আমার বেলায় এই ভয়টা মোটিভেশন হিসেবে কাজ করেছে। এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষাও তো ৪ বার দেয়া যায়। ওইসময়ে কেউ যদি আপনাকে বলতো, ১ম বার এক্সপেরিএন্স হোক, পরেরবার ভালো করে দিয়ো। এটা শুনলে কি রাগ হতো না?
  • প্রথমবারের কাজ ভালো হয় না? কে বললো একথা? আমি প্রথমবারে ক্যাডার হয়েছি। এরকম আরো অসংখ্য নজির আছে। পথের পাঁচালি (বিভূতি ও সত্যজিৎ), নাগরিক, The 400 Blows কিংবা Wuthering Heights, The Catcher in the Rye, To Kill a Mockingbird, The Kite Runner-এর গল্প। বিসিএস পরীক্ষার মতো বিরক্তিকর পরীক্ষা আরেকবার দিতে হবে, এটা ভাবতে ভয় লাগে না? শুধু এইজন্যেই তো পড়াশোনা করা যায়। সবার মতো আপনাকেও বারবার বিসিএস দিতে হবে কেনো? তবে এখানে luck favour করা না-করার কিছু ব্যাপারও ঘটে। যারা ক্যাডার হয়, তারা একই সাথে যোগ্য ও সৌভাগ্যবান।
  • যে প্রশ্নগুলো একটু কঠিন মনে হয়, সেগুলো একাধিকবার পড়ুন৷ তাতেও কাজ না হলে সেগুলো পড়া বাদ দিন। একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বার বার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ এই ধরণের একটি প্রশ্ন আরো কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷ মনে রাখবেন, কঠিন প্রশ্নেও ১ নম্বর, সহজ প্রশ্নেও ১ নম্বর।
  • বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি—এই বিষয়গুলোতে প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র ও ম্যাপ আঁকুন৷ যথাস্থানে বিভিন্ন ডাটা, টেবিল, চার্ট, রেফারেন্স দিন৷ পরীক্ষার খাতায় এমন কিছু দেখান, যেটা আপনার খাতাকে আলাদা করে তোলে।
  • কোন কোন সেগমেন্ট-এ ক্যান্ডিডেট’রা সাধারণতঃ কম মার্কস্ পায় কিন্তু বেশি মার্কস্ তোলা সম্ভব, সেগুলো নির্ধারণ করুন এবং নিজেকে ওই সেগমেন্ট’গুলোতে ভালোভাবে প্রস্তুত করে কম্পিটিশনে আসার চেষ্টা করুন৷ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, টীকা, শর্ট নোটস্, সারাংশ, সারমর্ম, ভাবসম্প্রসারণ, অনুবাদ,  ব্যাকরণ ইত্যাদি ভালোভাবে পড়ুন৷
  • দাগিয়ে দাগিয়ে রিটেনের গাইড বই পড়ুন৷ সম্ভব হলে, কমপক্ষে ৩-৪ সেট৷ তবে খেয়াল রাখবেন গাইডে অনেক ভুল থাকে৷ এটা স্বাভাবিক৷ তাই পড়ার সময় সংশোধন করে নিতে হবে৷
  • নোট করে পড়ার বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই৷ এতটা সময় পাবেন না৷ বরং কোন প্রশ্নটা  কোন সোর্স থেকে পড়ছেন, সেটা লিখে রাখুন৷ রিভিশন দেয়ার সময় কাজে লাগবে৷ বাংলাদেশের সংবিধানের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল, কিছু আন্তর্জাতিক পত্রিকা ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখুন৷ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে রাখুন৷ প্রয়োজনমত  পরীক্ষার খাতায় রেফারেন্স উল্লেখ করে উপস্থাপন করুন৷ (মনের মাধুরী মিশিয়ে নোট করলেই যে মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখতে পারবেন, এমনটা নয়। আর যেটা নোট করছেন, সেটা পরীক্ষায় না আসলে তো পুরোটাই লস। আমি একটা প্রশ্নও নোট করে পড়িনি। সেরা উত্তরটা লিখলেই যে সেরা মার্কসটা পাবেন, এমন কোনো কথা নাই।)
  • বিসিএস’এর জন্য নিয়মিত পেপার পড়ুন৷ সম্ভব হলে অন্তত ৫-৬ টা৷ অনলাইনে পড়তে পারেন৷ এই সময়টাতে পুরো পেপার না পড়ে শুধু যে অংশগুলো পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়,  সেগুলোই পড়ুন৷ খুব দ্রুত চোখ বুলিয়ে যা যা বিসিএস পরীক্ষার জন্যে দরকার, প্রয়োজনে সেগুলো ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করে রাখুন। কী কী দরকার, সেটা কীভাবে বুঝবেন? বেশি বেশি প্রশ্ন স্টাডি করুন। Question-mapping আপনার পরিশ্রম কমিয়ে দেবে।
  • বিভিন্ন রেফারেন্স, টেক্সট ও প্রামাণ্য বই অবশ্যই পড়তে হবে৷ বিসিএস পরীক্ষায় অনেক প্রশ্নই কমন পড়েনা৷ এসব বই পড়া থাকলে উত্তর করাটা  সহজ হয়৷ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময়  বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার  কলাম ও সম্পাদকীয়, ইন্টারনেট, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা, বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে  উদ্ধৃতি দিলে মার্কস বাড়বে৷ এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার ক’রলে সহজে পরীক্ষকের চোখে পড়বে৷ চেষ্টা করবেন, প্রতি পেজে অন্তত একটা কোটেশন, ডাটা, টেবিল, চার্ট কিংবা রেফারেন্স, কিছু না কিছু দিতে। জানি, অত কোটেশন তো মনে থাকে না। তাহলে কীভাবে কাজটা করবেন? আমি যে টেকনিকগুলো ফলো করেছিলাম, সেগুলো বলছি। সেগুলোর অনেকগুলোই ফাঁকিবাজি। বেড়াল সাদা কী কালো, সেটা বড় কথা নয়। আসল কথা, ইঁদুর ধরতে পারে তো? ভালো কথা, সংবিধান মুখস্থ করার কোনো দরকারই নাই। আমি করিনি।
  • লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই৷ লিখিত পরীক্ষায় অনেক বেশি দ্রুত লিখতে হয়৷ তাই প্রতি ৩-৫ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা লেখার প্র্যাকটিস্ করুন৷ খেয়াল রাখবেন, যাতে লেখা পড়া যায়৷ সুন্দর উপস্থাপনা মার্কস বাড়ায়৷ বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় লিখতে খুব বেশি কষ্ট হয়। আমার মাঝে মাঝে মনে হতো, আঙুলের জয়েন্টগুলো বুঝি এখুনি খুলে পড়ে যাবে। ভাবতাম, I’ve to really perform when I’m performing! আমি তো স্রেফ আমার বাবা-মা আর টেন্ডুলকারের কথা ভেবে ভেবেই রিটেন পার করে দিলাম। একটা গল্প শেয়ার করি। ১৬ বছরের বালকের ‘Main Khelega’ অ্যাটিচিউডের গল্প৷ হারিয়ে না যাওয়ার গল্প৷ আমার লাইফে শেখা সেরা অ্যাটিচিউড৷ আমার মতে, জীবনে বড় হতে হলে habitual ‘selfish’ weakness to greatness থাকাটা জরুরি। বড়ো মানুষকে ছোটো করে দেখলে উনার কিছুই এসে যায় না। হুমায়ূন আহমেদকে লেখক হিসেবে না দেখে শাওনের স্বামী হিসেবে দেখাটা আমাদেরই মানসিক অসুস্থতা। আপনার নিজের স্বার্থে যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল তাদের গুণগুলোকে replicate করার চেষ্টা করুন। যে লক্ষ্যেই পৌঁছাতে চান না কেনো, সেই লক্ষ্যের প্রতি প্রচণ্ড শ্রদ্ধাবোধ রাখুন। নাহলে প্রিপারেশনে ঠিকমতো আন্তরিকতা আসে না। আল্লাহ বিনয়ী ব্যক্তিকে সম্মানিত করেন।
  • কোনভাবেই কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না৷ উত্তর জানা না থাকলে ধারণা থেকে অন্তত কিছু না কিছু লিখে আসুন৷ ধারণা না থাকলে, কল্পনা থেকে লিখুন। কল্পনায় কিছু না এলে প্রয়োজনে জোর করে কল্পনা করুন! আপনি প্রশ্ন ছেড়ে আসছেন, এটা কোন সমস্যা না৷ সমস্যা হল, কেউ না কেউ সেটা উত্তর করছে৷ নিজের সাজেশনস্ নিজেই তৈরী করুন৷ কারো সাজেশনস্ ফলো করবেন না৷ এই প্রশ্নটা আসবেই আসবে — এ জাতীয় মিথ্যে আশ্বাসে  কান দেবেন না৷ আমি অন্তত ৪ সেট সাজেশনস রেডি করেছিলাম। আর এটা মাথায় রাখুন, রিটেনে (৪০-৫০)% এর বেশি প্রশ্ন কমন পাবেন না। (এইটুকু পেলেও অনেক!)
  • মাঝে মাঝে বিভিন্ন topic নিয়ে ননস্টপ লেখার প্র্যাক্টিস করুন৷ বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার অভ্যাস বাড়ান৷ এতে আপনার লেখা মানসম্মত হবে৷ কোনো উত্তরই মুখস্থ করার দরকার  নেই৷ বরং বারবার পড়ুন, বিভিন্ন সোর্স থেকে৷ ধারণা থেকে লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন৷ কেউই সবকিছু ঠিকঠাক লিখেটিখে ক্যাডার হয় না। রিটেনে সবাই-ই বানিয়ে লেখে। এটা কোনো ব্যাপার না! বরং ঠিকভাবে বানিয়ে লেখাটাও একটা আর্ট। কতো বুদ্ধিটুদ্ধি করে কতোকিছু ভুলভাল লিখে ক্যাডার হয়েছি, সেটা বলে বোঝানো যাবে না! (আমি আসলে অতি সৌভাগ্যবানদের দলে!)
  • বিসিএস পরীক্ষায় কোন ভাষায় উত্তর লিখবো? ইংরেজিতে? নাকি, বাংলায়? এ প্রশ্ন অনেকেরই৷  আমি বাংলায় লিখেছি, পরীক্ষায় প্রথম হ’য়েছি৷ এ  ভাষায় ‘আসি’ বলে  স্বচ্ছন্দে চলে যাওয়া যায় … কী আশ্চর্য রহস্য! তাই না? তবে, আপনি ইংরেজিতেও লিখতে পারেন৷ এক্ষেত্রে সাবলীলতা ও প্রাঞ্জলতাই মুখ্য৷ অনেক অনেক লিখতে হবে, যেটা খুব ভালোভাবে পড়ার সময়ই হয়তো পরীক্ষকের নেই, এটা মাথায় রাখুন।
  • অনেকেই বলবে, আমার তো অমুক অমুক প্রশ্ন পড়া শেষ! ব্যাপারটাকে সহজভাবে নিন৷ আপনার  আগে কেউ কাজ শেষ করলেই যে শেষ হাসিটা উনিই হাসবেন—এমন তো কোন কথা নেই৷ আর কেউ আপনার চাইতে বেশি পড়াশোনা করলে সেটা তো আর আপনার দোষ না। আমি বিসিএস পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি শুরু করতে গিয়ে দেখলাম, অনেকের অনেককিছু পড়া শেষ। 3 Idiots তো দেখেছেন। বন্ধুর খারাপ রেজাল্টে যতোটা মন খারাপ হয়, বন্ধুর ভালো রেজাল্টে তার চেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হয়। যখন দেখলাম, আমি অন্যদের তুলনায় বলতে গেলে কিছুই পারি না, তখন আমি ২টা কাজ করলাম। এক। বোঝার চেষ্টা করলাম, ওরা যা পারে, সেটা পারাটা আদৌ দরকার কিনা? দুই। ওদের সাথে নিজেকে কম্পেয়ার করা বন্ধ করে গতকালকের আমি’র সাথে আজকের আমি’কে কম্পেয়ার করা শুরু করলাম।
  • মাঝে মাঝে পড়তে ইচ্ছে করবে না, আমারও করত না৷ সারাক্ষণ পড়তে ইচ্ছে করাটা মানসিক সুস্থতার  লক্ষণ না৷ Why so serious? Job for Life, not Life for Job. বিসিএস ক্যাডার হতেই হবে, এমন তো নয়! আপনার রিজিক আগে থেকেই ঠিক করা আছে। কতোকিছুই তো করার আছে! তাই, ব্রেক নিন, পড়াকে ছুটি দিন৷ মাঝেমধ্যেই৷ রুমের দরোজাজানালা বন্ধ করে ফুল ভলিয়্যুমে মিউজিক ছেড়ে সব ভাবনা ঝেড়ে ফেলে নাচুন! ইচ্ছেমতো গলা ফাটান! কী আছে আর জীবনে! দু’দিন পড়া হ’লো না বলে মন খারাপ করে আরো দু’দিন নষ্ট করার তো কোনো মানে হয়না৷ ভুল না করে শিখেছে কে কোথায় কবে? অনুশোচনা করার সময় কোথায়? আপনি তো আর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভুলটি করে বসেননি! আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখী মানুষটিও নন!
  • গ্রুপ স্টাডি করা কতোটুকু দরকার? এটা আপনার অভ্যেসের উপর নির্ভর করে। আমার নিজের এই অভ্যেস ছিলো না। আমি গ্রুপ স্টাডি করতাম না ২টা কারণে। এক। যখন দেখতাম, সবাই অনেককিছু পারে, যেগুলোর কিছুই আমি পারি না, তখন মনমেজাজ খারাপ হতো। আমি পারি না, এটা ভাবতে ভালো লাগে না। The Pursuit of Happyness এর ডায়লগটা মনে আছে তো? আপনি পারেন না, সবার কাছ থেকে এটা শুনে, বুঝে আপনার কী লাভ? সবাই এটা বললে তো আর আপনি বেশি পারতে শুরু করবেন না, বরং আপনার বেশি পারার ইচ্ছেটা কমে যেতে পারে। দুই। সবার সাথে পড়লে বেশি বেশি গল্প করতে ইচ্ছে করতো, আর মনে হতো, ওরা যেটা করছে সেটা ঠিক, আমার নিজেরটা ভুল। অন্ধ অনুকরণ করতে ভালো লাগে না।

যুগে যুগে মানুষের অধ্যবসায়

অপরের সুযোগের মতো মনে হয়

…………………………………………………………

মানুষেরই হাতে তবু মানুষ হতেছে নাজেহাল;

পৃথিবীতে নেই কোনো বিশুদ্ধ চাকরি।” ~ জীবনানন্দ দাশ ‘সৃষ্টির তরী’

Nobody will ever remember you after yyour retirement!