অনুশোচনার দুটি টুকরো

 
তুমি না ডাকলেও আমি তোমাকে ঠিক শুনতে পাই,
কেননা আমি সারাক্ষণই তোমাকে শোনার আগ্রহে থাকি।


সারাদিন বাইরে থাকলে বাবা বেশ কয়েকবার ফোন করে।
জানতে চায়, ঠিকমতো খেয়েছি কি না, ভালো আছি কি না...।
মাঝে মাঝে বিরক্ত হই। বলি, বাবা, কাজ করছি তো...!
‘আচ্ছা…।’ এইটুকু বলে বাবা চুপ করে থাকে, কলটা কখনও কাটে না।
আমিই বরং এপাশ থেকে কলটা কেটে দিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
বাবা কিন্তু কোনও দিনই কলটা আগে কাটে না!


কাল সারাদিন নানান কাজে ব্যস্ত ছিলাম, অনলাইনে ছিলামই না।
প্রতিদিনের মতো, ঘুম থেকে উঠে তোমাকে দেখা হয়নি, তোমাকে লেখা হয়নি।


কাজ করতে করতে বারবার ভাবছিলাম,
তুমি হয়তো সারাদিন আমাকে অনলাইনে দেখতে না পেয়ে
আমাকে মিস করেছ, আমার জন্য টেনশন করেছ, অথবা
আমাকে ইনবক্সে এটা সেটা লিখে পাঠিয়েছ। এই যেমন,
তুমি কোথায়, সারাদিন তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না কেন, কোনও সমস্যা হয়েছে…এইসব।
এবং, সবশেষে একটা ফোনকল! সেই কলে, নিশ্চয়ই কিছু অভিমান ঝরে পড়বে...


সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে, প্রথমেই অনলাইনে ঢুকে তোমাকে দেখি।
ইনবক্সে ঢোকার সাহস হচ্ছিল না---
তুমি কী কী জিজ্ঞেস করেছ, আমি সেগুলোর কী জবাব দেবো, এই ভয়ে।


পরে যখন দেখলাম, এক ‘শুভ সকাল’ ছাড়া আর কিছুই লেখা নেই,
আমি তখন মোবাইলটা বিছানায় ছুড়ে ফেলে একদৌড়ে বাবার রুমে গিয়েছি,
বাবাকে অনেকক্ষণ দেখেছি, আর খুব খুব অনুতপ্ত হয়েছি...
বাবার ফোনকলে বিরক্ত হওয়ার জন্য।


তোমার সব কাজেই অনেক আনন্দ আছে আমার।
সাথে আমার সবটুকু মায়াই তোমার জন্য এবং তা আছে গভীরভাবে।


তুমি জানো না, তোমার ছোট্ট একটা কথার জন্য
আমি কতটা সময় ধরে অপেক্ষা করি!


তুমি জেনে রেখো, যে মেয়েটা ভালোবাসার দাবি নিয়ে
তোমার কাছে এত অভিযোগ - অনুযোগ করে,
তার এতটা অসহায়ত্ব পৃথিবীর আর অন্য কোথাও নেই, যতটা তোমার কাছে আছে।